নিজস্ব প্রতিবেদক, গাজীপুর: গাজীপুরের টঙ্গীতে স্ত্রীকে নিয়ে কটূক্তি করায় বাসচালকের সহকারী (হেলপার) অলি মিয়াকে বালিশচাপা দিয়ে হত্যা করে লাশ খণ্ডিত করার অভিযোগে তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব। নিহত অলি নরসিংদী জেলার করিমপুর গ্রামের সুরুজ মিয়ার ছেলে।
র্যাব-১-এর অধিনায়ক লে. কর্নেল মো. আশিকুর রহমান রোববার (২০ আগস্ট) দুপুরে কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে জানান, গ্রেপ্তাররা হলেন—হত্যার মূল পরিকল্পনাকারী আপেল মাহমুদ সাদেক (৪২), তাঁর স্ত্রী শাওন বেগম (৩২) ও সহযোগী সাজ্জাদ হোসেন রনি (২৫)। শনিবার বিকেলে গোপন তথ্যের ভিত্তিতে চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের জঙ্গল সলিমপুর এলাকা থেকে তাঁদের আটক করা হয়।
র্যাব জানায়, অলি মিয়ার সঙ্গে গ্রেপ্তারদের পূর্বপরিচয় ছিল। তিনি প্রায়ই আপেলের বাসায় যাতায়াত করতেন। এক পর্যায়ে আপেলের স্ত্রী শাওন আক্তারের চরিত্র নিয়ে কটূক্তি করেন অলি। এ ছাড়া আপেলের ভাগনেকে হত্যার পরিকল্পনা এবং কয়েক বছর আগে তুচ্ছ ঘটনায় রনিকে স্থানীয় লোকজন দিয়ে মারধর করানোর ক্ষোভ থেকে হত্যার পরিকল্পনা করা হয়।
পরিকল্পনা অনুযায়ী, গত ৬ আগস্ট ভোরে আপেল ও রনি অলিকে টঙ্গীর বনমালা এলাকায় রেললাইনে নিয়ে যান। দীর্ঘক্ষণ ট্রেন না আসায় তাঁকে বাসায় ফিরিয়ে এনে ১০টার দিকে বিছানায় ফেলে দড়ি ও বেল্ট দিয়ে হাত-পা বেঁধে বালিশচাপা দিয়ে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়। পরদিন ছুরি, কালো পলিথিন ও স্কচটেপ কিনে এনে মরদেহ আট খণ্ডে বিভক্ত করে পলিথিনে মুড়ে রাখা হয় টয়লেটে; মাথাটি লুকিয়ে রাখা হয় ফলস সিলিংয়ে।
শুক্রবার রিকশাযোগে খণ্ডিত লাশ ভর্তি ব্যাগটি টঙ্গীর স্টেশন রোডে ফেলে দেন আপেল ও রনি। পুরো ঘটনাটি নজরে রাখেন শাওন আক্তার।
গ্রেপ্তারের সময় তাঁদের কাছ থেকে তিনটি মোবাইল ফোন, তিনটি সিম কার্ড ও নগদ ১৫০ টাকা জব্দ করা হয়। বিকেলে তাঁদের টঙ্গী পূর্ব থানায় হস্তান্তর করা হবে।
গত শুক্রবার সকালে টঙ্গীর স্টেশন রোড এলাকায় ট্রাভেল ব্যাগে অলির লাশের খণ্ডিত অংশ উদ্ধার হয়। এ ঘটনায় নিহতের স্ত্রী শাহানা আক্তার বাদী হয়ে টঙ্গী পূর্ব থানায় হত্যা মামলা করেছেন।