বাংলাদেশে দ্রুতগতির ইন্টারনেটের নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছে স্টারলিংক। মার্কিন প্রযুক্তি উদ্যোক্তা ইলন মাস্কের প্রতিষ্ঠিত এই স্যাটেলাইটভিত্তিক ইন্টারনেট সেবাটি এখন সহজেই ঘরে বসেই গ্রহণ করা যাচ্ছে। গ্রামীণ কিংবা শহুরে—সব এলাকা থেকেই এখন স্টারলিংকের সংযোগ পাওয়া সম্ভব।
স্টারলিংক ইন্টারনেট খরচ: এক নজরে মূল্য ও প্যাকেজ
বর্তমানে বাংলাদেশে স্টারলিংক দুটি প্রধান প্যাকেজে ইন্টারনেট সেবা দিচ্ছে—‘Residential’ এবং ‘Residential Lite’। স্টারলিংক ইন্টারনেট খরচ নির্ভর করছে আপনি কোন প্যাকেজ বেছে নিচ্ছেন তার ওপর।
Table of Contents
- Residential প্যাকেজ: মাসিক ৬,০০০ টাকা।
- Residential Lite প্যাকেজ: মাসিক ৪,২০০ টাকা।
উভয় প্যাকেজেই আপনি পাবেন আনলিমিটেড ডেটা এবং সর্বোচ্চ ৩০০ এমবিপিএস পর্যন্ত গতি। এই গতি এবং সুবিধা বাংলাদেশের অনেক গ্রাহকের জন্য একটি যুগান্তকারী পরিবর্তন আনবে। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিভাগে এ সম্পর্কিত আরও খবর পড়তে পারেন।
এককালীন খরচ ও স্টারলিংক কিটের বিস্তারিত
স্টারলিংক ইন্টারনেট ব্যবহারের জন্য আপনাকে শুরুতে একটি কিট কিনতে হবে। এই কিটে রয়েছে:
- স্যাটেলাইট ডিশ
- Wi-Fi রাউটার
- মাউন্টিং ট্রাইপড
- প্রয়োজনীয় ক্যাবল
এই কিটের এককালীন মূল্য ধরা হয়েছে ৪৭,০০০ টাকা। সঙ্গে আছে ২,৮০০ টাকা শিপিং চার্জ, মোট ৪৯,৮০০ টাকা।
কীভাবে স্টারলিংক সংযোগ নেওয়া যায়?
- স্টারলিংক ওয়েবসাইটে (starlink.com) গিয়ে আপনার ঠিকানা দিন।
- ‘Residential’ অথবা ‘Residential Lite’ প্যাকেজ নির্বাচন করুন।
- আপনার নাম, ঠিকানা এবং স্থানীয় ব্যাংকের ডেবিট/ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে পেমেন্ট সম্পন্ন করুন।
- পরিচয়পত্রের (জাতীয় পরিচয়পত্র বা পাসপোর্ট) একটি কপি আপলোড করুন।
- সব তথ্য সঠিকভাবে পূরণ করে ‘Place Order’ বাটনে ক্লিক করুন।
ইনস্টলেশন প্রক্রিয়া: নিজে থেকেই সংযোগ স্থাপন
কিট হাতে পাওয়ার পর স্যাটেলাইট ডিশটি খোলা আকাশের নিচে স্থাপন করতে হবে। এরপর রাউটার ও ডিশে বিদ্যুৎ সংযোগ দিলে এটি নিজে থেকেই স্যাটেলাইটের সাথে সংযুক্ত হয়ে যাবে। তারপর Wi-Fi রাউটারের মাধ্যমে ইন্টারনেট চালু করা যাবে। আরও পড়ুন ব্যবসা ও প্রযুক্তি সংবাদ।
স্টারলিংক ভাগাভাগি করে ব্যবহার করা যাবে?
হ্যাঁ, স্টারলিংকের ইন্টারনেট সেবা ভাগাভাগি করে ব্যবহার করা সম্ভব। একটি কিটের রেঞ্জ শহরে ২০-৫০ মিটার এবং গ্রামে ৫০-৬০ মিটার পর্যন্ত। অতিরিক্ত দূরত্বে ইন্টারনেট পৌঁছাতে চাইলে Repeater, Mesh বা Outdoor Access Point ব্যবহার করা যেতে পারে। ফলে একাধিক পরিবার মিলে একটি কিট কিনে ব্যবহার করতে পারেন।
স্টারলিংকের সুবিধা ও সম্ভাবনা
- বাংলাদেশের যেকোনো এলাকায় ইন্টারনেট ব্যবহারযোগ্য
- ডেটা লিমিট নেই, আনলিমিটেড ব্রাউজিং
- উচ্চগতির সংযোগ, সর্বোচ্চ ৩০০ এমবিপিএস
- এনজিও, ফ্রিল্যান্সার, উদ্যোক্তা ও দূরবর্তী অফিসগুলোর জন্য উপযোগী
স্টারলিংকের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা
বর্তমানে শুধুমাত্র ‘Residential’ এবং ‘Residential Lite’ প্যাকেজ থাকলেও ভবিষ্যতে আরও উন্নত প্যাকেজ ও সেবার আশা করা যায়। সরকারের অনুমোদন পেলে ‘Roam’ বা ভ্রাম্যমাণ প্যাকেজও চালু হতে পারে।
স্টারলিংক ইন্টারনেট খরচ বিবেচনায় নিলে এটি প্রিমিয়াম গ্রাহকদের জন্য একটি সাশ্রয়ী ও নির্ভরযোগ্য অপশন হয়ে উঠছে। বিশেষ করে যেখানে ফাইবার অপটিক সংযোগ পাওয়া যায় না, সেসব স্থানে এটি হবে অনন্য।
প্রায়শই জিজ্ঞাসিত প্রশ্ন (FAQs)
স্টারলিংক ইন্টারনেটের মাসিক খরচ কত?
বর্তমানে দুটি প্যাকেজ চালু রয়েছে—Residential প্যাকেজে মাসে ৬,০০০ টাকা এবং Residential Lite প্যাকেজে ৪,২০০ টাকা।
স্টারলিংক সেটআপ কিটে কী কী অন্তর্ভুক্ত?
স্যাটেলাইট ডিশ, Wi-Fi রাউটার, মাউন্টিং ট্রাইপড এবং প্রয়োজনীয় ক্যাবল অন্তর্ভুক্ত থাকে।
কত সময়ে স্টারলিংক কিট পৌঁছে?
অর্ডার করার পর ৩ থেকে ৪ সপ্তাহের মধ্যে কিট আপনার ঠিকানায় পৌঁছে যাবে।
স্টারলিংক একাধিক ব্যবহারকারী মিলে ব্যবহার করতে পারবে?
হ্যাঁ, একাধিক পরিবার বা ব্যক্তি একটি কিট ব্যবহার করতে পারেন, রাউটারের রেঞ্জ এবং Repeater ব্যবহার করে সেটি সম্প্রসারণ করা যায়।
কোথায় স্টারলিংক সংযোগ পাওয়া যাবে?
বাংলাদেশের সব শহর ও গ্রামীণ এলাকায় সংযোগ পাওয়া যাবে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।