আন্তর্জাতিক ডেস্ক : চীনের হুনান প্রদেশের পিংজিয়াং কাউন্টিতে ভূতত্ত্ববিদরা পৃথিবীর অন্যতম বড় স্বর্ণের ভান্ডার আবিষ্কার করেছেন। দুই কিলোমিটারেরও বেশি গভীরে থাকা এই খনিতে ভূগর্ভে প্রায় ১,০০০ মেট্রিক টন স্বর্ণ পাওয়া গেছে। এই ভূসম্পদ আবিষ্কারের মাধ্যমে চীন খনিজ আহরণের নতুন এক অধ্যায়ে প্রবেশ করতে যাচ্ছে।
Table of Contents
স্বর্ণের ভান্ডার ও বাজারমূল্য
বিশেষজ্ঞদের মতে, নতুন আবিষ্কৃত এই ভান্ডারে থাকা স্বর্ণের বাজারমূল্য প্রায় ৭৮ বিলিয়ন ইউরো বা ৬০০ বিলিয়ন ইয়ুয়ান। প্রাথমিকভাবে ২,০০০ মিটার গভীরে প্রায় ৩০০ টন সোনা খুঁজে পাওয়ার পর, গভীরতর অনুসন্ধানে আরও স্বর্ণের সন্ধান মেলে।
গঠন ও বৈশিষ্ট্য
ওয়াঙ্গু সোনার খনি এখন বিশ্বের অন্যতম সমৃদ্ধ ও জটিল খনিজ ক্ষেত্র হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। এখানে ৪০টিরও বেশি স্বর্ণের রেখা শনাক্ত হয়েছে, যেগুলো ৩,০০০ মিটার গভীর পর্যন্ত বিস্তৃত। কিছু পাথরে প্রতি টনে ১৩৮ গ্রাম পর্যন্ত সোনা পাওয়া গেছে, যা অত্যন্ত উচ্চ ঘনত্বের নির্দেশক।
প্রযুক্তি ও অনুসন্ধান প্রক্রিয়া
এই আবিষ্কারে ব্যবহৃত হয়েছে উন্নত থ্রিডি ভূ-মানচিত্র এবং ভূতাত্ত্বিক সার্ভে প্রযুক্তি। এর ফলে সোনা সমৃদ্ধ অঞ্চলগুলো চিহ্নিত করা সহজ হয়েছে এবং খনির সীমানা নির্ধারণে নতুন দিক উন্মোচিত হয়েছে।
খনি পরিচালনা ও পরিবেশগত বিষয়
চীন ইতোমধ্যেই বাণিজ্যিক খনন শুরুর প্রস্তুতি নিচ্ছে। তবে এতো বড় পরিসরে খনন কার্যক্রম পরিবেশগত ঝুঁকি যেমন ভূমি ধস, পানি দূষণ এবং কার্বন নিঃসরণের কারণ হতে পারে। হুনান কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, তারা কঠোর পরিবেশনীতি অনুসরণ করবে।
অর্থনৈতিক ও কৌশলগত গুরুত্ব
এই খনিজ আবিষ্কার হুনান প্রদেশকে চীনের সোনার শিল্পে গুরুত্বপূর্ণ অবস্থানে নিয়ে যেতে পারে। ফলে খনি উন্নয়নের পাশাপাশি যোগাযোগ, বিদ্যুৎ ও অবকাঠামোতেও বড় পরিসরে বিনিয়োগ আসবে। এটি হতে পারে শিল্প উন্নয়ন ও পরিবেশ সংরক্ষণের ভারসাম্য রক্ষার একটি পরীক্ষামূলক ক্ষেত্র।
হুনান প্রদেশে নতুনভাবে আবিষ্কৃত এই বিশাল স্বর্ণের ভান্ডার চীনকে বৈশ্বিক খনিজ সম্পদের মানচিত্রে আরও উঁচুতে নিয়ে যেতে পারে। উন্নত প্রযুক্তি ও কঠোর পরিবেশনীতি অনুসরণ করে পরিচালিত হলে, এই প্রকল্প চীনের সোনার শিল্প ও পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষার মধ্যে এক নতুন যুগের সূচনা ঘটাতে পারে।
প্রায়শই জিজ্ঞাসিত প্রশ্নাবলি (FAQs)
১. কোথায় এই স্বর্ণের ভান্ডার আবিষ্কৃত হয়েছে?
চীনের হুনান প্রদেশের পিংজিয়াং কাউন্টির একটি পাহাড়ের নিচে এই বিশাল স্বর্ণের ভান্ডার আবিষ্কৃত হয়েছে।
২. খনিতে কত পরিমাণ সোনা রয়েছে?
এই খনিতে প্রায় ১,০০০ মেট্রিক টন সোনা রয়েছে, যা বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ ভান্ডার হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
৩. এই খনির গভীরতা কত?
স্বর্ণের রেখাগুলো ৩,০০০ মিটার পর্যন্ত গভীরে বিস্তৃত এবং মূল খনি প্রায় ২,০০০ মিটার গভীরে অবস্থিত।
৪. স্বর্ণ আহরণে কী প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়েছে?
উন্নত থ্রিডি ভূ-মানচিত্র এবং ভূতাত্ত্বিক সার্ভে প্রযুক্তি ব্যবহার করে সোনা সমৃদ্ধ অঞ্চল চিহ্নিত করা হয়েছে।
৫. পরিবেশগত ঝুঁকি কতটা রয়েছে?
এতো গভীর ও বড় খনিতে কাজ শুরু হলে ভূমি ধস, পানি দূষণ এবং কার্বন নিঃসরণের ঝুঁকি রয়েছে। তবে কর্তৃপক্ষ পরিবেশ সংরক্ষণের কঠোর নীতি অনুসরণ করবে বলে জানিয়েছে।
৬. এই খনির অর্থনৈতিক প্রভাব কী হতে পারে?
এই খনিজ আবিষ্কার হুনান প্রদেশকে চীনের সোনার শিল্পে কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ করে তুলবে এবং এতে বড় পরিসরে বিনিয়োগের সম্ভাবনা রয়েছে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।