কিন্তু এখনকার সফল উদ্যোক্তাদের দিকে তাকালে দেখা যায় একেবারেই ভিন্ন চিত্র। তাঁরা আদতে তথ্য–উপাত্ত এবং বাজার বিশ্লেষণকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিচ্ছেন। আমরা যদি যুক্তরাষ্ট্রের ফেসবুক, অ্যামাজন, অ্যাপল, নেটফ্লিক্স বা গুগলের দিকে তাকাই, যদি দেখি চীনের সফল অনলাইন ব্যবসা বাইডু বা ট্যানসেন্ট, দেখা যাবে এসব উদ্যোগে তথ্য–উপাত্ত বা ব্যবসা বিশ্লেষণই সফলতা এনে দিয়েছে। এই বড় বাজারসম্পন্ন প্রতিষ্ঠানগুলো তথ্যবিজ্ঞান (ডেটা সায়েন্স) এবং বিশ্লেষণকে (অ্যানালাইটিকস) তাদের কৌশল ও কার্যক্রমের মূল ভিত্তি মনে করছে।
বাজেট ও উদ্যোক্তাঃ
স্বপ্নকে সফল ব্যবসায় রূপান্তর করতে গেলে প্রথমে প্রয়োজন হয় মূলধনের হিসাব। মূলধনের হিসাবের পরই অপারেশন চালানোর জন্য কী পরিমাণ টাকা লাগবে তা হিসাব করে বের করে ফেলা হয়। এভাবে একটার পর একটা হিসাবের স্তরে স্তরে গাঁথা হয় স্বপ্নের বা পরিকল্পিত ব্যবসার সফলতার কর্মপরিকল্পনা। ব্যবসাকে সঠিকভাবে গাণিতিক ছকে ফেলতে পারলে সহজেই বিশ্লেষণ করা যায় এবং বিফলতার ঝুঁকিগুলোকে শনাক্ত করার মাধ্যমে সফল হওয়া যায়।
বাজার তথ্য ও উদ্যোক্তাঃ
আবার বাজার তথ্যের ভিত্তিতেই তৈরি করতে হয় পণ্যের পরিমাণ পরিকল্পনা; যা পণ্য উৎপাদন শ্রমিক, কারখানা ও মজুত খরচকে নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে। কথায় আছে ‘কিনতে না জিতলে বিক্রিতেও কষ্ট।’ বাজার তথ্যের মাধ্যমে জানা যায় বাজারের চাহিদা, অপেক্ষাকৃত কোন প্রতিষ্ঠানের পণ্য সর্বাধিক জনপ্রিয়, পণ্য প্রতিযোগিতা, বাজারের ওপর দখল, প্রতিযোগী প্রতিষ্ঠানের মার্কেটিং পদ্ধতি, প্রচারণাসহ আরও বহুবিধ তথ্য; যা বিশ্লেষণের মাধ্যমে সঠিক বাজারকৌশল গ্রহণ করা যায় এবং ব্যবসায় সফলতা আনা যায়।
কাস্টমার ও উদ্যোক্তাঃ
কাস্টমারের (ক্রেতা) আচরণ ও ব্যবসার প্রসারণ একে অপরের পরিপূরক। সন্তুষ্ট কাস্টমার মানেই সফল ব্যবসা। আর কাস্টমারের এই আচরণ জানতে গেলে অবশ্যই আমাদের কাস্টমার সম্পর্কে জানা খুবই জরুরি। উদ্যোক্তা যদি জানতে পারেন, তাঁর কোনো ব্যবসায়িক আচরণ বা প্রচারণায় কাস্টমার খুশি থাকেন, তবেই ব্যবসা সফল হবে। আর এ তথ্য জানার জন্য অবশ্যই কাস্টমার তথ্য বিশ্লেষণের মাধ্যমেই তা নিরূপণ করা সম্ভব। কাস্টমারের তথ্যের মাধ্যমেই পণ্য নিরূপণ, মূল্য নির্ধারণ, বাজার বিপণন–কৌশল নির্ধারণ করা হয়ে থাকে।
এখনকার উদ্যোক্তাদের আর ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি করলে চলবে না। তাঁদের হতে হবে সফল এবং প্রগতিশীল ব্যবসায়ী। তাঁদের বিশ্লেষণভিত্তিক মনন এনে দিতে পারে সর্বোচ্চ সাফল্য।
আর তাই প্রত্যেক উদ্যোক্তারই প্রয়োজন ব্যবসা বিশ্লেষণের জ্ঞান। তার সঙ্গে তাঁদের শেখা উচিত মাইক্রোসফট এক্সেল, মাইক্রোসফট পাওয়ার পয়েন্ট এবং মাইক্রোসফট ওয়ার্ডের মতো জরুরি সফটওয়্যারের কাজ। মাইক্রোসফট এক্সেলের মাধ্যমে একজন উদ্যোক্তা খুব সহজেই বাজেট তৈরি করাসহ বাজার বিশ্লেষণের কাজ করতে পারবেন। মাইক্রোসফট ওয়ার্ড ও পাওয়ার পয়েন্টের মাধ্যমে আইডিয়া উপস্থাপনসহ অনেক গুরুত্বপূর্ণ যোগাযোগের টুল তৈরি করা সম্ভব, যা ব্যবসার উন্নতিতে সাহায্য করে।
আসলে সফলতার মূলমন্ত্র বলে কিছু নেই। কিন্তু বিশ্লেষণ করে কাজ করলে সফলতাকে ছোঁয়া খুবই সহজ। বিশ্লেষণ ব্যবসার ঝুঁকি কমাতে যেমন সাহায্য করে, তেমনি ব্যবসায়িক খরচও আয়ত্তের মধ্যে ধরে রাখে, যা একজন উদ্যোক্তাকে সফল হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।