মানিকগঞ্জ প্রতিনিধি: মানিকগঞ্জের শিবালয় উপজেলার পূর্ব সাইলী সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা নাজমা আক্তারের বিরুদ্ধে স্কুল মাঠে সবজি চাষ, স্কুলের শ্রেণীকক্ষের পরিবর্তে বাড়িতে ক্লাশ নেওয়া ও শিশু শ্রেণীর শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে প্রতি মাসে ১৫০ টাকা বেতন নেয়া সহ নানা অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। এ নিয়ে গত ১৭ আগস্ট জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসারের বরাবর ওই প্রধান শিক্ষিকার নানা অনিয়ম ও বদলীর প্রসঙ্গ উল্লেখ করে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন অত্র বিদ্যালয়ের অভিভাবকগণ।
অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, শিক্ষিকার দায়িত্বকালীন সময়ে সকলের অগোচরে তার পিতাকে অত্র বিদ্যালয়ের সভাপতির আসনে বসিয়ে বিভিন্ন অনিয়ম করে আসছে। শিশু শ্রেণীর ক্লাসও তিনি পরিচালনা করেন না। তিনি শিক্ষাথীদের দ্বারা টয়লেট পরিস্কার করায় এবং মাঝে মাঝেই টয়লেটে তালা দিয়ে রাখে। ফলে শিক্ষার্থীরা টয়লেট ব্যবহার করতে পারে না। শিশু শ্রেনীর ক্লাস বিদ্যালয়ের নির্ধারিত শ্রেণী কক্ষে না নিয়ে প্রধান শিক্ষিকার বাড়িতে অন্য শিক্ষিকা দ্বারা ক্লাস নেয়া হয়। যদি উপজেলা শিক্ষা অফিস থেকে কোনো কর্মকর্তা ভিজিটে আসেন তাহলে ঐ শিক্ষার্থীদের ক্লাসে নিয়ে এসে দেখান ঐ প্রধান শিক্ষিকা।
এছাড়াও স্কুলের আঙ্গিনায় শিশুদের খেলার জায়গায় সবজি বাগান করেছেন। বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির মেয়াদ শেষ হলেও এখনো কোন নতুন কমিটি করা হয় নাই। প্রধান শিক্ষিকার এধরনের কার্যকলাপে এলাকাবাসীর মনে চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছে। প্রধান শিক্ষিকাকে বদলি না করা হলে যে কোন সময় অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটতে পারে বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়।
অভিভাবক রাকিবুজ্জামান রনি জানায়, আমার মেয়ে অত্র বিদ্যালয়ে শিশু শ্রেনীতে পড়ে। মেয়েকে বিদ্যালয়ের শ্রেণী কক্ষে ক্লাস না করিয়ে প্রধান শিক্ষিকার বাড়িতে অন্য ম্যাডামকে দিয়ে ক্লাস করানো হয়। শুধু আমার মেয়ে না এই বিদ্যালয়ে শিশু শ্রোণীর সকল শিক্ষর্থীকে ওখানে ক্লাস করায় এবং প্রতি মাসে ১’শ পঞ্চাশ টাকা বেতন দিতে হয়।
বিদ্যালয় কমিটির সভাপতি হাজী মোঃ শুকুর আলী বলেন, কিছু লোক আমাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা বলে অভিভাবদের কাছে বিভ্রান্ত সৃষ্টি করছে। আমার জায়গায় এই স্কুলটি প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। স্কুল প্রতিষ্ঠাকালীন সময় ১৯৬২ সাল থেকে এই প্রতিষ্ঠানকে দিয়ে আসছি এবং যতদিন বেঁচে আছি দিয়েই যাবো। আমি এলাকার বিভিন্ন ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে জায়গা দিছি । আজ যারা আমার ও আমার মেয়ের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ দিচ্ছে সবাই লুটে পুটে খাওয়ার জন্য আমাদের নামে মিথ্যা অভিযোগ দিচ্ছে।
এ বিষয়ে প্রধান শিক্ষিকা নাজমা আক্তার বলেন, অভিযোগটা ঠিক না। শিশু শ্রেণীর ক্লাস আমি এই বিদ্যালয়ে আশার পূর্বেই ঐ বাড়িতে ক্লাশ হতো। যে সকল বাচ্চারা আমার বাড়ির প¦ার্শের বাড়িতে পড়ে তাদের অভিভাবক আমাদের বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের উপর আস্থা রাখতে পারেন না বলেই ওখানে পড়ান। আমি অনেকবার আনার চেষ্টা করেছি তারা আসে না। আর আমি বিদ্যালয়ে বেগুন গাছ লাগিয়েছি বিদ্যালয়ের বাড়তি আয়ের জন্য, আমার জন্য না।
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার তাপস কুমার অধিকারী জানান, এ বিষয়ে সহকারী শিক্ষা অফিসার মোঃ শাহিনুর ইসলাম মজুমদারকে পাঠিয়েছিলাম তদন্ত করার জন্য। তদন্ত করা হয়েছে। তদন্ত রিপোর্ট পেলে এর বিরুদ্ধে যথাযথা ব্যবস্থা নেয়া হবে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।