জুমবাংলা ডেস্ক: গোপালগঞ্জে বোরো মৌসুমে রেকর্ড পরিমাণ জমিতে হাইব্রিড ধানের চাষ হয়েছে। ফলনও হয়েছে বাম্পার। এতে লাভবান হয়ে চওড়া হাসি ফুটেছে কৃষকের মুখে।
গোপালগঞ্জের মতো সব জেলায় হাইব্রিড ধানের আবাদ বাড়ানো গেলে দেশের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করা সম্ভব হবে বলে মনে করছেন জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা।
গোপালগঞ্জ শহরের পাশরে রঘুনাথপুর গ্রামের শ্রীবাস বাইন বলেন, ‘হাইব্রিড ধান মূলত দুই ধরনের। মোটা ও চিকন। কতকগুলো চিকন সুগন্ধিযুক্ত। এ গুলোর দাম বেশি। হাইব্রিড ধান খেতে ইনব্রিড ধনের মতো সুস্বাদু ও পুষ্টিগুণ সম্পন্ন। হাইব্রিড ধান চাষ করে আমরা নিজেরা খাই। অতিরিক্ত ধান বিক্রি করে লাভবান হই।’
কোটালীপাড়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা নিটুল রায় বলেন, গোপালগঞ্জের নিচু জমিতে জল থাকতেই ধান লাগানো হয়।খালের পানিতে লো-লিফট পাম্প দ্বারা অথবা জোয়ারের পানিতে সেচ দেওয়া হয়। এ ছাড়াও গভীর ও অগভীর নলকূপ দিয়েও সেচ দেওয়া হয়। জৈব পদার্থ সমৃদ্ধ গোপালগঞ্জের বিলের মাটিতে হাইব্রিড ধান বাম্পার ফলন দেয়।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, গোপালগঞ্জ নিম্ন-সমভূমি ও বিল-অধ্যুষিত জেলা। এ জেলায় নদীর তীরবর্তী চরাঞ্চল, উঁচু ও মাঝারি উঁচু জমি আছে। বর্ষাকালে এখানকার অধিকাংশ জমি পানিতে ডুবে যায়। চাষিরা এ সময়ে উঁচু ও মাঝারি উঁচু জমিতে এবং ঘেরের পাড়ে ফসল চাষ করেন। শীতকালে প্রায় সব জমি চাষের আওতায় আসে। এ জেলায় ১ লাখ ৪৬ হাজার ৮০০ হেক্টর জমি রয়েছে । এর মধ্যে চাষযোগ্য জমি ১ লাখ ১৮ হাজার ৪৪০ হেক্টর। বোরো ধান এ জেলার প্রধান ফসল। এখানকার প্রায় ৮০ হাজার হেক্টর জমিতে বোরো ধানের চাষ হয়। এর মধ্যে প্রায় ৫৮ হাজার হেক্টর জমিতে হাইব্রিড ধানের আবাদ হয়। সারা দেশে যেখানে বোরো ধানের শতকরা ২৫ ভাগ হাইব্রিড, সেখানে গোপালগঞ্জে এ হার শতকরা ৭২ ভাগ।
সদর উপজেলার বৌলতলী গ্রামের চাষি রইচ উকিল বলেন, ‘হাইব্রিড ধানের ফলন ভালো। তাই আমরা এ ধান চাষে বেশি আগ্রহী। এ ধান চাষে কৃষি বিভাগের কর্মীরা আমাদের প্রযুক্তিগত পরামর্শ দেন। প্রণোদনার মাধ্যমে বীজ দিয়ে সহায়তা করেন। এ ছাড়া তারা বীজ ও সার আমাদের হাতের নাগালে সহজলভ্য করে দেন। প্রতি শতক জমিতে হাইব্রিড ধান এক মণ ফলে । অন্যান্য ধানের তুলনায় হাইব্রিড ধানের ফলন বেশি বলেই আমরা এ ধান ফলাতে উৎসাহ বোধ করি ।আমাদের দেখাদেখি প্রতিবেশি কৃষকেরাও প্রতি বছর হাইব্রিড ধানের আবাদ বাড়াচ্ছেন।’
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক অরবিন্দ কুমার রায় বলেন, গত মৌসুমে গোপালগঞ্জ জেলার ৮০ হাজার ৫২০ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের আবাদ হয়। মোট ধান উৎপাদন হয়েছে ৩ লাখ ৮৬ হাজার ২২০ মেট্রিকটন। এ জেলায় প্রতিবছর হাইব্রিড ধানের চাষ বাড়ছে, উৎপাদনও বৃদ্ধি পাচ্ছে। সারা দেশে হাইব্রিড ধানের চাষ বাড়লে কৃষি উৎপাদনের যুগান্তকারী ইতিবাচক পরিবর্তন আসবে। খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত হবে। বাংলাদেশ চাল উৎপাদনে চীনের মতো কুশলতা দেখাবে। বিশ্বে চাল উৎপাদনকারী দেশ হিসেবে বাংলাদেশ সম্মানিত হবে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।