জুমবাংলা ডেস্ক: বাংলাদেশ থেকে সৌদি আরবে পবিত্র হজে গিয়ে একদিনে সাত বাংলাদেশির মৃত্যু হয়েছে। বৃহস্পতিবার তাদের মৃত্যু হয়। এ নিয়ে এখন পর্যন্ত হজে যাওয়া মোট ৪৩ জন বাংলাদেশির মৃত্যু হলো।
হজ এজেন্সিস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (হাব) সভাপতি এম শাহাদাত হোসাইন তসলিম এ তথ্য জানিয়েছেন। শুক্রবার ধর্ম মন্ত্রণালয়ের পবিত্র হজ ২০২৩ প্রতিদিনের বুলেটিনে এ তথ্য নিশ্চিত হওয়া গেছে।
মারা যাওয়া বাংলাদেশি হাজিদের মধ্যে ৩৫ জন পুরুষ ও আটজন মহিলা। মক্কায় মারা গেছেন ৩৫ জন ও বাকিরা মদিনায়।
শাহাদাত হোসেন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে দেওয়া এক স্ট্যাটাসে জানান, বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ সময় বিকেল ৫টা পর্যন্ত সৌদি আরবে মোট মৃত হাজির সংখ্যা ৪৩ জন। এর মধ্যে এক দিনেই সাতজন হাজি মারা গেছেন।
হজ করতে গিয়ে সৌদিতে মারা গেলে দাফন করা হয় যেখানে-
মক্কায় হজযাত্রী মারা গেলে মসজিদুল হারামে জানাজা হয়। জানাজা শেষে মক্কার শারায়া কবরস্থানে দাফন করা হয়। মদিনায় মারা গেলে মসজিদে নববিতে জানাজা হয়, দাফন হয় জান্নাতুল বাকি কবরস্থানে। জেদ্দায় মারা গেলে সেখানকার কবরস্থানে দাফন করা হয়।
সৌদি আরবের আইন অনুযায়ী, কোনো ব্যক্তি হজ করতে গিয়ে মৃত্যুবরণ করলে তার মরদেহ সেখানেই দাফন করা হয়। মৃতদেহ তার নিজ দেশে নিতে দেওয়া হয় না। এমনকি পরিবার-পরিজনের কোনো আপত্তি গ্রাহ্য করা হয় না।
এদিকে, এবারের হজে প্রচণ্ড দাবদাহ ও গরমজনিত কারণে সাড়ে ৬ হাজারেরও বেশি হজযাত্রী অসুস্থ হয়ে পড়েছেন বলে জানিয়েছেন সৌদি আরবের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ড. মোহম্মদ আল আবদুল আলী।
তিনি বলেন, গত ৩৯ দিনে মক্কা ও মদিনায় অন্তত এক লাখ ১১ হাজার ৭৬১ হজযাত্রী বিভিন্ন কারণে অসুস্থ হয়ে হাসপাতাল এবং অস্থায়ী স্বাস্থ্যশিবিরগুলোতে চিকিৎসা সেবা নিয়েছেন। গরম ও দাবদাহে হিটস্ট্রোকের শিকার সব রোগীকে যথাযথ চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। এ রকম পরিস্থিতির জন্য আমাদের প্রস্তুতি ছিল। সৌদির সরকার আল্লাহর অতিথিদের সর্বোচ্চ সেবাদানে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
সৌদি আরবে শীতকালের ২-৩ মাস ব্যতীত সারা বছরই গরম থাকে। তবে মে-জুন-জুলাই মাসে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা থাকে। এই তিন মাস সৌদির গড় তাপমাত্রা থাকে ৪২ ডিগ্রি থেকে ৪৫ ডিগ্রির মধ্যে।
চলতি বছর হজের মৌসুম পড়েছে পুরোপুরি গ্রীষ্মকালে। সৌদি সরকার অবশ্য হজযাত্রীদের চিকিৎসাসেবা নিশ্চিতের জন্য মক্কা ও মদিনার ৩২টি হাসপাতাল ও ১৪০টি স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ৩২ হাজার ডাক্তার-নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মী সার্বক্ষণিক মোতায়েন রেখেছিল। এছাড়া সরকারের পক্ষ থেকে দেওয়া এক বিশেষ নির্দেশনায় হজযাত্রীদের সূর্যালোক যথাসম্ভব এড়িয়ে চলা, প্রচুর পানি ও তরল খাদ্য গ্রহণ ও ছাতা ব্যবহার করতে বলা হয়েছিল।
সৌদি সরকারের হিসাব অনুযায়ী, বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে চলতি বছর ২০ লাখেরও বেশি মানুষ হজ করতে মক্কায় গিয়েছেন।