জুলাই আন্দোলন ঘিরে ২০২৪ সালের ২৮ জুলাই পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের (ডিবি) কার্যালয় থেকে জোর করে আদায় করা ভিডিও বার্তায় ছাত্র আন্দোলনের সব ধরনের কর্মসূচি প্রত্যাহারের ঘোষণা দিতে বাধ্য করা হয়েছিল নাহিদ ইসলামকে। সমন্বয়কদের কাছ থেকে জোর করে আন্দোলন প্রত্যাহারের বিবৃতি আদায় করা হয়েছে বলে অভিযোগ তুলে পরদিন সারা দেশে বিক্ষোভ কর্মসূচি ঘোষণা করেন মুক্ত থাকা কয়েকজন সমন্বয়ক। জুলাইয়ের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ এই দিনে আসলে কী ঘটেছিল?
এক এক করে ৫ সমন্বয়কের পর গত বছরের ২৮ জুলাই ভোরে আরেক সমন্বয়ক নুসরাত তাবাসসুমকেও ডিবি কার্যালয়ে নেয়া হয়। সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়, নিরাপত্তা দিতেই তাদের গোয়েন্দা হেফাজতে রাখা হয়েছে।
রাতে ডিবি হেফাজতে থেকেই ভিডিও বার্তা দেন আন্দোলনের ৬ সমন্বয়ক। ভিডিওতে আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক নাহিদ ইসলামকে লিখিত বক্তব্য পাঠ করতে দেখা যায়, যেখানে কোটা সংস্কারের দাবি পূরণ হওয়ায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সব ধরনের কর্মসূচি প্রত্যাহারের ঘোষণা দেন তিনি।
ভিডিও বার্তা আসার কিছুক্ষণ আগে ঢাকা মহানগর পুলিশের তৎকালীন অতিরিক্ত কমিশনার হারুন অর রশীদ সমন্বয়য়কদের সঙ্গে এক টেবিলে খাওয়ার ছবি ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে জানান, শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে নেয়া পরিকল্পনায় উদ্বেগমুক্ত হয়েছেন সমন্বয়করা।
এদিকে সমন্বয়কদের জিম্মি করে এমন বক্তব্য দেয়ানো হয়েছে বলে জানান মুক্ত থাকা তিন সমন্বয়ক। সেইসঙ্গে ‘সমন্বয়কদের কাছ থেকে জোর করে আন্দোলন প্রত্যাহারের বিবৃতি আদায়, সারা দেশে বিনা বিচারে হত্যা, গুম-খুন, মিথ্যা মামলা ও গণগ্রেফতারের প্রতিবাদে’ পরদিন সারা দেশে বিক্ষোভ কর্মসূচি ঘোষণা করেন তারা।
ঢাকার আট স্থানে বিক্ষোভ কর্মসূচি ঘোষণা দেয়া হয়। সেগুলো হলো: সায়েন্স ল্যাব, নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ৮ নম্বর গেট, জাতীয় প্রেসক্লাব, উত্তরার বিএনএস সেন্টার, মিরপুর-১০, মিরপুরের ইসিবি চত্বর, রামপুরা ও মহাখালী।
আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক (বর্তমানে) এনসিপি নেতা সারজিস আলম বলেন, আমাদেরককে বাধ্যতামূলকভাবে আন্দোলন প্রত্যাহারের স্ক্রিপ্ট পড়ানো হয়। তখন আমরা ভেবেছিলাম, আগে বের হই। তারপর সবাইকে সংগঠিত করে আবার রাজপথে নামতে হবে।
এদিন আন্দোলন ঘিরে সহিংসতায় ১৪৭ মৃত্যুর তথ্য দেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, যা সঠিক নয় বলেও জানান শিক্ষার্থীরা। গণমাধ্যমের হিসাবে এই সংখ্যা ছিল দুই শতাধিক।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।