সূর্যের করোনা অঞ্চল থেকে প্লাজমা ছিটকে বেরোয় মাঝেমধ্যেই। এতে মুক্ত চার্জযুক্ত প্লাজমা কণা, গামারশ্মি ও এক্স-রের মতো বিভিন্ন কিছুর সমন্বিত রূপ বাইরে বেরিয়ে আসে। এরই নাম সৌরবায়ু বা সৌরঝড়। বিষয়টা অবশ্য এত সহজ-সরল নয়, বোঝার সুবিধার্থে অতিসরলীকরণ করে বলা হয়েছে।
যাহোক, এই সৌরঝড় বয়ে যায় গোটা সৌরজগৎ জুড়ে, আসে পৃথিবীর দিকেও। পৃথিবীর দিকে আসার সময় সৌরবায়ু নিজেই তার চারপাশে একধরনের চৌম্বকক্ষেত্র তৈরি করে। কিন্তু এর কোনোটিই পৃথিবীকে ছুঁতে পারে না। কারণ, প্রতিরক্ষা বলয়ের মতো পৃথিবীকে রক্ষা করে চলে পৃথিবীর চৌম্বকক্ষেত্র।
সৌরবায়ু শুধু এই চৌম্বকক্ষেত্রে গোলমাল করে। বলা চলে, ঝড় তোলে পৃথিবীর চৌম্বকরেখা বরাবর। এর ফলে চৌম্বকক্ষেত্রে ঢেউ ওঠে। তখন বায়ুমণ্ডলের ওপরের স্তরের মুক্ত প্রোটন ও ইলেকট্রনগুলোর সঙ্গে বায়ুমণ্ডলে ভেসে চলা অক্সিজেন ও নাইট্রোজেন পরমাণুগুলোর সংঘর্ষ হয়। এ সংঘর্ষের সময় কিছু শক্তি উৎপন্ন হয়।
এই শক্তি গ্রহণ করে পরমাণুর ইলেকট্রন নিম্ন শক্তিস্তর থেকে উচ্চ শক্তিস্তরে প্রবেশের সুযোগ পায়। পরে নিম্ন শক্তিস্তরে ফিরে আসার সময় শক্তি বিকিরণ করে। বিকিরিত সেই শক্তিই ফোটন বা ফোটনের ঝাঁক বা আলো হিসেবে দেখা দেয়। সেই আলোকেই আমরা অরোরা বা মেরুজ্যোতি বলি।
এর মানেটা হলো, সৌরবায়ু বা ঝড় পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে প্রবেশ করে না। বরং পৃথিবীর চৌম্বকক্ষেত্রে গোলমাল করে, তার ফলেই আমরা মেরুজ্যোতি দেখতে পাই। সৌরজগতের সবচেয়ে ভারী বস্তু সূর্য। সে জন্য অনেকে এই নক্ষত্রটিকে বলেন সৌরাধিপতি। একে ঘিরেই ঘুরছে সবকটি গ্রহ। অনেক সময় বলা হয়, সূর্যের জায়গায় যদি সমভরের কোনো বস্তু বসিয়ে দেওয়া হয়—সেটা হতে পারে ব্ল্যাকহোল বা কৃষ্ণগহ্বর কিংবা আর কিছু—তখন সেটা হয় গিলে নেবে গ্রহগুলোকে, অথবা গ্রহেরা সব ছিটকে যাবে বাইরের দিকে।
আসলে তা হবে না। সমভরের কোনো বস্তু দিয়ে সূর্যকে বদলে দেওয়া হলেও গ্রহগুলো একই কক্ষপথে ঘুরে চলবে। তবে সূর্যের চেয়ে ভারী বস্তু হলে সেটা গ্রহগুলোকে নিজের দিকে টেনে নেবে। আর কম ভারী বস্তু হলে গ্রহগুলোর কক্ষপথ বাইরের দিকে চলে যাবে। কেন্দ্রীয় বস্তুটি যথেষ্ট ভারী না হলে ছিটকেও যেতে পারে গ্রহগুলো।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।