নোয়াখালীর সোনাইমুড়ী উপজেলার চাষীরহাটে পালিয়ে বিয়ে করার ১ মাসের মাথায় স্বামীসহ ৪ জনের বিরুদ্ধে থানায় অপহরণ, লুটপাট, ধর্ষণের মামলা করেছে আয়েশা আক্তার নামের এক গৃহবধূ।
রোববার রাতে আয়েশা আক্তার বাদী হয়ে সোনাইমুড়ী থানায় মামলা দায়ের করলে পুলিশ স্থানীয় চাষীরহাট বাজারের সোলাইমান (৩২) নামে এক ব্যবসায়ীকে আটক করে আদালতে প্রেরণ করে।
স্ত্রী আয়েশা আক্তারকে শারীরীক পরীক্ষার জন্য নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। মামলা অপর আসামিরা হচ্ছে স্বামী মোরশেদ আলম, স্বামীর বড় ভাই মো. আযাদ হোসেন ও স্থানী ইউপি সদস্য মহসিন।
জানা যায়, উপজেলার চাষীরহাট ইউনিয়নের পোরকরা গ্রামের আলী আহমদের ছেলে অজি উল্যার সঙ্গে একই গ্রামের চান মিয়ার মেয়ে আয়েশা আক্তার (৩৭) এর ২০০৭ সালে বিয়ে হয়। দাম্পত্য জীবনে তাদের সংসারে ২ কন্যা ও একটি পুত্র সন্তান রয়েছে। বিবাহের পর থেকে তাদের মধ্যে কলহ লেগেই থাকতো। এক পর্যায়ে উপজেলার ১নম্বর জয়াগ ইউনিয়নের ভাওরকোর্ট গ্রামের বাচ্চু মিয়ার ছেলে ও চাষীরহাঠের স্থানীয় ব্যবসায়ী মোরশেদ আলমের সঙ্গে আয়শা আক্তারের পরকীয়া সম্পর্ক গড়ে উঠে এবং তারা একাধিকবার কয়েক দিনের জন্য উধাও হয়ে যায়।
সর্বশেষ গত বছরের ৯ অক্টোবর আয়েশা আক্তার স্বামী অজি উল্যাকে তালাক দেয় এবং মোরশেদ আলমের সঙ্গে ৩ লাখ ৫০ হাজার টাকা দেনমোহর ধার্য্য করে লক্ষিপুর আদালতে নোটারি পাবলিকের মাধ্যমে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। বিবাহের এক মাসের মাথায় আয়েশা আক্তার পিতার বাড়িতে বেড়াতে এসে পূর্ব স্বামীর সঙ্গে পুনঃসখ্যতা গড়ে তোলেন। উভয়ের সিদ্ধান্ত মোতাবেক তারা থানায় এসে লুটপাট, ধর্ষণ, অপহরণের অভিযোগ এনে চারজনকে আসামি করে একটি এজাহার দায়ের করলে পুলিশ এটি নিয়মিত মামলা রুজু করে এবং সোলায়মানকে আটক করে।
মামলার আসামি আযাদ হোসেন দাবী করেন, আমি চাষীরহাটে দীর্ঘদিন সুনামের সঙ্গে ব্যবসা করে আসছি। আমার ভাইয়ের সঙ্গে এই প্রেমের সম্পর্কের কারণে একবার পালিয়ে যাওয়ার পরে আমি নিজে চেষ্টা করে ওই নারীকে উদ্ধার করে তার পরিবারের নিকট হস্তান্তর করি। এখানে অপহরণ বা অন্য কোনো বিষয় নেই। একটি মহল অসৎ উদ্দেশ্যে ষড়যন্ত্রমূলক আমাকে ফাঁসানোর অপচেষ্টা করছে। মহসিন মেম্বার দাবি করেন, গত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে উল্লেখিত নারীর ভাশুর নজির উল্যা আমার প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী ছিলো।
এ বিষয়ে কথা হলে চাষীরহাট ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান কামাল হোসেন জানায়, মামলার বাদী আয়েশা আক্তারের সঙ্গে দীর্ঘদিনের পরকীয়ার কারণে ইতোমধ্যে তারা একাধিকবার পালিয়ে বিয়ের চেষ্টা করে। শেষবার তারা উভয়ের সিদ্ধান্তে পালিয়ে গিয়ে বিয়ে করেন। এ সময় মহসিন মেম্বারসহ গণ্যমান্যরা ঘটনা মিমাংসার চেষ্টা করে। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে তার বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ করা হয়। এতে স্থানীয় বিভিন্ন বিষয় জড়িত রয়েছে।
সোনাইমুড়ী থানার পরিদর্শক (তদন্ত) ও মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ইমদাদ হোসেন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, বাদীর এজাহারের ভিত্তিতে মামলা রেকর্ড করা হয়েছে। তদন্ত সাপেক্ষে আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করা হবে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।