আন্তর্জাতিক ডেস্ক : অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকার ক্ষমতাসীনগোষ্ঠী হামাসের সাথে ইসরায়েলের বহুল প্রত্যাশিত যুদ্ধবিরতি দ্বিতীয় দিনে পৌঁছেছে শনিবার। কাতারের মধ্যস্থতায় এই যুদ্ধবিরতিতে হামাসের হাতে জিম্মি ইসরায়েলি ও বিদেশিদের মুক্তির বিনিময়ে ইসরায়েলের কারাগারে বন্দী ফিলিস্তিনিদের মুক্তি মিলছে।
সাময়িক যুদ্ধবিরতি চুক্তির প্রথম দিন শুক্রবার ২৪ জিম্মিকে মুক্তি দিয়েছে হামাস। শনিবার আরও ১৪ জিম্মিকে হামাস মুক্তি দেবে বলে জানিয়েছে ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ। জিম্মি মুক্তির বিনিময়ে শুক্রবার ৩৯ ফিলিস্তিনিকে ইসরায়েলি কারাগার থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। শনিবার আরও ৪২ ফিলিস্তিনি ইসরায়েলের কারাগার থেকে মুক্তি পাবেন বলে প্রত্যাশা করা হচ্ছে।
গত ৭ অক্টোবর যুদ্ধ শুরুর পর সর্বোচ্চ মানবিক সহায়তাবাহী ট্রাক অবরুদ্ধ গাজায় প্রবেশ করেছে শুক্রবার। মানবিক সহায়তা হিসেবে জ্বালানি, খাদ্য ও চিকিৎসা সামগ্রী নিয়ে গাজায় প্রবেশ করেছে এসব ট্রাক। ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) বলছে, শনিবার আরও ২০০টি ট্রাক গাজায় ঢুকবে বলে প্রত্যাশা করা হচ্ছে।
সিকিউরিটি স্টাডিজের অধ্যাপক পিটার আর. নিউম্যানের মতে, যুদ্ধবিরতির এই সময় হামাসের কমান্ডের মাঝে পুনরায় যোগাযোগ শুরু হবে। এর ফলে সামরিক রসদ সরবরাহ এবং যোদ্ধাদের স্থানান্তর করতে পারে গোষ্ঠীটি।
যুদ্ধবিরতি শেষে গাজা উপত্যকায় পরবর্তী ধাপের অভিযান পুনরায় শুরু করার বিষয়ে প্রস্তুতি নিচ্ছে ইসরায়েল। এই বিষয়ে বিবিসির পল অ্যাডামস বলেন, বেসামরিক নাগরিকদের জন্য কী ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া হবে সেই বিষয়ে কোনো চুক্তি না থাকায় গাজার দীর্ঘ যন্ত্রণা অব্যাহত থাকবে বলে মনে হচ্ছে।
এদিকে, ইসরায়েলের সাথে হামাসের চলমান চারদিনের যুদ্ধবিরতির মেয়াদ আরও বাড়তে পারে বলে জানিয়েছেন মিসর। শনিবার দেশটির স্টেট ইনফরমেশন সার্ভিসের (এসআইএস) প্রধান দিয়া রাশওয়ান বলেছেন, যুদ্ধের সব পক্ষের কাছ থেকে এ ব্যাপারে ইতিবাচক সংকেত পেয়েছেন তারা। যদি যুদ্ধবিরতির মেয়াদ বৃদ্ধি পায় তাহলে সেটি এক অথবা দু’দিন হতে পারে বলে জানিয়েছেন তিনি।
শনিবার এক বিবৃতিতে মিসরের এই কর্মকর্তা বলেছেন, যুদ্ধের সব পক্ষের সঙ্গে মিসর ব্যাপক আলোচনা চালাচ্ছে যেন— যুদ্ধবিরতির মেয়াদ এক অথবা দু’দিন বাড়ানো হয়। যার অর্থ যুদ্ধবিরতির মেয়াদ বাড়লে ‘‘গাজা থেকে আরও জিম্মি এবং ইসরায়েলি কারাগার থেকে আরও ফিলিস্তিনি মুক্তি পাবেন।’’
গত ৭ অক্টোবর হামাস ও ইসরায়েলের মধ্যে যুদ্ধ বাধে। দেড় মাসেরও বেশি সময় যুদ্ধ চলার পর দুই পক্ষ প্রথমবারের মতো চারদিনের যুদ্ধবিরতিতে রাজি হয়। এই যুদ্ধবিরতির কারণে যেমন বন্দিরা মুক্তি পাচ্ছেন; ঠিক একইসাথে স্বস্তি পাচ্ছেন গাজার সাধারণ মানুষ। কারণ এখন আর তাদের বোমা হামলার আতঙ্কের মধ্যে থাকতে হচ্ছে না।
মধ্যপ্রাচ্যের সব মুসলিম দেশসহ ইউরোপের কয়েকটি দেশ এখন হামাস ও ইসরায়েলের মধ্যে স্থায়ী যুদ্ধবিরতির দাবি জানিয়ে আসছে। তবে ইসরায়েল হুমকি দিয়েছে, অস্থায়ী এ যুদ্ধবিরতি শেষ হলে তারা আবারও গাজায় হামলা শুরু করবে।
সূত্র: বিবিসি, দ্য গার্ডিয়ান।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।