জুমবাংলা ডেস্ক : নানা মাত্রিক প্রতিভার অদম্য সাহসী একজন নারী ড. জান্নাত আরা তালুকদার হেনরী। আত্মপ্রত্যয়, নিষ্ঠা ও সততা নিয়ে এগিয়ে চলা সাহসী এই নারী স্কুল শিক্ষক থেকে এখন এমপি। তিনি একজন রবীন্দ্র সঙ্গীত শিল্পীও। সাংস্কৃতিক অঙ্গনেও তাঁর বিচরণ রয়েছে, সভাপতি হিসেবে নেতৃত্ব দিচ্ছেন রবীন্দ্রসঙ্গীত সম্মিলন পরিষদ এবং সিরাজগঞ্জ সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট।
কলকাতার একটি বিশ^বিদ্যালয় থেকে শিক্ষানুরাগী হিসেবে ডক্টরেট সম্মানায় সম্মানিত হয়েছেন। নানা মাত্রিক প্রতিভার এই নারী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সিরাজগঞ্জ-২ (সদর-কামারখন্দ) আসনে সরাসরি ভোটে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন। আইন প্রণেতা হয়েছেন। ঘাত-প্রতিঘাত উতরিয়ে সংগ্রামী এই নারী মানুষের কল্যাণে কাজ করছেন। মানব সেবার সুযোগও তিনি পেয়েছেন।
বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাঁর প্রতি আস্থা রেখে আশীর্বাদ করেছিলেন, দলীয় মনোনয়ন দিয়েছিলেন। তাঁর পরিশ্রম, নিষ্ঠা, সততা আর একাগ্রতা, দলের নেতাকর্মীসহ সর্বস্তরের মানুষের সহযোগিতায় পরম করুণাময় তাঁকে জনগণের সেবার সুযোগ দিয়েছেন। এ সুযোগ পেয়ে তিনি তৃপ্ত, কৃতজ্ঞ।
ড. জান্নাত আরা তালুকদার হেনরীর পিতা বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুল হামিদ মিয়া একজন স্কুল শিক্ষক ছিলেন। বাড়ি সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার সদানন্দপুর (কড্ডা) গ্রামে। পারিবারিক সম্মতিতে সিরাজগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের আমৃত্য সভাপতি, সাবেক জেলা গভর্র্নর বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক সহযোদ্ধা মহান মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক ভাষাসৈনিক মরহুম মোতাহার হোসেন তালুকদারের কনিষ্ঠ পুত্র শামীম তালুকদার লাবুর সঙ্গে পরিণয় হয়।
শহরের মুজিব সড়কের এই বাসা দলীয় অফিসের বাইরে রাজনৈতিক নেতা-কর্মীদের বিচরণ ছিল। বিয়ের পরে শহরের একটি খ্যাতনামা বিদ্যাপীঠে শিক্ষকতা শুরু করলেও শ^শুর একুশে পদকপ্রাপ্ত (মরণোত্তর) মোতাহার হোসেন তালুকদারের রাজনৈতিক কর্মকা-ের প্রতি আকৃষ্ট হয়ে পড়েন। সমাজ সেবার ব্রত নিয়ে ধীরে ধীরে রাজনীতিকে আঁকড়ে ধরেন। ২০০৮ সালে তিনি জাতীয় সংসদের সিরাজগঞ্জ-২ (সদর-কামারখন্দ) আসনে দলীয় মনোনয়ন পেয়েছিলেন। কিন্তু সামান্য ভোট ব্যবধানে পরাজিত হন।
সেদিনের সেই পরাজয় এবং মানব সেবার প্রত্যয় তাঁর মনোবলকে আরও শক্তিশালী করে তোলে। মাঠের রাজনীতিতে আরও সক্রিয় হয়ে ওঠেন। পাশাপাশি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে যুক্ত হয়ে তার সেই উপার্জন দিয়ে মানব সেবায় যুক্ত হন। তিনি গড়ে তুলেছেন, হোমিওপ্যাথিক কলেজ, বৃদ্ধাশ্রম, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, মসজিদ মাদ্রাসাসহ সেবামূলক ও ধর্মীয় অনেক প্রতিষ্ঠান। ২৫০শয্যাবিশিষ্ট শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিব সিরাজগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে শিশু বিভাগে আর্থিক সহায়তা দিয়ে মা ও শিশু স্বাস্থ্যের কল্যাণে কাজ করছেন এই নারী।
বর্তমান পেক্ষাপটে রাজনীতিতে নারীর অংশগ্রহণ প্রসঙ্গে ড. হেনরী বলেন, প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা রাষ্ট্রীয় কাঠামো এবং দলীয় কাঠামোতে নারীর অংশগ্রহণের দ্বার খুলে দিয়েছেন। রাজনীতিতে তৃণমূল পর্যায়ে নারীর অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা হয়েছে। নারীরা এখন রাজনীতিতে এগিয়েও আসছেন। সংরক্ষিত নারী আসনে আওয়ামী লীগের ৪৮ আসনের বিপরীতে মনোনয়ন ফরম জমা দিয়েছিলেন এক হাজার ৫৪৯ জন নারী।
তাঁর মানে নারীরা এখন রাজনীতিতে আগের তুলনায় অনেকটা এগিয়ে। তাছাড়াও রাজনৈতিক দলের মহিলা সংগঠনে বিশেষ করে আওয়ামী লীগের মহিলা সংগঠনে, মাঠে শিক্ষিত নারীরা এগিয়ে এসেছেন। সব মিলিয়ে বলা যায় নারীরা রাজনীতিতে ক্রমশই এগিয়ে আসছেন। তিনি আশাবাদী ভবিষ্যৎ নারীরা রাজনীেিত আরও সক্রিয় অংশগ্রহণ করবেন।
আপনার নির্বাচনী এলাকায় নারীদের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে কোনো পরিকল্পনা আছে কি প্রশ্নে তিনি জানান- প্রথমতঃ কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি বাংলাদেশের জনগণের ভাগ্য উন্নয়নে যিনি নিরলস পরিশ্রম করছেন আমাদের নেতা প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার প্রতি, যিনি আমাকে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আমার নির্বাচনী এলাকা (সিরাজগঞ্জ সদর-কামারখন্দ) আসনে সংসদ সদস্য পদে মনোনয়ন দিয়েছিলেন।
আমি কৃতজ্ঞতা জানাই আমার নির্বাচনী এলাকার আপামর জনসাধারণ এবং ভোটারদের যারা শ্রদ্ধা ভালোবাসায় বিপুল ভোটে আমাকে নির্বাচিত করেছেন। দলীয় সর্বস্তরের নেতা-কর্মীদের প্রতিও আমার অশেষ কৃতজ্ঞতা। বিশেষ করে নারী ভোটার এবং নারী কর্মীরা আমাকে যেভাবে সহযোগিতা করেছেন তা অনুসরণীয়। জনগণের ভালোবাসার এই দায়বদ্ধতা থেকে এবং মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর আস্থার জায়গা থেকে আমি আমার নির্বাচনী এলাকার সর্বস্তরের জনগণের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে একটি দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে চাই। এখানে নারীরা কোনোভাবেই অবহেলিত থাকবেন না।
আমি একজন মা হিসেবে অনেকের বোন হিসেবে সর্বোপরি একজন নারী হিসেবে অবশ্যই নারীদের প্রতি বিশেষ নজর থাকবে। নারীদের আত্মমর্যাদায় আধিষ্ঠিত করতে নারী শিক্ষার প্রসার ঘটানো, নারী উদ্যোক্তা সৃষ্টি, আত্মকর্মসংস্থান সৃষ্টি ও নারীদের সামাজিক নিরাপত্তা বিধানসহ সকল ধরনের সহযোগিতা করার পরিকল্পনা রয়েছে বলে তিনি জানান। ব্যক্তিগত জীবনে তিনি এক কন্যা সন্তানের জননী।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।