জুমবাংলা ডেস্ক : দেশের বাজারে হঠাৎ করেই বাড়তে শুরু করেছে মুরগির দাম। ব্যবসায়ীরা বলছেন, থার্টি ফার্স্ট নাইট ও নির্বাচনকে কেন্দ্র করে দাম বাড়ছে। তবে বাংলাদেশ পোলট্রি অ্যাসোসিয়েশনের (বিপিএ) মতে, থার্টি ফার্স্ট নাইটই কারণ হতে পারে; নির্বাচনের জন্য দাম বাড়ার কোনো যুক্তি নেই।
শুক্রবার (২৯ ডিসেম্বর) বসুন্ধরা ও আগানগর এবং রাজধানীর কারওয়ান বাজারসহ বেশ কটি বাজার ঘুরে প্রায় একই চিত্র দেখা যায়।
দেশে চলছে নির্বাচনী হাওয়া। পাশপাশি বেড়ে গেছে বিয়েসহ নানান সামাজিক অনুষ্ঠান। এতে মুরগির চাহিদা বাড়লেও পর্যাপ্ত সরবরাহ না হওয়ার অজুহাতে রাজধানীর বাজারগুলোতে বেড়ে গেছে সব ধরনের মুরগির দাম। সপ্তাহ ব্যবধানে প্রতি কেজিতে ব্রয়লার মুরগির দাম বেড়েছে ১০ থেকে ২০ টাকা এবং সোনালি মুরগি ২০ থেকে ৩০ টাকা পর্যন্ত।
দেখা যায়, প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি ২০০ থেকে ২১০ টাকা, সোনালি মুরগি ৩১০ থেকে ৩৪০ টাকা, দেশি মুরগি ৫০০ থেকে ৫৮০ টাকা ও লাল লেয়ার বিক্রি হচ্ছে ২৬০ থেকে ২৮০ টাকায়। আর প্রতি কেজি হাঁস বিক্রি হচ্ছে ৪৫০ থেকে ৫৫০ টাকায়।
ব্যবসায়ীরা জানান, নির্বাচনকে কেন্দ্র করে এখন সারা দেশেই নানা অনুষ্ঠানের আয়োজন হচ্ছে। পাশাপাশি বিয়ের অনুষ্ঠান ও আসন্ন থার্টি ফার্স্ট নাইটকে কেন্দ্র করে মুরগির চাহিদা বেজায় বেড়ে গেছে। ফলে দামও কিছুটা বেড়েছে।
রাজধানীর কারওয়ান বাজারের মুরগি ব্যবসায়ী লিয়াকত আলী বলেন, থার্টি ফার্স্ট নাইট ও নির্বাচনকে কেন্দ্র করে মুরগির দাম ১০ থেকে ৩০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। তবে এটা সাময়িক। নির্বাচনী হাওয়া কমে গেলে দাম আবার কমতে শুরু করবে।
বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার বাজারের লতিফ মিয়া বলেন, শীতে মুরগির বাচ্চা মরে যাচ্ছে। পাশাপাশি বেড়ে গেছে মুরগির খাবারের দামও। এছাড়া থার্টি ফার্স্ট নাইট ও নির্বাচনের কারণে পাইকারি বাজারে বেড়ে গেছে মুরগির দাম; যার প্রভাব পড়েছে খুচরা বাজারেও।
এদিকে, নতুন করে মুরগির দাম বেড়ে যাওয়ায় অস্বস্তিতে পড়েছেন সাধারণ ক্রেতারা। তাদের দাবি, সরবারাহ সংকটের অজুহাত দিয়ে দাম বাড়াচ্ছেন ব্যবসায়ীরা। এদের সিন্ডিকেট না ভাঙ্গতে পারলে আবারও অস্থিতিশীল হয়ে পড়বে মুরগির বাজার।
পোলট্রি খাবারের বাড়তি দাম আর নির্বাচনের অজুহাত দিয়ে একটি মহল আবারও মুরগির বাজার অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করছে বলে জানিয়েছেন বিপিএ সভাপতি সুমন হাওলাদার। তিনি বলেন, বাজারে পোলট্রি খাবারের দাম আবার বাড়তে শুরু করেছে। খাবারের দাম বাড়লে খামারিদের মুরগি উৎপাদনের খরচও বেড়ে যায়। বাড়তি এ খরচ গিয়ে পড়ে ক্রেতাদের ওপর।
থার্টি ফার্স্ট নাইটের কারণে মুরগির চাহিদা বাড়লেও নির্বাচনের কারণে বাড়ার কোনো কারণ নেই বলে উল্লেখ করেন সুমন। তিনি বলেন, নির্বাচনকে কেন্দ্র করে মুরগির চাহিদা ও দাম বাড়ছে, এটা একটা মিথ্যে অজুহাত। নির্বাচনী সভাগুলোতে গরু ও খাসির চাহিদা বেশি থাকে; মুরগির নয়।
আর খাবারের দাম বাড়ায় প্রান্তিক খামারিদের ওপরও চাপ বাড়বে জানিয়ে বিপিএ সভাপতি বলেন, অনেক খামারি হয়তো উৎপাদন ছেড়ে দেবেন। তখন করপোরেট প্রতিষ্ঠানগুলো তাদের কন্ট্রাক্ট ফার্মিংয়ে যুক্ত করবে। চুক্তি অনুযায়ী ডিম-মুরগির দাম নির্ধারণেও তখন খামারিদের কোনো ভূমিকা থাকবে না।
এতে খামারি-ভোক্তা সবাই করপোরেট প্রতিষ্ঠানগুলোর কাছে জিম্মি হয়ে পড়বে বলেও মনে করেন সুমন হাওলাদার। তিনি বলেন, খাবারের দাম বাড়ায় সাময়িকভাবে কমপক্ষে ২০ হাজার প্রান্তিক খামার বন্ধ হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। সে ক্ষেত্রে বাজারে আরও বাড়বে ডিম-মুরগির দাম।
বাজার নিয়ন্ত্রণে সরকার চেষ্টা করছে জানিয়ে সুমন আরও বলেন, নিয়মিত বাজারে অভিযান পরিচালনা করতে হবে। বাজার সিন্ডিকেট ভাঙতে হবে। পাশাপাশি ডিম-মুরগিতেও ভর্তুকি দিতে পারে সরকার
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।