সৌদি আরবে ঈদ কবে? – ২০২৫ সালের আপডেট জানুন
রমজান মাসের শেষ দিনগুলোতে সবচেয়ে আলোচিত প্রশ্নগুলোর একটি হলো—সৌদি আরবে ঈদ কবে? প্রতি বছরই এই নিয়ে বিশ্বজুড়ে মুসলমানদের মধ্যে আগ্রহের শেষ থাকে না। কারণ, সৌদিতে ঈদুল ফিতর কখন হবে, সেটার ওপরই অনেক দেশের ঈদের সময় নির্ভর করে। ২০২৫ সালের প্রেক্ষাপটে, এই প্রশ্নটি আরও বেশি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে।
চলুন জেনে নিই সৌদি আরবে ঈদুল ফিতরের সম্ভাব্য সময়, কেন এই বছর একটু ভিন্ন হতে পারে, আর কীভাবে উদযাপন করা হয় এই বিশেষ দিনটি।
Table of Contents
চাঁদ দেখার ভিত্তিতে ঈদের দিন নির্ধারণ – কেন এটা এত গুরুত্বপূর্ণ?
সৌদি আরবে ইসলামিক ক্যালেন্ডারের প্রতিটি মাস চাঁদের উপর নির্ভর করে নির্ধারিত হয়। অর্থাৎ, যখন নতুন চাঁদ দেখা যায়, তখনই নতুন মাস শুরু হয়। রমজান মাসের ২৯ তারিখে শাওয়ালের চাঁদ দেখা গেলে পরদিন ঈদুল ফিতর উদযাপিত হয়। তবে যদি চাঁদ দেখা না যায়, তাহলে রমজান ৩০ দিনে পূর্ণ হয় এবং ঈদ হয় তার পরের দিন।
২০২৫ সালে রমজান মাস শুরু হতে পারে ১ মার্চ থেকে। সেই হিসেবে ২৯ রমজান পড়বে ২৯ মার্চ। যদি সেদিন শাওয়ালের চাঁদ দেখা যায়, তবে সৌদিতে ঈদ হবে ৩০ মার্চ। অন্যথায়, ৩১ মার্চ হবে ঈদুল ফিতর।
এই প্রক্রিয়াটি কিছুটা অনিশ্চয়তা তৈরি করে, তবে এটিই সৌদি আরবসহ মুসলিম বিশ্বের রীতি।
২০২৫ সালের চাঁদের অবস্থা ও সম্ভাব্য ঈদের তারিখ
২০২৫ সালে সৌদি আরবে চাঁদের পরিস্থিতি বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, ২৯ মার্চে চাঁদ দেখা যাওয়ার সম্ভাবনা খুবই কম। কারণ, সেদিন সূর্যাস্তের সময় চাঁদের বয়স হবে মাত্র কয়েক ঘণ্টা, যা খালি চোখে দেখা প্রায় অসম্ভব। ফলে, অধিকাংশ বিশেষজ্ঞ মনে করছেন ৩০ মার্চে চাঁদ দেখা যাবে এবং ৩১ মার্চ ঈদ উদযাপিত হবে।
এই বছর অনেকটা ব্যতিক্রম হতে পারে কারণ একই দিনে বাংলাদেশ, পাকিস্তান এবং মধ্যপ্রাচ্যের বহু দেশেও ঈদ হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। দীর্ঘ সময় পর এমন সমন্বিত ঈদ অনেকের জন্য আনন্দের বিষয় হবে।
সৌদি আরবে ঈদের সকাল কেমন হয়?
ঈদের দিন সকাল সৌদি আরবে হয় খুবই আধ্যাত্মিক ও প্রাণবন্ত। খুব ভোরে ঘুম থেকে উঠে গোসল করে, নতুন পোশাক পরে সবাই ঈদগাহ বা মসজিদে জড়ো হয় ঈদের নামাজ আদায়ের জন্য। নামাজ শেষে পরস্পরের সঙ্গে কোলাকুলি করে শুভেচ্ছা জানানো হয়।
সৌদিতে সংস্কৃতিতে ঈদের দিন বিশেষ খাবার পরিবেশন করা হয়—এর মধ্যে থাকে খেজুর, কাবসা, হরিস এবং নানা রকম মিষ্টান্ন। পরিবার, আত্মীয়-স্বজন ও প্রতিবেশীদের সঙ্গে সময় কাটানো হয় আনন্দঘন পরিবেশে।
ঈদের নামাজ কোথায় ও কখন হয়?
সাধারণত সৌদি আরবে ঈদের নামাজ অনুষ্ঠিত হয় সূর্যোদয়ের ১৫ থেকে ২০ মিনিট পর। বিভিন্ন শহরে বড় বড় ঈদগাহ মাঠ, মসজিদ এবং এমনকি বেছে নেওয়া উন্মুক্ত স্থানেও এই জামাত অনুষ্ঠিত হয়।
সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী, নামাজের সময় এবং জায়গা স্থানীয় ইসলামিক দফতর বা মসজিদ কর্তৃপক্ষ নির্ধারণ করে। তাই সবাইকে সকাল সকাল প্রস্তুত হয়ে নির্ধারিত জায়গায় পৌঁছে যেতে হয়।
সৌদি আরবে ঈদের বিশেষ ঐতিহ্য ও সামাজিক দিক
ঈদ শুধু একটি ধর্মীয় উৎসব নয়—এটি সামাজিক মিলনেরও একটি বড় উপলক্ষ। শিশুদের হাতে ঈদি, বড়দের সঙ্গে সালাম ও মিষ্টি কথাবার্তা, প্রতিবেশীদের বাড়িতে দাওয়াত—সব মিলিয়ে এই উৎসব এক ঐক্যবদ্ধতার প্রতীক।
সৌদিতে আরবে ঈদের অন্যতম আকর্ষণ হলো দান-খয়রাত। যাকাতুল ফিতর দিয়ে ঈদের আগেই দরিদ্রদের সহায়তা করা হয়, যাতে তারা যেন সমভাবে ঈদ উদযাপন করতে পারেন। অনেকেই এদিন গরিবদের খাবার দেন, পোশাক দেন—যা সৌদি সমাজের মানবিক দিক ফুটিয়ে তোলে।
এক নজরে সংক্ষেপে জানুন:
সৌদি আরবে ঈদ কবে? – সম্ভবত ৩১ মার্চ ২০২৫ (চাঁদ দেখা সাপেক্ষে)
ঈদের নামাজ কখন? – সূর্যোদয়ের ১৫-২০ মিনিট পর
চাঁদ দেখা গেলে ৩০ মার্চেই ঈদ হতে পারে? – হ্যাঁ, যদি ২৯ রমজানে চাঁদ দেখা যায়
একই দিনে বাংলাদেশেও ঈদ হবে? – সম্ভাবনা খুবই বেশি
আরও পড়ুন: রাজা ও বাদশার মধ্যে পার্থক্য কী? ৯০% মানুষের কাছে উত্তর নেই
সৌদি আরবে ঈদ উদযাপনের প্রহর গুনছেন সবাই
সৌদি আরবে ঈদের দিন চাঁদের উপর নির্ভরশীল হওয়ায় ঈদের নির্দিষ্ট দিন আগে থেকে বলা কঠিন। তবে বর্তমান হিসাব অনুযায়ী, ২০২৫ সালে সৌদিতে ঈদুল ফিতর ৩১ মার্চ অনুষ্ঠিত হওয়ার সম্ভাবনা প্রবল। তবে ৩০ মার্চ চাঁদ দেখা গেলে ঈদ একদিন আগেই হতে পারে।
এমনও হতে পারে যে, সৌদি আরবসহ বিশ্বজুড়ে একই দিনে ঈদ উদযাপিত হবে—যা মুসলিম উম্মাহর মধ্যে ভ্রাতৃত্বের এক দুর্দান্ত নিদর্শন হবে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।