বিশ্বব্যাপী অত্যাধুনিক প্রযুক্তি, গয়না, চিকিৎসা সরঞ্জাম থেকে শুরু করে গাড়ির ক্যাটালিটিক কনভার্টার সবখানেই প্লাটিনামের ব্যবহার ক্রমেই বাড়ছে। সোনার দাম যতই বাড়ুক, বিরলতার কারণে প্লাটিনাম আজও অন্যতম দামী ধাতু। আশ্চর্যের বিষয় হলো, এই মূল্যবান ধাতুর প্রায় ৯৭ শতাংশ উৎপাদন মাত্র পাঁচটি দেশের হাতেই। ওয়ার্ল্ড অ্যাটলাস ও ওয়ার্ল্ড পপুলেশন রিভিউ-এর তথ্য অনুযায়ী, প্লাটিনাম উৎপাদনে শীর্ষস্থানীয় দেশগুলো হলো—দক্ষিণ আফ্রিকা, রাশিয়া, জিম্বাবুয়ে, কানাডা ও যুক্তরাষ্ট্র।

দক্ষিণ আফ্রিকা
প্লাটিনাম উৎপাদনে বিশ্বের এক নম্বর দক্ষিণ আফ্রিকা একাই বাকি সব দেশকে ছাপিয়ে গেছে।এই দেশটি বছরে প্রায় ১ লক্ষ ২০ হাজার কেজি প্লাটিনাম উৎপাদন করে, যা অন্য যেকোনো দেশের তুলনায় অনেক বেশি। মেরেন্সকি রিফ, আপার গ্রুপ ২ রিফ এবং প্ল্যাটরিফএই তিনটি প্রধান ভূতাত্ত্বিক অঞ্চল থেকেই দেশের অধিকাংশ প্লাটিনাম উত্তোলন করা হয়। শ্রমিক ধর্মঘট ও নিরাপত্তা সমস্যায় কিছুদিন কাজ ব্যাহত হলেও বৈশ্বিক প্লাটিনাম বাজারে দক্ষিণ আফ্রিকার আধিপত্য অটুট।
১৮২৩ সালে ইউরাল পর্বতমালায় প্রথম প্লাটিনাম আবিষ্কারের পর থেকেই রাশিয়া এই ধাতু উত্তোলনে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখছে।রাশিয়া বছরে প্রায় ২৩,০০০ কেজি প্লাটিনাম উৎপাদন করে এবং তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে। সাইবেরিয়ার তাইমির উপদ্বীপ বর্তমানে রাশিয়ার প্রধান উৎস। উৎপাদন তুলনামূলক কম হলেও স্থায়ী সরবরাহ বজায় রেখে বৈশ্বিক বাজারে শক্ত অবস্থান ধরে রেখেছে দেশটি।
জিম্বাবুয়ে
জিম্বাবুয়ের প্রায় পুরো প্লাটিনামই পাওয়া যায় গ্রেট ডাইক নামের দীর্ঘ ভূতাত্ত্বিক অঞ্চল থেকে।জিম্বাবুয়ে বছরে প্রায় ১৯,০০০ কেজি প্লাটিনাম উৎপাদন করে। মিমোসা, জিমপ্ল্যাটস, উঙ্কি এ দেশের গুরুত্বপূর্ণ খনি। উচ্চমানের আকরিক ও স্থিতিশীল উৎপাদনের কারণে জিম্বাবুয়ে ধারাবাহিকভাবে শীর্ষ উৎপাদকদের তালিকায় রয়েছে।
কানাডা
কানাডার প্লাটিনাম মূলত অন্টারিওর সাডবুরি বেসিন, এবং ম্যানিটোবা ও কুইবেকের নিকেল খনি থেকে উত্তোলন করা হয়।কানাডার উৎপাদন তুলনামূলকভাবে কম, প্রায় ৫,৫০০ কেজি। উৎপাদন কম হলেও বিশ্ববাজারে দেশটি একটি নির্ভরযোগ্য উৎস হিসেবে বিবেচিত।
যুক্তরাষ্ট্র
মন্টানার স্টিলওয়াটার ও ইস্ট বোল্ডার এই দুই খনি থেকে যুক্তরাষ্ট্রে প্লাটিনাম উত্তোলন করা হয়।যুক্তরাষ্ট্র বছরে প্রায় ২,৯০০ কেজি প্লাটিনাম উৎপাদন করে। খনি সংখ্যা কম হলেও উচ্চমানের আকরিকের কারণে দেশটি নিয়মিত উৎপাদন বজায় রেখেছে।
বিশ্বের প্লাটিনাম বাজার কার্যত এই পাঁচ দেশের ওপর নির্ভরশীল। এর মধ্যে দক্ষিণ আফ্রিকা একাই সবচেয়ে বড় উৎস। প্রযুক্তির বিস্তার ও প্লাটিনামের ব্যবহার বাড়তে থাকায় আগামী দিনেও এই ধাতুর গুরুত্ব আরও বাড়বে বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।



