বিশ্ববাজারে স্বর্ণের দাম আবারও আলোচনায়। সাম্প্রতিক সপ্তাহে একটি উল্লেখযোগ্য উর্ধ্বগতি দেখা গেছে, যা বিনিয়োগকারীদের নজর কেড়েছে। আন্তর্জাতিক অর্থনীতির ভলাটাইল পরিস্থিতিতে স্বর্ণ যেমন নিরাপদ বিনিয়োগ হিসেবে পরিচিত, এবারও তার প্রমাণ মিলেছে।
বিশ্ববাজারে স্বর্ণের দাম: চলমান প্রবণতা
স্বর্ণের দাম গত এক সপ্তাহে বিশ্ববাজারে উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে। ডলারের মান কমে যাওয়া, মার্কিন রাজস্বনীতিতে অনিশ্চয়তা এবং আন্তর্জাতিক ভূ-রাজনৈতিক উত্তেজনার প্রেক্ষাপটে বিনিয়োগকারীরা আবারও স্বর্ণের দিকে ঝুঁকছে। বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানায়, ২১ মে আন্তর্জাতিক বাজারে স্পট গোল্ডের দাম প্রতি আউন্সে ০.৫ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩,৩০৫.৩৯ ডলার। এটি ১২ মে’র পর সর্বোচ্চ মূল্য।
Table of Contents
গত ৭ মে থেকে ডলারের অব্যাহত পতন শুরু হয়। এতে করে আন্তর্জাতিক বিনিয়োগকারীদের কাছে স্বর্ণের দাম তুলনামূলকভাবে কম মনে হচ্ছে, যা চাহিদা বাড়িয়েছে। বিশ্লেষকরা জানান, ডলার সূচক ২৪ ঘণ্টায় ১ পয়েন্টের বেশি কমে গেছে।
একাধিক বিশ্লেষণ বলছে, ট্রাম্প প্রশাসনের প্রস্তাবিত কর সংস্কার বিল নিয়ে বাজারে সংশয় তৈরি হয়েছে, যা মার্কিন মুদ্রার ওপর চাপ সৃষ্টি করছে। এরই ফলে স্বর্ণকে নিরাপদ আশ্রয় হিসেবে দেখছেন বিনিয়োগকারীরা।
বাংলাদেশের বাজারে স্বর্ণের দাম: নতুন মূল্য তালিকা
বিশ্ববাজারের দাম বাড়ার প্রভাব বাংলাদেশেও পড়েছে। বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশন (বাজুস) স্বর্ণের দাম বাড়িয়েছে। ১৭ মে থেকে ২২ ক্যারেট স্বর্ণের প্রতি ভরিতে দাম বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১,৬৭,০৯৮ টাকা।
- ২১ ক্যারেট প্রতি ভরি: ১,৫৯,৫০৫ টাকা
- ১৮ ক্যারেট প্রতি ভরি: ১,৩৬,৭১৪ টাকা
- সনাতন পদ্ধতির স্বর্ণ প্রতি ভরি: ১,১২,৯৭৮ টাকা
এই পরিবর্তন ১৮ মে থেকে কার্যকর হয়েছে এবং সারা দেশের জুয়েলারি দোকানগুলোতে এই নতুন দরে স্বর্ণ বিক্রি হচ্ছে।
স্বর্ণ কেন বিনিয়োগের জন্য গুরুত্বপূর্ণ?
অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তার সময়ে স্বর্ণকে নিরাপদ বিনিয়োগ ধরা হয়। এটা দীর্ঘমেয়াদি মূল্যের স্থিতিশীলতা এবং মুদ্রাস্ফীতির প্রভাব থেকে রক্ষার উপায় হিসেবে কাজ করে। বিশেষ করে যখন শেয়ারবাজারে অস্থিরতা থাকে কিংবা ডলারের মান পড়ে যায়, তখন স্বর্ণের চাহিদা উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পায়।
বাজার পর্যবেক্ষণ: স্বর্ণের ভবিষ্যত প্রবণতা
বিশ্লেষকরা ধারণা করছেন, যদি ডলারের মান আরও কমে এবং রাজস্বনীতি নিয়ে অনিশ্চয়তা অব্যাহত থাকে, তাহলে স্বর্ণের দাম আরও বাড়তে পারে। অন্যদিকে, ফেডারেল রিজার্ভ যদি সুদের হার পরিবর্তন করে, তাহলে তার প্রভাবও সরাসরি স্বর্ণের দামে পড়বে।
ভবিষ্যৎ বিনিয়োগকারীদের জন্য পরামর্শ
স্বর্ণে বিনিয়োগ করার আগে বিশ্ব অর্থনীতি, ডলার সূচক এবং স্থানীয় বাজার পরিস্থিতি বিশ্লেষণ করা উচিত। এ ছাড়া বাজুসের দাম হালনাগাদ বিবরণী নিয়মিত পর্যবেক্ষণ করা জরুরি। স্বর্ণের দাম নিয়ে বিস্তারিত খবর পড়ুন অর্থনীতি বিভাগে।
বর্তমান প্রেক্ষাপটে স্বর্ণের দাম যে উচ্চতায় পৌঁছেছে, তা স্পষ্টভাবে বোঝাচ্ছে এই ধাতুটির গুরুত্ব। বিনিয়োগকারীরা যারা স্বর্ণে আগ্রহী, তাদের জন্য এটি একটি উপযুক্ত সময় হতে পারে। তবে প্রতিটি বিনিয়োগের আগে বিশ্লেষণ ও প্রস্তুতি অত্যন্ত জরুরি।
স্বর্ণের দাম নিয়ে জিজ্ঞাসিত প্রশ্ন
১. বর্তমানে বাংলাদেশে স্বর্ণের দাম কত?
২২ ক্যারেট স্বর্ণের দাম বর্তমানে প্রতি ভরি ১,৬৭,০৯৮ টাকা। তবে এই দাম সময়ে সময়ে পরিবর্তিত হতে পারে।
২. কেন হঠাৎ স্বর্ণের দাম বেড়ে গেল?
ডলারের মান কমে যাওয়া, রাজস্বনীতি নিয়ে অনিশ্চয়তা এবং বৈশ্বিক অস্থিরতা স্বর্ণের চাহিদা বাড়িয়েছে।
৩. স্বর্ণে বিনিয়োগ কতটা নিরাপদ?
স্বর্ণকে একটি নিরাপদ সম্পদ হিসেবে ধরা হয়, বিশেষত অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তার সময়।
৪. বিশ্ববাজারে স্বর্ণের দাম কোথায় দেখতে পারি?
বিশ্ববাজারে স্বর্ণের দাম বিভিন্ন অর্থনৈতিক সংবাদমাধ্যম যেমন রয়টার্স, ব্লুমবার্গ ইত্যাদিতে দেখা যায়।
৫. বাংলাদেশের বাজারে স্বর্ণের দাম কারা নির্ধারণ করে?
বাংলাদেশে স্বর্ণের দাম নির্ধারণ করে বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশন (বাজুস)।
৬. স্বর্ণ কিনতে হলে কাদের কাছ থেকে কেনা নিরাপদ?
স্বীকৃত ও লাইসেন্সপ্রাপ্ত জুয়েলারি দোকান থেকে স্বর্ণ কেনা সবচেয়ে নিরাপদ।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।