জুমবাংলা ডেস্ক : মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জন্য কেনা পৌনে ৩ কোটি টাকার চেয়ার নিয়ে দুর্নীতি হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। সম্প্রতি দৈনিক বণিক বার্তার বরিশাল প্রতিনিধি এম. মিরাজ হোসাইনের একটি বিশেষ প্রতিবেদনে উঠে আসে, ২০১৫ সালে ২ কোটি ৭০ লাখ টাকা ব্যয়ে ১০টি ডেন্টাল চেয়ার সংযোজন করা হয় বরিশালের শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজ (শেবাচিম) হাসপাতালে। কিন্তু পাঁচ বছর না যেতেই চেয়ারগুলো অকেজো হয়ে পড়েছে। এ কারণে বন্ধ করে দেয়া হয়েছে হাসপাতালের ডেন্টাল ইউনিট। এতে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে সেবা নিতে আসা রোগীদের। পাশাপাশি অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে কলেজের শিক্ষার্থীদের হাতেকলমে পাঠদান নিয়ে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, বরিশাল বিভাগের প্রধান চিকিৎসাকেন্দ্র হিসেবে বিবেচনা করা হয় শেবাচিম হাসপাতালকে। এ হাসপাতালে প্রতিদিন শতাধিক রোগী দাঁতের চিকিৎসার জন্য আসেন। আর কলেজের ডেন্টাল ইউনিটে শিক্ষানবিশ চিকিৎসক মিলিয়ে শিক্ষার্থী রয়েছেন তিন শতাধিক। শিক্ষার্থীদের পাঠদান ও রোগীদের উন্নত সেবা দেয়ার জন্য ২০১৫ সালে এ হাসপাতালের জন্য ১০টি ডেন্টাল চেয়ার কেনা হয়। এতে ব্যয় হয় ২ কোটি ৭০ লাখ টাকা। তবে এরই মধ্যে সব চেয়ারই অকেজো হয়ে পড়েছে। আগে থেকেই অকেজো হয়ে আছে দুটি স্কেলিং চেয়ার এবং একটি ডেন্টাল এক্স-রে মেশিন। এ কারণে গত বুধবার এ হাসপাতালের ডেন্টাল ইউনিট বন্ধ ঘোষণা করে হাতে লেখা বিজ্ঞপ্তি টানিয়ে দেয়া হয়েছে।
হাসপাতালের ডেন্টাল বিভাগের রেজিস্ট্রার ডা. শাহরিয়ার বলেন, প্রতিদিন আউটডোর থেকে শতাধিক রোগীকে ইনডোর সেবার জন্য পাঠানো হয়। তাছাড়া শিক্ষার্থী রয়েছেন তিন শতাধিক। কিন্তু যন্ত্রপাতি বিকল থাকায় রোগীদের ইনডোর সেবা দেয়া যাচ্ছে না। আবার শিক্ষার্থীদের ক্লাসও নেয়া যাচ্ছে না।
নাম প্রকাশ না করা শর্তে ডেন্টাল ইউনিটসংশ্লিষ্ট এক ব্যক্তি বলেন, কেনার সময় থাইল্যান্ড থেকে চেয়ার কেনার চাহিদাপত্র দেয়া হলেও প্রকৃতপক্ষে কেনা হয় চীন থেকে। নতুন কেনা ১০টি ডেন্টাল চেয়ারের মধ্যে পাঁচটি শুরু থেকেই অকেজো ছিল। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ যাচাই-বাছাই না করেই চেয়ারগুলো বুঝে নেয়। নিম্নমানের হওয়ায় বাকিগুলো নিয়মিত বিকল হয়ে যেত। এ কারণে এতদিন জোড়াতালি দিয়ে চেয়ারগুলো ব্যবহার করা হতো। কিন্তু এখন সব চেয়ারই ব্যবহার অনুপযোগী হয়ে পড়েছে।
তিনি বলেন, দাঁতের চিকিৎসা এমনিতেই বেশ ব্যয়বহুল। এ কারণে দরিদ্র রোগীরা সরকারি এ হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসেন। কিন্তু শেবাচিমের ডেন্টাল ইউনিট বন্ধ থাকায় তাদের এখন বেসরকারি চিকিৎসা কেন্দ্রে যেতে হচ্ছে। তবে সবচেয়ে বড় সমস্যায় পড়েছে ডেন্টালের শিক্ষার্থীরা। ডেন্টাল ইউনিট বন্ধ থাকায় তাদের হাতেকলমে পাঠদান বন্ধ হয়ে গেছে। কবে নাগাদ আবার এ ইউনিট চালু হবে তা নিশ্চিত নয়।
রিয়াদ মাহমুদ নামের এক শিক্ষানবিশ চিকিৎসক বলেন, ডেন্টাল ইউনিট বন্ধ থাকায় আমাদের হাতেকলমে পাঠদান বলতে গেলে বন্ধ। দীর্ঘদিন ধরে এ অবস্থা চলতে থাকলেও প্রশাসন শুধু আশ্বাসই দিয়ে যাচ্ছে। কোনো ফলাফল দেখছি না। তাদের অবহেলার কারণে আমাদের ভবিষ্যৎ নষ্ট হচ্ছে।
পল্লব সরকার নামের আরেকজন বলেন, আমরা কর্তৃপক্ষের কাছে বারবার যন্ত্রপাতি মেরামত বা নতুন যন্ত্রপাতি সংযোজন করার জন্য দাবি জানিয়ে আসছি। আমাদের ইন্টার্নশিপের সময় শেষ হয়ে এলেও এ ব্যাপারে কোনো অগ্রগতি নেই।
এ ব্যাপারে হাসপাতাল পরিচালক ডা. বাকির হোসেন জানিয়েছেন, মন্ত্রণালয়কে লিখিতভাবে এ সমস্যা অবহিত করা হয়েছে। আশা করি দ্রুতই সমস্যার সমাধান হবে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।