জুমবাংলা ডেস্ক : নাম তার রূপালী। পরে যুক্ত হয়েছে কণা। চেহারা আকর্ষণীয় হওয়ায় এলাকার সবাই তাকে সুন্দরী বলেই ডাকেন। স্বামী বিদেশ আছেন এমন কথা বলে একের পর লোকজনকে ফাঁদে ফেলে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে পরিবারের সবাই মিলে কৌশলে হাতিয়ে নেয় লাখ লাখ টাকা।
পরিবারটির মূল পেশাই যেন প্রতারণা করা। শুধু এলাকায় নয়, তারা দেশের বিভিন্ন জেলায় প্রতারণা কাজে জড়িত। প্রতারকদের বাড়ি জয়পুরহাটের কালাই উপজেলার পুনট ইউনিয়নের নান্দাইল দিঘি গ্রামে।
তারা প্রথমে বগুড়া জেলা শহরে, এরপর কালাই পৌর শহরে, সর্বশেষ জয়পুরহাট জেলা শহরের বাসস্ট্যান্ড এলাকায় ভাড়া বাসা নিয়ে এসব কাজ চালিয়ে আসছেন। কয়েকদিন আগে নওগাঁর সাপাহারের এক ব্যবসায়ীকে প্রেমের ফাঁদে ফেলেন রূপালী ও তার স্বামী কামরুজ্জামান।
তার কাছ থেকে পরিবারের সবাই মিলে ৩৬ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন এমন অভিযোগ পুলিশের কাছে। এরই সূত্র ধরে মঙ্গলবার রাতে জয়পুরহাট বাসস্ট্যান্ড এলাকায় তাদের ভাড়া বাসা থেকে নওগাঁর পিবিআই স্বামী-স্ত্রী, ছোট ভাই, ফুফু ও তার এক বোনকে আটক করেছে।
এ সময় পুলিশ তাদের বাড়ি থেকে দেড় লাখ টাকা উদ্ধার করেছে। স্থানীয় পুনট ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল কুদ্দুস ফকির বলেন, দীর্ঘদিন ধরে তারা সবাই প্রতারণার কাজে জড়িত। তাদের পরিবারের কোনো লোকজনই কোনো কাজকর্ম করে না।
অথচ সমাজে আর ১০ জনের চেয়ে তাদের দিন ভালোভাবে পার হচ্ছে। তাদের কঠিন শাস্তি দাবি করছি। পিবিআই নওগাঁ ইউনিটের পুলিশ সুপার নয়মুল হাসান জানান, রূপালী নামের মেয়েটি স্বামী বিদেশ আছে বলে প্রেমের ফাঁদে ফেলেন সাপাহার বাজারের ব্যবসায়ী আবুল কালামকে।
গত ৪-৫ মাস আগে মোবাইল ফোনে পরিচয় হয় তাদের। এরই মধ্যে তারা দৈহিক সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন। এমন সম্পর্কের মাঝে রূপালী জমি কেনার কথা বলে মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নেন ওই ব্যবসায়ীর কাছ থেকে। এছাড়া বিভিন্ন সময়ে বিকাশ অ্যাকাউন্টের মাধ্যমেও টাকা নেন রূপালি।
তিনি আরও জানান, গত ৩১ অক্টোবর রূপালীসহ পরিবারের সবাই মিলে ব্যবসায়ী আবুল কালামকে জয়পুরহাটে ডেকে নিয়ে আটক করেন। এরপর ১০ লাখ টাকা দাবি করা হয়। ব্যবসায়ীর মোবাইল ফোন দিয়ে কথা বলে তার পরিবারের সদস্যদের টাকা নিয়ে আসতে চাপও দেন প্রতারকরা।
তাতেও যখন টাকা পাননি তখন ব্যবসায়ীকে মারধর করে তা ভিডিও কলে দেখানো হয় পরিবারের সদস্যদের। এরপর বাধ্য হয়ে ব্যবসায়ীর পরিবারের লোকজন বিকাশ অ্যাকাউন্টে ১ লাখ ১০ হাজার টাকা পাঠান। সেই টাকা নিয়েও তারা ব্যবসায়ীকে ছেড়ে দেননি।আরও টাকার জন্য চাপ দেন। বাধ্য হয়ে ব্যবসায়ী আবুল কালামের পরিবারের লোকজন ওই ঘটনা লিখিতভাবে জানান পিবিআইকে। পুলিশ প্রযুক্তির সহায়তায় মঙ্গলবার রাতে আবুল কালামকে জয়পুরহাটের ক্ষেতলাল উপজেলা সদর থেকে উদ্ধার করে।
ওই ঘটনায় পুলিশ সদস্যরা প্রতারক চক্রের মূল হোতা রূপালী, তার স্বামী কামরুজ্জামান, ছোট ভাই শাহারুল ইসলাম রাজু, ছোট বোন সুরাইয়া খাতুন ও ফুফু আজেদা বেগমকে জয়পুরহাট বাসস্ট্যান্ড এলাকার একটি ভাড়া বাসা থেকে গ্রেপ্তার করে। এ পর্যন্ত রূপালী ওই ব্যবসায়ীর কাছ থেকে প্রায় ৩৬ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন বলে জানান ওই পুলিশ কর্মকর্তা। তাদের বিরুদ্ধে সাপাহার থানায় মামলাও হয়েছে। আদালতের কাছে রূপালীর রিমান্ড চাওয়া হবে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।