নাইজেরিয়ার নাইজার রাজ্যে ফের ঘটল ভয়াবহ গণ-অপহরণ। এক সপ্তাহের ব্যবধানে দ্বিতীয় দফায় স্কুলে হামলা চালিয়ে ২২৭ শিক্ষার্থী ও শিক্ষককে তুলে নিয়ে গেছে সশস্ত্র হামলাকারীরা। এর আগে একই সপ্তাহে আরও ২৫ ছাত্রীকে অপহরণ করা হয়েছিল, যা দেশজুড়ে উদ্বেগ বাড়িয়েছে।
নাইজেরিয়ার নাইজার রাজ্যে আবারও ঘটল বড় ধরনের গণ-অপহরণ। এক সপ্তাহের ব্যবধানে দ্বিতীয়বারের মতো একটি স্কুলে হামলা চালিয়ে মোট ২২৭ শিক্ষার্থী ও শিক্ষককে অপহরণ করেছে সশস্ত্র দুর্বৃত্তরা। দেশটির ক্রমবর্ধমান নিরাপত্তাহীনতার প্রেক্ষাপটে এই ঘটনা নতুন করে আতঙ্ক সৃষ্টি করেছে।
শনিবার (২২ নভেম্বর) ডেইলি সাবাহর এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
দেশটির ক্রিশ্চিয়ান অ্যাসোসিয়েশন অব নাইজেরিয়া (CAN) জানিয়েছে, নাইজার রাজ্যের পাপিরি কমিউনিটির স্টে. মেরিজ নামে একটি ক্যাথলিক স্কুলে ভোররাতে হামলা চালায় সশস্ত্র গোষ্ঠী। সেখান থেকে ২১৫ শিক্ষার্থী এবং ১২ শিক্ষককে জিম্মি করে নিয়ে যাওয়া হয়।
নাইজার রাজ্য শাখার মুখপাত্র ড্যানিয়েল আতোরি জানিয়েছেন, তিনি ঘটনাস্থলে গিয়ে আতঙ্কিত অভিভাবকদের সঙ্গে কথা বলেছেন এবং অপহৃতদের নিরাপদে ফিরিয়ে আনতে তাদের সংগঠন সক্রিয়ভাবে কাজ করছে।
পুলিশ জানায়, শুক্রবার ভোররাতেই এই হামলা চালানো হয়। ঘটনায় সেনা ও নিরাপত্তা বাহিনী দ্রুত ঘটনাস্থলে মোতায়েন করা হয়েছে। স্কুলটির পাশে অবস্থিত ৫০টির বেশি ভবনসমৃদ্ধ একটি প্রাইমারি স্কুলও নিরাপত্তা জোরদার করে ঘিরে রাখা হয়েছে।
অপহৃত শিক্ষার্থীদের বয়স ১২ থেকে ১৭ বছর বলে জানা গেছে।
এর মাত্র কয়েকদিন আগেই আলাদা আরেক ঘটনায় ২৫ ছাত্রীকে অপহরণ করা হয়েছিল। এক সপ্তাহে ধারাবাহিক দুটি বড় অপহরণ দেশটির অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা নিয়ে আরও প্রশ্ন তৈরি করেছে।
স্থানীয় বাসিন্দা দাউদা চেকুলা বলেন, তার ৭ থেকে ১০ বছর বয়সী চার নাতি-নাতনিও অপহৃতদের মধ্যে রয়েছে। কিছু শিশু পাশের বাড়িতে লুকিয়ে পালাতে সক্ষম হয়েছে। এ ছাড়া বাকিদের গভীর জঙ্গলের দিকে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
নাইজার রাজ্য সরকার এক বিবৃতিতে জানায়, এলাকায় হামলার আশঙ্কা নিয়ে আগেই গোয়েন্দা তথ্য ছিল। তবু অনুমতি ছাড়াই স্কুল খুলে দেওয়া হয়েছিল, যা ‘এড়ানো সম্ভব’ ঝুঁকি তৈরি করেছে। স্থানীয়রা জানিয়েছে, হামলার সময় শুধু কমিউনিটি স্বেচ্ছাসেবীরা পাহারায় ছিল।
কনটাগোরা ক্যাথলিক ডায়োসিস জানায়, হামলার সময় একজন নিরাপত্তা কর্মী গুরুতরভাবে গুলিবিদ্ধ হন।
শুক্রবারের গণঅপহরণের কয়েক দিন আগে কেব্বি রাজ্যের একটি স্কুল থেকে ২৫ ছাত্রীকে অপহরণ করা হয়। এর মধ্যে একজন পালাতে সক্ষম হয়েছে। একই সপ্তাহে কওয়ারা রাজ্যে একটি চার্চে হামলা চালিয়ে দুই উপাসককে হত্যা ও ৩৮ জনকে অপহরণ করে হামলাকারীরা। চার্চ কর্তৃপক্ষ জানায়, অপহৃতদের প্রত্যেকের জন্য ১০ কোটি নাইরা (প্রায় ৬৯ হাজার ডলার) মুক্তিপণ দাবি করা হয়েছে।
পরিস্থিতির কারণে নাইজেরিয়ার প্রেসিডেন্ট বোলা টিনুবু দক্ষিণ আফ্রিকায় জি–২০ সম্মেলনে যোগ দেওয়ার পরিকল্পনা বাতিল করেছেন। তার স্থলে দেশটির ভাইস প্রেসিডেন্ট কাশিম শেত্তিমা অংশ নেবেন। শেত্তিমা বলেন, সরকার অপহৃত ছাত্রীদের ফিরিয়ে আনতে ‘রাষ্ট্রের সব ধরনের শক্তি’ ব্যবহার করবে।
ডেইলি সাবাহ জানিয়েছে, এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত কোনো গোষ্ঠী হামলার দায় স্বীকার করেনি। ২০১৪ সালে বোকো হারামের হাতে চিবক স্কুলছাত্রী অপহরণের পর থেকে নাইজেরিয়ার বিভিন্ন রাজ্যে ১,৫০০–এর বেশি শিক্ষার্থী অপহৃত হয়েছে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।


