স্যামসাংয়ের ক্যামেরা বিভাগের প্রধান কর্মকর্তাদের অপসারণের দাবিতে একটি অনলাইন পিটিশন ভাইরাল হয়েছে। দক্ষিণ কোরিয়ার এই প্রযুক্তি দানবের মোবাইল ইউনিটে এই ঘটনা বড় ধরনের আলোড়ন সৃষ্টি করতে পারে। স্যামসাংয়ের রক্ষণশীল কর্পোরেট সংস্কৃতিতে এমন প্রকাশ্য বিরোধিতা একেবারেই অস্বাভাবিক।
পিটিশনটি ইতিমধ্যেই চার হাজারেরও বেশি স্বাক্ষর সংগ্রহ করেছে। এটি তৈরি করেছেন প্রভাবশালী টিপস্টার ইউনিভার্স আইস। তিনি স্যামসাংয়ের ক্যামেরা কার্যক্রম নিয়ে আটটি সুনির্দিষ্ট অভিযোগ ও দাবি উত্থাপন করেছেন। এই দাবিগুলো ব্যবহারকারীদের দীর্ঘদিনের ক্ষোভের প্রতিফলন।
স্যামসাং ক্যামেরার বিরুদ্ধে উত্থাপিত প্রধান অভিযোগগুলো
পিটিশনে স্যামসাংয়ের গ্যালাক্সি এস সিরিজের স্মার্টফোনগুলোর ক্যামেরায় স্থবিরতা ও উন্নয়নহীনতার কথা বলা হয়েছে। অভিযোগ রয়েছে, কোম্পানি পুরনো আইএসওসেল এইচপি২ এবং আইএমএক্স৭৫৪ সেন্সর ব্যবহার করছে। এতে ইমেজিং ক্ষমতায় কোনও উল্লেখযোগ্য উন্নতি হচ্ছে না।
ছবির মান নিয়েও রয়েছে বহু অভিযোগ। অতিরিক্ট শ্যাডো নয়েজ, এইচডিআর-এ ডিটেইল নষ্ট হওয়া, আনন্যাচারাল টেলিফোটো প্রসেসিং এবং দুর্বল নাইট ফটোগ্রাফির কথা উল্লেখ করা হয়েছে। এছাড়া, খারাপ পোর্ট্রেট কোয়ালিটি এবং ভুল হোয়াইট ব্যালেন্সের সমস্যাও ব্যবহারকারীরা দেখছেন।
অ্যাপলের অন্ধ অনুকরণ এবং ব্যবহারকারী উপেক্ষার অভিযোগ
স্যামসাং ব্যবহারকারীদের ফিডব্যাক সম্পূর্ণ উপেক্ষা করছে বলেও অভিযোগ করা হয়েছে। পিটিশনে দাবি করা হয়েছে, স্যামসাং অ্যাপলের ক্যামেরা অ্যারে অন্ধভাবে কপি করছে। কোম্পানির নিজস্ব কোনও আলাদা বৈশিষ্ট্য বা ব্যবহারকারীর চাহিদার বিষয়টি তারা বিবেচনা করছে না।
সফটওয়্যারের দিক দিয়েও অ্যাপলের ‘ন্যাচারাল টোন’ ছবির নকল করছে স্যামসাং। কিন্তু এই অনুকরণ অপরিশোধিত হওয়ায় সামগ্রিক ছবি নিস্তেজ ও প্রাণহীন দেখাচ্ছে। এশিয়ান এবং ককেশিয়ান স্কিন টোনে স্যামসাং ক্যামেরা ‘ইয়েলো-ব্ল্যাক’ হিউ যুক্ত করছে বলে অভিযোগ।
এআই উদ্ভাবন প্রত্যাখ্যান এবং ধীরগতির আপডেট
পিটিশনে স্যামসাংয়ের এআই অ্যালগরিদম প্রয়োগে অসামঞ্জস্যতার কথাও বলা হয়েছে। বিশেষ করে খারাপ আলোতে টেলিফোটো পারফরম্যান্স খুবই দুর্বল হচ্ছে। গুগলের এইচডিআর+ বা হুয়াওয়ের এক্সএমএজিই ইঞ্জিনের মতো প্রতিশ্রুতিশীল এআই টেকনোলজি গ্রহণ করতে স্যামসাং রাজি নয়।
ক্যামেরা অ্যালগরিদম আপডেট也非常 ধীর গতির এবং কম হয়। পুরনো মডেলগুলো প্রায়ই দেরিতে অথবা অপ্টিমাইজেশন ছাড়াই রয়ে যাচ্ছে। উদাহরণ হিসেবে, গ্যালাক্সি এস২৩ এবং এস২৪ স্মার্টফোনে এখনও এস২৫-তে আনা উন্নতিগুলো 적용 হয়নি।
স্যামসাংয়ের প্রযুক্তিগত সক্ষমতা সত্ত্বেও কেন এই অবনতি?
মজার বিষয় হলো, স্যামসাংয়ের কারিগরি সক্ষমতার কোনও ঘাটতি নেই। তারা বিভিন্ন চাইনিজ ব্র্যান্ডের জন্য অত্যাধুনিক ক্যামেরা সেন্সর তৈরি করে। সমস্যাটির মূল কারণ হলো স্মার্টফোন ফটোগ্রাফির প্রতি কোম্পানির অগোছালো এবং স্থবির দৃষ্টিভঙ্গি।
স্যামসাং ক্যামেরা বিভাগের রক্ষণশীলতা এবং আপসমন্বিত নীতিই ব্র্যান্ডের প্রভাব কমিয়ে দিচ্ছে। **স্যামসাং ক্যামেরা স্ক্যান্ডাল** এবং ব্যবহারকারীদের এই বিদ্রোহ কোম্পানির জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। ভবিষ্যৎ পদক্ষেপই নির্ধারণ করবে তারা এই আস্থা সংকট কাটিয়ে উঠতে পারে কিনা।
জেনে রাখুন-
Q1: স্যামসাং ক্যামেরা পিটিশন কি?
স্যামসাংয়ের ক্যামেরা বিভাগের দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তাদের অপসারণের দাবিতে তৈরি একটি অনলাইন আবেদন, যা ভাইরাল হয়ে উঠেছে।
Q2: স্যামসাং ক্যামেরার প্রধান সমস্যা কী?
ছবির মানের স্থবিরতা, অ্যাপলের অন্ধ অনুকরণ, স্কিন টোন প্রসেসিং বায়াস এবং ধীরগতির সফটওয়্যার আপডেটকে প্রধান সমস্যা হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।
Q3: পিটিশনে কত স্বাক্ষর জমা পড়েছে?
প্রকাশনার সময় পর্যন্ত পিটিশনটিতে চার হাজারেরও বেশি স্বাক্ষর সংগ্রহ হয়েছে বলে জানা গেছে।
Q4: স্যামসাং কোন ক্যামেরা সেন্সর ব্যবহার করছে?
গ্যালাক্সি এস সিরিজে আইএসওসেল HP2 এবং IMX754-এর মতো পুরনো সেন্সর ব্যবহার করছে বলে অভিযোগ।
Q5: ইউনিভার্স আইস কে?
তিনি একজন প্রভাবশালী টেক টিপস্টার, যিনি স্যামসাং ক্যামেরা ইস্যুটি তুলে ধরে এই পিটিশন শুরু করেন।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।