জুমবাংলা ডেস্ক : আহত এক বৃদ্ধ হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন চিকিৎসার জন্য। তাকে ভর্তি করা হলেও কোনো বিছানা দেওয়া হয়নি। তাই তিনি ফ্লোরে থেকেই চিকিৎসা নিচ্ছিলেন। এমন পরিস্থিতিতে ওই রোগীকে হাসপাতাল থেকে বের করে দেন এক চিকিৎসক। এরপরও আহত বৃদ্ধ চিকিৎসার জন্য সেখানে থাকায় হাসপাতাল থেকে দেওয়া একটি চাদর ছিড়ে ফেলেন ওই চিকিৎসক। শুধু তাই নয়, ওই বৃদ্ধকে কোনো ধরনের চিকিৎসা না দেওয়ার ঘোষণা দেন তিনি।
সম্প্রতি ঘটনাটি ঘটেছে ভোলার লালমোহন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে। আহত বৃদ্ধকে চিকিৎসা না দিয়ে বের করে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে সেখানকার আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. মহসিন খানের বিরুদ্ধে।
ওই ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ায় ব্যাপক সমালোচনা শুরু হয়েছে। চিকিৎসকের এমন আচরণে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন অনেকেই।
ওই ভিডিওতে দেখা যায়, আহত বৃদ্ধের চাদরটি ছিড়ে ফেলছেন লালমোহন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার মহসিন খান। এ সময় তিনি ওই রোগীর উদ্দেশে বলেন, ‘তোরে এই চাদর কে দিছে? এই চাদর ছিড়ে টাঙায় রাখব। তুই কিসের অসুস্থ, তোকে দুই-তিনটা কি*ল-ঘু*ষি দিছে। আমি তো দুই বছর ধরে দেখতে আছি, শয়তানের বাচ্চা। এই রোগীগুলো আমার কষ্ট পায় তোদের জ্বালা-যন্ত্রণার জন্য। তুই সুস্থ রোগী, তুই ব্যথা পাইছস, ওষুধ নিবি। তোর চেয়ে বেশি অসুস্থ রোগী বাড়িতে গিয়ে চিকিৎসা নেয়। তুই ভর্তি হইছস বাব-দাদার বংশানুক্রমে মামলা করার জন্য, সার্টিফিকেট নেওয়ার জন্য। তোরে আমি আর চিকিৎসা দিমু না, তোরে সার্টিফিকেট দিমু না। তুই রোগী, তোরে কোনো কাগজ দিমু না। তোরে দিমু সাদা কাগজ। সাদা কাগজে তোরে চিকিৎসা দিমু। হাসপাতালের কোনো কাগজ তোরে দিমু না।’
এ সময় অন্য রোগীদের দিকে মুখ করে ডা. মহসিন খান বলেন, ‘ওরে কালকে রাতের বেলা বের করে দিছিলাম না, মনে আছে? আমার নির্দেশ মানে না কেন, আমি কি এখন চইলা যামু?’
আহত বৃদ্ধ রোগীর সঙ্গে চিকিৎসকের এমন আচরণের ভিডিও গত দুই দিনে অনেকের মাঝে ছড়িয়ে পড়েছে। অনেকেই প্রশ্ন তুলেছেন, যদি রোগী সুস্থই হন, তাহলে কেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তাকে ভর্তি করিয়েছে। আর কেনই বা এরকম একটি বয়ষ্ক লোককে চিকিৎসক গালমন্দ করছেন। হাসপতালে সরকারি টাকায় ক্রয় করা বিছানার চাদর কীভাবে একজন চিকিৎসক ছিড়ে ফেলেন। লোকটি যদি ভুলও করে থাকেন, তাকে বুঝিয়ে বলা যেত। এমন অনেক কথাই তুলেছেন স্থানীরা।
এ বিষয়ে জানতে লালমোহন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার মহসিন খানের মুঠোফোনে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি ধরেননি। কিছুক্ষণ পর আবার কল করা হলে এক নারী ফোন রিসিভ করে বলেন, ‘এটা রং নম্বর।’
এ বিষয়ে ভোলার সিভিল সার্জন ডা. রথিন্দ্রনাথ মজুমদার বলেন, ‘বিষয়টি আমি গুনেছি। তাকে এর আগেও এ সকল ব্যাপারে সতর্ক করা হয়েছে। এ ছাড়া হাসপাতালটিতে চিকিৎসক সংকট রয়েছে। তাকে সেখান থেকে সরিয়ে নিলে হাসপাতালটি খালি হয়ে যাবে। তারপরও আমি বিষয়টি দেখব।’
ভিডিও : দৈনিক আমাদের সময়
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।