আন্তর্জাতিক ডেস্ক : বিনা আমন্ত্রণেই কাতারে বিশ্বকাপ ফুটবল দেখতে গিয়েছেন ইসলামি ধর্মগুরু জ়াকির নায়েক। বুধবার ভারতকে আশ্বস্ত করে এমনই দাবি করল আয়োজক দেশ কাতার। কূটনৈতিক মাধ্যমে কাতারের তরফে ভারতকে স্পষ্ট ভাবে জানিয়ে দেওয়া হয়, সরকারি ভাবে জাকিরকে আমন্ত্রণ জানায়নি কাতার প্রশাসন। তিনি নিজের উদ্যোগেই কাতারে এসেছেন।
কাতারের রাজধানী দোহায় জাকিরের উপস্থিতির কথা জানতে পেরেই এ বিষয়ে উষ্মাপ্রকাশ করে ভারত। ভারতের তরফে কাতারকে জানিয়ে দেওয়া হয় যে, জ়াকির যদি সরকারি ভাবে আমন্ত্রণ পেয়ে থাকেন, তবে ভারতও তার প্রতিনিধিকে বিশ্বকাপের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে পাঠাবে না। প্রসঙ্গত, ভারতের প্রতিনিধি হিসাবে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন উপরাষ্ট্রপতি জগদীপ ধনখড়। তবে কাতার সফর কাটছাঁট করে তার পরদিনই দেশে ফিরে আসেন তিনি।
বিশ্বকাপ শুরুর আগেই কাতারের সরকারি খেলার চ্যানেলের একজন উপস্থাপক টুইট করে লেখেন, “ধর্মগুরু জ়াকির নায়েক কাতারে পৌঁছে গিয়েছেন। বিশ্বকাপ ফুটবল চলাকালীন তিনি একাধিক সভায় ধর্ম নিয়ে বক্তৃতা করবেন।”
প্রসঙ্গত, ভারতে বিপুল পরিমাণ আর্থিক তছরুপ এবং ঘৃণা ভাষণ দেওয়ার কারণে অভিযুক্ত জ়াকির। তদন্তকারী সংস্থা ইডি এবং এনআইএ-র খাতায় ‘ওয়ান্টেড’ তালিকায় নাম রয়েছে তাঁর। ১৯৯০ নাগাদ প্রথম শিরোনামে আসেন জ়াকির। ২০০০ সাল নাগাদ তাঁর মুম্বইস্থিত ‘ইসলামিক রিসার্চ ফাউন্ডেশন’ (আইআরএফ) এর মাধ্যমে তাঁর ভাষণ ছড়িয়ে পড়তে থাকে। ভক্তের সংখ্যা বাড়ে লক্ষণীয় ভাবে। ধর্ম সংক্রান্ত বিভিন্ন বক্তৃতায় অন্য সম্প্রদায়ের প্রতি বিদ্বেষ ছড়ানোর অভিযোগ উঠতে থাকে তাঁর বিরুদ্ধে। ২০১৬-য় জ়াকিরের সংগঠন আইআরএফকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করে ভারত। জ়াকিরের বিরুদ্ধে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি লঙ্ঘনের অভিযোগ ওঠে। ইতিমধ্যেই দেশ ছাড়েন তিনি। ২০১৭ থেকেই মালয়েশিয়ায় রয়েছেন তিনি। আর্থিক তছরুপের মামলায় ভারত তাঁকে পলাতক ঘোষণা করে।
এর পর মালয়েশিয়ার নাগরিকত্ব গ্রহণ করেন জ়াকির। কিন্তু ২০২০-তে জাতীয় সুরক্ষা ও নিরাপত্তার কারণে জ়াকিরের বক্তৃতা নিষিদ্ধ করে মালয়েশিয়াও। ২০১৬-এর জুলাইয়ে জ়াকিরের পাসপোর্ট বাতিল ঘোষণা করে ভারত। সেই সময় জ়াকির দাবি করেছিলেন, তিনি অনাবাসী ভারতীয়। মূলত অন্য ধর্মবিশ্বাসীদের প্রতি অনুগামীদের চরমপন্থা অবলম্বনে সহায়ক হত জ়াকিরের ভাষণ। সেই জ়াকিরই বিশ্বকাপ শুরুর আগে পৌঁছে গেলেন কাতার।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।