জুমবাংলা ডেস্ক : কাঁঠালবাড়ি ফেরিঘাটে একজন যুগ্ম সচিবের অপেক্ষায় থেকে তিন ঘণ্টা দেরিতে ফেরি ছাড়ায় অ্যাম্বুলেন্সে স্কুলছাত্র তিতাস ঘোষ মারা যাওয়ার ঘটনায় ওই কর্মকর্তা এবং মাদারীপুর জেলা প্রশাসকের (ডিসি) কোনো দায় খুঁজে পায়নি এ সংক্রান্ত তদন্ত কমিটি।
বরং ফেরিঘাটের ব্যবস্থাপক, প্রান্তিক সহকারী ও উচ্চমান সহকারীর অবহেলা, অদক্ষতা ও অযোগ্যতাকে এ ঘটনার জন্য দায়ী করেছে কমিটি। খবর-ইউএনবি’র
একজন অতিরিক্ত সচিবের নেতৃত্বে গঠিত প্রশাসনিক তদন্ত কমিটি বৃহস্পতিবার সুপ্রিম কোর্টে অ্যাটর্নি জেনারেল কার্যালয়ে প্রতিবেদন জমা দেয়।
৩১ জুলাই হাইকোর্টের বিচারপতি এফআরএম নাজমুল আহাসান ও বিচারপতি কেএম কামরুল কাদেরের বেঞ্চ একজন অতিরিক্ত সচিবের নিচে নয় এমন কর্মকর্তাকে দিয়ে ঘটনার তদন্ত করে প্রতিবেদন জমা দিতে জনপ্রশাসন সচিবকে নির্দেশ দিয়েছিল।
অবকাশ শেষে প্রতিবেদনটি আদালতে উপস্থাপন করা হবে বলে জানিয়েছেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল (ডিএজি) আবদুল্লাহ আল মাহমুদ বাশার।
তিনি বলেন, তদন্ত কমিটি দেখেছে যে ফেরিঘাটে একজন মুমূর্ষু রোগী অ্যাম্বুলেন্সে আছে সেটা যুগ্ম সচিব আবদুস সবুর মন্ডল জানতেন না। তার অজ্ঞতাবশত কোনো দুর্ঘটনা ঘটে থাকলে তার জন্য তাকে দায়ী করার মতো কোনো যুক্তিসঙ্গত কারণ পাওয়া যায়নি বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।
‘এছাড়া, মাদারীপুরের ডিসি ফোন করে যে ফেরি থামাতে বলেছিলেন সেই ফেরিঘাটে একজন মুমূর্ষ রোগী অ্যাম্বুলেন্সে অপেক্ষা করছে, সেটা তাকে অবহিত করা হয়নি। উনি জানতেনও না। ফলে ডিসিকেও দোষারোপ করার মতো কোনো যৌক্তিকতা পাওয়া যায়নি,’ যোগ করেন বাশার।
তিনি জানান, প্রতিবেদনে সাত দফা সুপারিশ করেছে তদন্ত কমিটি। এগুলো হচ্ছে- ঘাটে ফেরি পৌঁছানো ও ছাড়ার সময় রেজিস্ট্রারে লিপিবদ্ধ থাকা, ভিআইপি যাতায়াত থাকলে তা আগেই জানানো এবং এ যাতায়াত সরকারি সফর কি না তা জানানো।
এছাড়া, অ্যাম্বুলেন্স থাকলে কোনোভাবেই ফেরি বিলম্বে না ছাড়া, অ্যাম্বুলেন্সকে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে পারাপারের সুযোগ দেয়া ও ফেরিতে সিসিটিভি ক্যামেরা সংযুক্ত করতে বলা হয়েছে প্রতিবেদনে।
সেই সাথে সংশ্লিষ্ট কাজে দায়িত্বরত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নির্দিষ্ট পোশাক পরা এবং প্রতিটি ফেরিতে গুরুত্বপূর্ণ মোবাইল নম্বর প্রদর্শন করতে বলা হয়েছে।
অভিযোগ রয়েছে, ২৫ জুলাই রাতে সরকারের এটুআই প্রকল্পের যুগ্ম সচিব আবদুস সবুর মন্ডলের গাড়ির অপেক্ষায় প্রায় তিন ঘণ্টা দেরিতে ফেরি ছাড়ে। এতে ঘাটে আটকা পড়া অ্যাম্বুলেন্সে স্কুলছাত্র তিতাস ঘোষের মৃত্যু হয়। এ নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রতিবেদন প্রকাশের পর দেশব্যাপী সমালোচনার ঝড় উঠে।
এ ঘটনায় মানবাধিকার সংগঠন লিগ্যাল সাপোর্ট অ্যান্ড পিপলস রাইটসের চেয়ারম্যান জহির উদ্দিন লিমন বাদী হয়ে জনস্বার্থে ৩০ জুলাই হাইকোর্টে রিট করেন। রিটের ওপর শুনানি করে আদালত ৩১ জুলাই তদন্তের নির্দেশের পাশাপাশি রুল জারি করে। রুলে তিতাসের পরিবারকে তিন কোটি টাকা কেন ক্ষতিপূরণ দেয়া হবে না এবং তদন্তপূর্বক দায়ী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে কেন ব্যবস্থা নেয়া হবে না তা জানতে চাওয়া হয়।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।