জুমবাংলা ডেস্ক: রুদ্রকর মঠ হল বাংলাদেশের শরীয়তপুর জেলায় অবস্থিত একমাত্র মঠ। প্রায় দেড়শত বছরের পুরাতন প্রাচীন এই মঠ শরীয়তপুর জেলার শরীয়তপুর সদর উপজেলার রুদ্রকর ইউনিয়নে অবস্থিত। যা রুদ্রকর জমিদার বাড়ির জমিদাররা তৈরি করেছিলেন।রুদ্রকর এলাকার নামানুসারেই উক্ত মঠটি সকলের কাছে রুদ্রকর মঠ নামে পরিচিত।
প্রায় দেড়শত বছর আগে রুদ্রকর জমিদার বাড়ির জমিদার গুরুচরণ চক্রবর্তী এই মঠটি তৈরি করেন। তিনি তার জমিদারী আমলে ধীরে ধীরে মঠটি তৈরি করেন। আনুমানিক ১৩০৫ – ১৩১৫ বঙ্গাব্দেরর মধ্যে মঠটি তৈরি করা হয়। কথিত আছে মা রাশমনি দেবীর সমাধীকে অমর করে রাখার জন্য নাকি এই মঠটি তৈরি করা হয়েছিল।
মঠটিতে নিচের অংশে বড় একটি শ্মশান মন্দির ও মন্দিরটির মূল উপাসনালয় কক্ষের সঙ্গে থাকা বারান্দার চার কোণায় চারটি ছোট মন্দির (মঠ)। এর মধ্যে বড় মন্দিরটির উচ্চতা প্রায় ২০ মিটার। চার কোণায় চারটি ছোট মন্দির যথাক্রমে প্রায় ১.৯৫ মিটার। এ ছাড়া তৃতীয় তলায় মূল টাওয়ারের গায়ে চারপাশে চারটি দেবী মূর্তির অলংকরণ রয়েছে। মঠের উপরের অংশ প্যাগোডার মত তৈরি করা হয়েছিল।মঠটির সামনে রয়েছে একটি বিশালা আকৃতির পুকুর। পরিচর্যা না থাকাতে মঠটি এখন প্রায় জীর্ণশীর্ণ অবস্থায় রয়েছে। এরমধ্যে ১৮৯৮ সালে মঠটি পুননির্মাণ করা হয়েছিল।
এলাকার কয়েকজন প্রবীণ ব্যক্তির সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, রুদ্রকর জমিদারবাড়িতে আট থেকে দশটি পাশাপাশি ভবন ছিল, যা বাড়ির মঠ পর্যন্ত বিস্তৃত ছিল। এর মধ্যে তিনতলা ভবনগুলো ছিল আবাসস্থল। বাকিগুলোয় ছিল জমিদারদের দরবার কক্ষ, গুদাম ঘর, রন্ধনশালা ও নৃত্যশালা। মঠসংলগ্ন একটি ভবন ছিল উপাসনালয়। এটির এখন আর অস্তিত্ব নেই। বাবুবাড়িতে মাটির নিচে কয়েকটি গোপন কুঠরি ছিল, যেগুলো মাটিধসে বিলীন হয়ে গেছে। স্থানীয়দের ধারণা, মাটি খুঁড়লে এখনো সেই গোপন কুঠরির অস্তিত্ব পাওয়া যেতে পারে।
একই গ্রামের বাসিন্দা সুফিয়া বেগম জানান, স্বাধীনতার পর রুদ্রকর জমিদারবাড়ির শেষ জমিদার সপরিবারে ভারতে চলে যান। এরপরই স্থানীয়রা মঠটি সংরক্ষণের উদ্যোগ নেন। তবে সরকারি পৃষ্টপোষকতা না থাকায় জমিদারবাড়ির এ মন্দিরটি ধীরে ধীরে নষ্ট হয়ে যাওয়ার উপক্রম হয়েছে। আমরা দেখাশোনা করে ভাঙনের হাত থেকে রক্ষা করে রাখছি।তবে মন্দিরের পাশে জেলা প্রশাসন এর একটি ফলক লক্ষ্য করা গেছে। সে ফলকে মঠের সংক্ষিপ্ত একটি ইতিহাস তুলে ধরা হয়েছে।
রুদ্রকর জমিদার বাড়ির এ মঠটি দেখতে হলে যেতে হবে শরীয়তপুর জেলা শহর থেকে পাঁচ কিলোমিটার দক্ষিণ-পূর্বে ডামুড্যা-শরীয়তপুর মহাসড়কের পাশে রুদ্রকর ইউনয়িন পরিষদ কার্যালয়। এর উত্তর দিকে রাস্তায় পা বাড়ালেই রুদ্রকর জমিদারবাড়ি (বাবুবাড়ি)। এম আব্দুল মান্নান/জুমবাংলা/শরীয়তপুর
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।