অনেকে ভেবেছিল, স্কালোনি আর্জেন্টিনার সাথে টিকতেই পারবেন না। হয়তো তার সময়কাল হবে মাত্র কয়েক মাস। কিন্তু সেই অখ্যাত স্কালোনি আর্জেন্টিনার সাথে রইলেন টানা চার বছরের মতো। অন্তর্বর্তীকালীন কোচ থেকে তাকে বানানো হয়েছে প্রধান কোচ। তার অধীনে এক প্রজন্মের আক্ষেপের সমাপ্তি টেনে আর্জেন্টিনা জিতেছে কোপা আমেরিকা, এরপর ইতালির সাথে ফিনালিসিমা, আর এখন বিশ্বকাপ।
খালি চোখে আর্জেন্টিনা দলটা দেখতে তেমন আকর্ষণীয় নয়। ব্রাজিল, ইংল্যান্ড, বা ফ্রান্স দলে যেমন তারকার মেলা, স্কালোনির দলে সেই তারকা আদতে আসলে একজনই – লিওনেল মেসি। কিন্তু গোলবারে দিবু, ডিফেন্সে লিসান্দ্রো, ও ক্রিশ্চিয়ান রোমেরো, মিডফিল্ডে পারেদেস বা ডি পল যেন মেসির যোগ্য সহচর।
এজন্যই টানা ৩৬ ম্যাচ অপরাজিত থাকার পর আর্জেন্টিনা যখন কাতার বিশ্বকাপে গেল, তখন তারা বিশ্বকাপ জেতায় অন্যতম বড় দাবিদার। সাধারণ ফুটবল সমর্থক থেকে ইউরোপের ফুটবলবোদ্ধারা আর্জেন্টিনাকেই এবারের বিশ্বকাপের সবথেকে বড় ফেভারিট হিসেবে মেনে নিয়েছিল।
স্কালোনির ফুটবল কৌশল জটিল গোছের কিছু নয়। কিন্তু মাঠে অবস্থা বুঝে তার পরিবর্তনগুলো বেশ কার্যকরী। অস্ট্রেলিয়া এবং পোল্যান্ডের সাথে লিসান্দ্রোকে তিনি নামাননি। এমন না যে লিসান্দো যে একাদশে জায়গা পাবার মতো ডিফেন্ডার নন। তবে পোল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়ার খেলোয়াড়দের উচ্চতা ও হেডে গোল করার নমুনা দেখে স্কালোনি রোমেরোকে জায়গা দিয়েছেন একমাত্র উচ্চতার জন্য।
ফুলব্যাকের ডানপাশে একবার মন্তিয়েল তো অন্যদিন মোলিনা। বামপাশেও আকুনা এবং তাহলিয়াফিকোকে তিনি নামিয়েছেন ঘুরিয়ে-ফিরিয়ে। বেনফিকার তরুণ মিডফিল্ডার এনজোকে এবার দেন বক্স-টু-বক্স রোল। সেদিন এনজো বারবার প্রতিপক্ষের হাফ-স্পেস সীমানা দিয়ে ছুটে চলেন। বারবার ডি-বক্সের বাইরে থেকে জোরালো শট নেন। আবার সেই এনজোই খেলেন হোল্ডিং মিডফিল্ডার পজিশনে। তাকে দেখা যায় ৪-৪-২ ছকে নামানো দুই ডিফেন্ডারের সাথে জোট বেঁধে তিনজনের রক্ষণ দেয়াল গড়ে তুলতে। স্কালোনির কৌশল এবং একাদশ বাছাই যেন এক ধুম্রজাল। আগে থেকে নিশ্চিত কিছু ভেবেছেন তো মরেছেন।
যদিও প্রতিপক্ষের কৌশল বুঝে এমন পরিবর্তন স্কালোনি বিশ্বকাপের প্রায় প্রতিটি ম্যাচেই করেছেন। এজন্য তাকে এবারের বিশ্বকাপের অন্যতম সেরা ‘ট্যাকটিক্যাল কোচ’ খেতাব দিলেও বিশেষ ভুল হবে না।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।