জুমবাংলা ডেস্ক: প্যারিসে মাদাম তুসোয় শোভা পায় মহাত্মা গান্ধী, অমিতাভ বচ্চন এবং শচীন টেন্ডুলকারের মোমের মূর্তি। কলকাতার মোমের মিউজিয়ামে আছেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, শাহরুখ খান, সালমান খান। কোভিড মহামারীর দ্বিতীয় তরঙ্গের সময় কলকাতার কইখালী অঞ্চলের বাসিন্দা তাপস সান্দিল্য তার প্রাণাধিক প্রিয় স্ত্রী ইন্দ্রাণীকে হারিয়েছিলেন। কিন্তু কথায় বলে ভালোবাসা মরেও মরে না, আর তাই স্ত্রীকে সর্বক্ষণ কাছে রাখতে তার একটি সিলিকনের প্রতিমূর্তি তৈরী করিয়েছেন এই প্রৌঢ়।
মৃত্যুর আগে স্বামীর কাছে একটি আবদার করে গিয়েছিলেন স্ত্রী। তার এ আবদার মেটাতেই স্বামী তৈরি করলেন সোফায় বসে থাকা স্ত্রীর একটি ভাস্কর্য, যা সিলিকন দিয়ে তৈরি। দেখলে মনে হবে, তার প্রাণবন্ত স্ত্রী যেন সত্যি বসে আছে।
ভারতে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ চলাকালে মৃত্যু হয় অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মকর্তা ৬৫ বছর বয়সী তাপস সান্দিল্যর স্ত্রী ইন্দ্রানির। এতে তাদের ৩৯ বছরের সংসার জীবনের ইতি ঘটে। স্ত্রী ইন্দ্রানীকে যখন হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল, তখন তিনি নিজে ছিলেন আইসোলেশনে। তাকে তার স্ত্রী থেকে আলাদা থাকতে বাধ্য করা হয়েছিল। তাই স্ত্রী মারা যাওয়ার সময় তার পাশে থাকতে পারেননি। স্ত্রীর শেষ ইচ্ছা পূরণ করার জন্য দৃঢ়প্রতিজ্ঞ তাপস এমন একজন শিল্পীকে খুঁজতে শুরু করেছিলেন, যে ইন্দ্রানীর মতো দেখতে একটি সিলিকন মূর্তি তৈরি করতে পারে।
গত বছর তাপস পেয়েও যান একজন ভাস্করকে। যিনি তাপসের প্রয়াত স্ত্রীর মতো দেখতে সিলিকন মূর্তি বানিয়ে দিতে ইচ্ছা প্রকাশ করেন। প্রথমেই মাটি দিয়ে একটি আকার তৈরি করা হয়, এরপর সিলিকনের ঢালাই দেওয়া হয়। ৬৫ বছর বয়সী তাপস বলেছেন, বানানোর পর মূর্তিটি তার বেশ পছন্দ হয়েছে। দেখতে একেবারে জীবন্ত!
সিলিকনের এ ভাস্কর্য তৈরিতে সান্দিল্যর খরচ হয়েছে ২ লাখ ৫০ হাজার টাকার মতো। এর ওজন প্রায় ৩০ কেজি। পরনে আছে সিল্কের শাড়ি এবং গয়না। তাপসের বাড়িতে এবং পরিবারের প্রিয় জায়গায় একটি দোলনায় তাকে স্থায়ীভাবে বসিয়ে রাখা হয়েছে।
তাপস বলেন, ‘আমরা এক দশক আগে মায়াপুরের ইসকন মন্দিরে গিয়েছিলাম এবং সেখানে ভক্তিবেদান্ত স্বামীর প্রাণবন্ত মূর্তি দেখে প্রশংসা করা বন্ধ করতে পারিনি।’
এমন জীবন্ত দেখতে মূর্তি স্থাপনে তার পরিবার বিরোধিতা করলেও প্রতিবেশীরা এবং কিছু আত্মীয় তাকে সাহায্য করেছিল বলে জানান তাপস।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।