আমাদের দেশে হার্ট অ্যাটাক ক্রমবর্ধমানভাবে প্রচলিত একটি সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে, যা কেবল বয়স্কদেরই নয় বরং তরুণদেরও প্রভাবিত করছে। আমাদের দেশসহ বিশ্বব্যাপী হৃদরোগ ক্রমাগত প্রাণ কেড়ে নিচ্ছে। যে কারণে স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা হৃদরোগ-মুক্ত জীবনধারা বজায় রাখার গুরুত্বের ওপর জোর দিয়েছেন। চিকিৎসা বিজ্ঞানীরা আরও কার্যকর চিকিৎসা খুঁজে বের করার লক্ষ্যে কাজ করছেন, তবে প্রতিরোধ হৃদরোগের বিরুদ্ধে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রতিরক্ষা। প্রতিরোধের একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো একটি সুষম খাদ্য। রয়েছে আরও কিছু উপায়। চলুন জেনে নেওয়া যাক-
১. প্রক্রিয়াজাত এবং জাঙ্ক ফুড এড়িয়ে চলুন
প্রক্রিয়াজাত এবং জাঙ্ক ফুডের চেয়ে প্রাকৃতিক, সম্পূর্ণ খাবার বেছে নেওয়া গুরুত্বপূর্ণ। অস্বাস্থ্যকর চর্বি, চিনি এবং প্রিজারভেটিভ সমৃদ্ধ জাঙ্ক ফুড, প্রদাহ এবং উচ্চ কোলেস্টেরলের মাত্রা বৃদ্ধি করে, যা হৃদরোগের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ঝুঁকির কারণ। এ ধরনের খাবারের পরিবর্তে আপনার খাদ্যতালিকায় তাজা ফল, শাক-সবজি এবং গোটা শস্য রাখুন। এসব খাবার হৃদরোগের স্বাস্থ্যের জন্য প্রয়োজনীয় পুষ্টি সরবরাহ করবে এবং হৃদরোগের সমস্যাও কমাবে। উদ্ভিদ-ভিত্তিক ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার ক্ষতিকর কোলেস্টেরল কমাতে এবং রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে।
২. পর্যাপ্ত ঘুমকে অগ্রাধিকার দিন
সামগ্রিক স্বাস্থ্যের জন্য ঘুম সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলোর মধ্যে একটি, তবুও বেশিরভাগ ক্ষেত্রে তা উপেক্ষা করা হয়। বিশেষজ্ঞরা হৃদরোগের স্বাস্থ্য বজায় রাখার জন্য ঘুমের গুরুত্বের ওপর জোর দেন। ঘুমের সময় শরীর পুনরুদ্ধার প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যায়; যেমন ক্ষতিগ্রস্ত কোষ মেরামত, ডিটক্সিফাইং এবং স্ট্রেস হরমোন হ্রাস করা। অন্যদিকে, অপর্যাপ্ত ঘুম উচ্চ রক্তচাপ এবং হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়াতে পারে। প্রতি রাতে সাত থেকে আট ঘণ্টা ঘুমের লক্ষ্য রাখুন।
৩. মানসিক চাপ এবং আবেগ নিয়ন্ত্রণ করুন
দীর্ঘস্থায়ী স্ট্রেস এবং মানসিক চাপ হৃদরোগের মতো বিপর্যয় ডেকে আনতে পারে। এটি রক্তচাপ বৃদ্ধি এবং প্রদাহ সৃষ্টি করে। ব্যায়াম, ধ্যান এবং সৃজনশীল কাজের মাধ্যমে মানসিক চাপ করা যেতে পারে। শারীরিক কার্যকলাপ বা শখের মাধ্যমে আবেগ মোকাবিলা করুন।
৪. ভিটামিন বি১২ এর মাত্রা পর্যবেক্ষণ করুন
হার্ট অ্যাটাক প্রতিরোধের আরেকটি উপায় হলো সর্বোত্তম ভিটামিন বি১২ এর মাত্রা বজায় রাখা। ভিটামিন বি১২ এর অভাব হলে তা হোমোসিস্টিনকে বাড়িয়ে তুলতে পারে। হোমোসিস্টিন হলো একটি অ্যামাইনো অ্যাসিড যা উচ্চ মাত্রায় উপস্থিত থাকলে হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়ায়। ডিম, দুগ্ধজাত দ্রব্যের মতো খাবার থেকে পর্যাপ্ত ভিটামিন বি১২ গ্রহণ নিশ্চিত করুন।
৫. ওমেগা-৩ সমৃদ্ধ খাবার খান
ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড সমৃদ্ধ খাবার যেমন ফ্যাটি মাছ এবং কিছু বীজ হৃদরোগের স্বাস্থ্য বজায় রাখার জন্য অপরিহার্য। ওমেগা-৩ এর প্রদাহ-বিরোধী বৈশিষ্ট্য রয়েছে এবং রক্ত জমাট বাঁধা কমাতে সাহায্য করে, হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়। ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড ক্ষতিকর কোলেস্টেরলের মাত্রা কমাতে এবং ভালো কোলেস্টেরল বাড়াতেও অবদান রাখে। খাদ্যতালিকায় স্যামন, তিসির বীজ এবং আখরোটের মতো ওমেগা-৩ সমৃদ্ধ খাবার যোগ করুন।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।