আন্তর্জাতিক ডেস্ক : সৌদি আরবে চাঁদ দেখা সাপেক্ষে ১ মার্চ থেকে পবিত্র রমজান মাস শুরু হতে পারে। এ মাসে ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা রোজা পালন করেন। পরিবর্তন আসে তাদের জীবনাচরণে। এর প্রভাব পড়ে প্রাত্যহিক কাজে। ফলে, অন্যান্য সরকারি-বেসরকারি অফিসের মতো স্কুলগুলোর স্বাভাবিক ছন্দেও পরিবর্তন আনতে হয়।
গালফ নিউজের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রোজা শুরুর সম্ভাব্য তারিখ সামনে রেখে সৌদির শিক্ষা কর্তৃপক্ষ স্কুলের সময়সূচি নির্ধারণ শুরু করেছে। জারি করেছে বিশেষ নির্দেশনা।
আরবি ক্যালেন্ডারে রমজান নবম মাস। ইসলামে রোজা ফরজ ইবাদত। রমজানে মুসলিমরা সূর্যোদয় থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত সব ধরনের পানাহার থেকে বিরত থাকেন। এটি ইসলামে ইবাদতের অন্যতম মৌসুম হিসেবেও পরিচিত। এ সময় অন্যান্য মাসের মতো পরিশ্রম করা অনেকের জন্য দুরূহ। বিশেষ করে বিদ্যালয়গামী রোজাদার শিশুদের দেশটির শুষ্ক আবহাওয়ার সঙ্গেও লড়তে হয়।
এসব মাথায় রেখে সৌদি শিক্ষা মন্ত্রণালয় দেশব্যাপী অঞ্চল এবং গভর্নরেট শিক্ষা পরিচালকদের সংশ্লিষ্ট স্থানীয় কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সমন্বয় করে স্কুলের সময় নির্ধারণের নির্দেশ দিয়েছে।
কিছু শিক্ষা কর্তৃপক্ষ ইতোমধ্যেই স্কুল শুরুর পরিবর্তিত সময় ঘোষণা করেছে। পবিত্র মক্কা নগরীর শিক্ষা কর্তৃপক্ষ রমজান মাসে স্কুল শুরুর সময় নির্ধারণ করে বিজ্ঞপ্তি জারি করে। তাতে বলা হয়, সকালের স্কুলের জন্য স্কুল শুরু হবে সকাল ৯টায়, সান্ধ্যকালীন স্কুল দুপুর ১টায় এবং বয়স্ক স্কুলের ক্লাস শুরু হবে রাত সাড়ে ৯টায়।
সৌদি আরবের আরেকটি পবিত্র শহর মদিনা। সেখানকার শিক্ষা অধিদফতর রমজান মাসে স্কুলের প্রথম ক্লাস শুরুর সময় সকাল সাড়ে ৯টা নির্ধারণ করেছে। একই সময় বালক-বালিকাদের স্কুল এবং এর অধিভুক্ত অফিসগুলোর কার্যক্রম চলবে।
রমজান মাসে সৌদি আরবের ভেতর এবং বাইরের মুসলমানরা ওমরাহ পালন এবং নামাজ পড়ার জন্য পবিত্র স্থান মসজিদে হারামে সমাগম হন। এই মাসটি সাধারণত ওমরাহ মৌসুমের সর্বোচ্চ সময় হিসেবে চিহ্নিত হয়। সে সঙ্গে রমজান মাসে অনেক তীর্থযাত্রী মদিনায় ভিড় জমান।
সেখানে ইসলামের দ্বিতীয় পবিত্রতম স্থান মসজিদে নববীতে তারাবির নামাজ পড়ার উদ্দেশ্য থাকে অনেকের। বহু মুসলমান রমজান মাসের পূর্ণ ফজিলত লাভের আশায় মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) এর কবর জিয়ারত করতে সৌদিতে পাড়ি জমান। এসব কারণেও দেশটি লোকে লোকারণ্য হয়ে ওঠে। এ কারণেও স্বাভাবিক প্রশাসনিক কার্যক্রম অব্যাহত রাখতে বিশেষ নির্দেশনা অনুসরণ করা হয়।
প্রসঙ্গত, রমজান শুরুর সম্ভাব্য তারিখ জানিয়েছে, আন্তর্জাতিক জ্যোতির্বিদ্যা কেন্দ্র। সংস্থাটি জানিয়েছে, ইসলামী দেশগুলোতে আগামী ১ মার্চ থেকে রোজা শুরু হতে পারে। সংস্থাটি জানায়, ইসলামিক বিশ্বে আগামী ২৮ ফেব্রুয়ারি রমজানের চাঁদ দেখা যাবে। তবে খালি চোখে চাঁদ দেখাসাপেক্ষ প্রত্যেক দেশ রমজান শুরুর তারিখ ঘোষণা করবে।
আন্তর্জাতিক জ্যোতির্বিদ্যা কেন্দ্রের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ ওদেহ বলেন, পশ্চিম এশিয়া, আফ্রিকার প্রায় সব অঞ্চল এবং ইউরোপের দক্ষিণাঞ্চলে টেলিস্কোপে রমজানের অর্ধচন্দ্র দেখা যাবে আর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বৃহৎ অংশে খালি চোখে রমজানের চাঁদের দেখা মিলবে।
২৮ ফেব্রুয়ারি ইসলামিক দেশগুলোতে চাঁদ দেখা ও রমজান শুরুর বিষয়ে তিনি বলেন, সূর্য অস্ত যাওয়ার পর আকাশে চাঁদ দেখার বিষয়টি বিবেচনা করে বেশিরভাগ মুসলিম দেশ পরের দিন রমজান শুরুর ঘোষণা দেবে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।