আন্তর্জাতিক ডেস্ক : মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন স্মার্টফোন, কম্পিউটার এবং আরও কিছু ইলেকট্রনিক ডিভাইসকে ‘পারস্পরিক’ শুল্ক থেকে অব্যাহতি দিয়েছে। এর মধ্য চীন থেকে আমদানি করা ইলেকট্রনিক পণ্যও রয়েছে। শুক্রবার (১১ এপ্রিল) রাতে যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় সংস্থা কাস্টমস অ্যান্ড বর্ডার পেট্রল এক বিজ্ঞপ্তিতে এমন ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি এ খবর জানিয়েছে।
এই পদক্ষেপটি এমন এক সময়ে এসেছে, যখন মার্কিন প্রযুক্তি কোম্পানিগুলো আশঙ্কা প্রকাশ করছিল যে, পণ্যের দাম ব্যাপকভাবে বেড়ে যেতে পারে। কারণ অনেক ডিভাইসই চীনে তৈরি হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে,বিশ্বের অধি কাংশ দেশের ওপর ট্রাম্পের আরোপিত ১০ শতাংশ শুল্ক ইলেকট্রনিক পণ্যে কার্যকর করা হবে না। চীন থেকে আমদানি করা পণ্যে যে উচ্চ শুল্ক আরোপ করা হয়েছে, তা–ও ইলেকট্রনিক পণ্যের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে না।
চীনের ওপর ট্রাম্পের আরোপিত শুল্কের মধ্যে এটিই প্রথম বড় ধরণের ছাড়। এক বিশ্লেষক একে ‘গেম-চেঞ্জার’ পরিস্থিতি বলে অভিহিত করেছেন।
এই অব্যাহতির মধ্যে আরও কিছু ইলেকট্রনিক ডিভাইস ও যন্ত্রাংশও রয়েছে। যেমন: সেমিকন্ডাক্টর, সোলার সেল ও মেমোরি কার্ড।
মার্কিন বিনিয়োগ প্রতিষ্ঠান ওয়েডবুশ সিকিউরিটিজের বাল টেকনোলজি রিসার্চ প্রধান ড্যান আইভস সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে দেওয়া এক পোস্টে বলেছেন, এটা প্রযুক্তি বিনিয়োগকারীদের জন্য স্বপ্নের মতো একটি পরিস্থিতি। স্মার্টফোন ও চিপ বাদ পড়া মানে চীনের শুল্কে এক বিশাল পরিবর্তন।
অ্যাপল, এনভিডিয়া, মাইক্রোসফট ও পুরো প্রযুক্তি খাত এই সপ্তাহের শেষে এসে অনেকটাই স্বস্তির নিঃশ্বাস নিতে পারবে বলেও তিনি মন্তব্য করেন।
হোয়াইট হাউজ জানিয়েছে, এই অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে যেন কোম্পানিগুলো তাদের উৎপাদন দ্রুত যুক্তরাষ্ট্রে স্থানান্তর করতে পারে।
হোয়াইট হাউজের প্রেস সেক্রেটারি ক্যারোলিন লেভিট বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র চীনের ওপর নির্ভর করে গুরুত্বপূর্ণ প্রযুক্তি যেমন: সেমিকন্ডাক্টর, চিপ, স্মার্টফোন ও ল্যাপটপ উৎপাদন করতে পারবে না।
‘প্রেসিডেন্টের নির্দেশে এসব কোম্পানি এখন দ্রুত তাদের উৎপাদন যুক্তরাষ্ট্রে নিয়ে আসার চেষ্টা করছে।’
যুক্তরাষ্ট্র আইফোনের একটি বড় বাজার। কাউন্টারপয়েন্ট রিসার্চের তথ্য অনুযায়ী, গত বছর অ্যাপলের মোট স্মার্টফোন বিক্রির অর্ধেকের বেশি বিক্রি হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রে। যুক্তরাষ্ট্রে বিক্রির জন্য অ্যাপলের যেসব আইফোন তৈরি করা হয়, সেগুলোর প্রায় ৮০ শতাংশ প্রস্তুত করা হয় চীনে। বাকি ২০ শতাংশ তৈরি করা হয় ভারতে।
স্যামসাং-এর মতো অ্যাপলও সাম্প্রতিক বছরগুলোতে চীনের উপর নির্ভরতা কমাতে নিজেদের সরবরাহে বৈচিত্র্য আনার চেষ্টা করছে। এদিকে চীনের পর ভারত ও ভিয়েতনাম ধীরে ধীরে আন্তর্জাতিক ম্যানুফ্যাকচারিং কেন্দ্রে পরিণত হচ্ছে।
শুল্ক কার্যকর হওয়ার সাথে সাথে, অ্যাপল ভারত-উৎপাদিত ডিভাইসের উৎপাদন দ্রুত বাড়ানোর চেষ্টা করছে বলে জানা গেছে।
ট্রাম্প সারা বিশ্বের বহু দেশের ওপর উচ্চ হারে শুল্ক আরোপের পরিকল্পনা করেছিলেন যা ৯ এপ্রিল থেকে কার্যকর হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু ওইদিনই চীন ছাড়া বাকী দেশগুলোর ওপর উচ্চ শুল্ক আরোপ ৯০ দিনের জন্য স্থগিতের ঘোষণা দেন ট্রাম্প। তবে চীনের ওপর শুল্ক বাড়িয়ে ১৪৫ শতাংশ করা হয়।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।