বৃহস্পতিবার এলাকাবাসীর বিক্ষোভের মুখে বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটি ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও এক নারী সহকারী শিক্ষককে সাময়িক বহিষ্কার করেন।
একই সাথে অভিযুক্ত ওই দুই শিক্ষককে কেন স্থায়ীভাবে বহিষ্কার ও তাদের বিরুদ্ধে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নেওয়া হবে না, সে বিষয়ে আগামী ১৫ দিনের মধ্যে কারণ দর্শাতে বলা হয়েছে।
বুধবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রধান শিক্ষকের অফিস কক্ষে নারী শিক্ষকের সঙ্গে প্রধান শিক্ষকের অনৈতিক কর্মকাণ্ডের একাধিক ভিডিও ক্লিপ ছড়িয়ে পড়লে এ বিষয়ে শেখর আহমেদ নামে স্থানীয় এক ব্যবসায়ী জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিত অভিযোগ করেন।
এ বিষয়ে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে এক সদস্যের একটি কমিটি ও বদলগাছী উপজেলা শিক্ষা অফিসের পক্ষ থেকে তিন সদস্যের পৃথক আরেকটি কমিটি গঠন করা হয়েছে।
সরেজমিন ঘটনাস্থলে দেখা যায়, সকালে ওই অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে দুই শিক্ষকের অনৈতিক কর্মকাণ্ডের ঘটনা তদন্তের জন্য উপজেলা সহকারী মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আব্দুল্লা আল মামুনের নেতৃত্বে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি ঘটনাস্থল পরিদর্শন ও তদন্ত করেন।
উপজেলা সহকারী মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ও তদন্ত কর্মকর্তা আব্দুল্লা আল মামুন বলেন, ঘটনাস্থলে কোনো শিক্ষক-কর্মচারী পাওয়া যায়নি। অফিস ও শ্রেণিকক্ষ তালাবদ্ধ। এ দিকে স্থানীয়রা বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছেন অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক ও ওই নারী শিক্ষকের বহিষ্কারের দাবিতে। এ অবস্থায় যেহেতু ওই দুই শিক্ষকের ভিডিওতে তাদের অনৈতিক কাজ স্পষ্ট, সে ক্ষেত্রে তাদের প্রাথমিকভাবে বহিষ্কার করা প্রয়োজন। পরে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এর পর বেলা ১১টার দিকে একই ঘটনায় জেলা প্রশাসনের গঠিত তদন্ত কমিটির তদন্ত কর্মকর্তা অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) এস এম জাকির হোসেন তদন্তের জন্য ঘটনাস্থলে এলে এলাকাবাসী তার কাছে ওই দুই শিক্ষকের বহিষ্কার দাবি করে। এর পর বদলগাছী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আলপনা ইয়াসমিন ঘটনাস্থলে এলে তার গাড়ি আটকে পথ অবরোধ করে রাখে বিক্ষোভকারীরা। পরে বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি অ জ ম শফি মাহমুদ দুই শিক্ষককে বহিষ্কার ও কারণ দর্শানোর নোটিশ দিলে পথ ছাড়ে বিক্ষোভকারীরা।
এলাকাবাসী বলছে, প্রধান শিক্ষক এর আগেও বিদ্যালয়ের এক ছাত্রীর সাথে অনৈতিক সম্পর্কে লিপ্ত হন এবং পরে টাকা দিয়ে তা মীমাংসা করেন।
স্থানীয় একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বলেন, আগে থেকেই তাদের নিয়ে কানাঘুষা শুনতাম। কিন্তু ফেসবুকে তাদের ভিডিও দেখে আমি নিজেই লজ্জিত। আমি ওই দুই শিক্ষকের উপযুক্ত শাস্তি দাবি করছি।
জেলা প্রশাসকের কাছে অভিযোগকারী শেখর আহমেদ বলেন, আমি এলাকার একজন সচেতন মানুষ হিসেবে এই ঘটনার ভিডিও ক্লিপ দেখে বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দিয়েছি। আমি ওই দুই শিক্ষকের অনৈতিক কাজের যথাযথ ব্যবস্থা চাই।
এর আগেও ওই প্রধান শিক্ষক বিদ্যালয়ের এক ছাত্রীর সাথে অনৈতিক সম্পর্ক গড়ে তোলেন বলে অভিযোগ আছে। বিষয়টি উল্লেখ করে এই অসামাজিক ও অনৈতিক কার্যকলাপের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে অনুরোধ জানান অভিযোগকারী।
এ ঘটনায় জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে গঠিত তদন্ত কর্মকর্তা এডিসি (শিক্ষা ও আইসিটি ) এস এম জাকির হোসেন এ বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দিয়ে এলাকাবাসীকে জেলা প্রশাসনের তদন্তের ওপর আস্থা রাখার অনুরোধ জানান। তিনি বলেন, ওই দুই শিক্ষকের বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ প্রমাণ হলে অবশ্যই তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এই কমিটি আগামী ৭ কর্মদিবসের মধ্যে তদন্ত রিপোর্ট দাখিল করবেন।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।