জুমবাংলা ডেস্ক : শুক্রবার (৫ ফেব্রুয়ারি) রাত ৮টায় শিক্ষক বীরেশ রুদ্র পাল তার ভাতিজি নিধি রানী পালকে (২) নিয়ে হাজির হন সরকারি হাসপাতালে। শিশুটির শরীরে ফুটন্ত পানি পড়ে পিঠ ও হাঁটুর কিছু অংশ পুড়ে গেছে।
হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক তারিকুল ইসলাম রোগীকে এক পলক দেখেই এক টুকরো কাগজে ‘বার্ন’ লিখে মৌলভীবাজার সদর হাসপাতালে রেফার্ড করে দেন।
প্রাথমিক চিকিৎসা না দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে কর্তব্যরত চিকিৎসকের বিরুদ্ধে। মৌলভীবাজারের জুড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এ ঘটনাটি ঘটে।
এ ঘটনায় শিক্ষক বীরেশ রুদ্র পাল ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দেন। এতে সমালোচনার ঝড় ওঠে। ভুক্তভোগীদের বাড়ি উপজেলার পূর্ববাড়ি ইউনিয়নের বড় ধামাই এলাকায়।
ঐ স্ট্যাটাসে বীরেশ বলেন, ‘‘আমার ছোট ভাইয়ের ২ বছরের মেয়ে (নিধি) গরম পানিতে শরীরের ৪ ইঞ্চি জায়গা ও ডান পায়ের হাটুর কিছু অংশ ঝলসে যাওয়ায় তাকে আমরা জুড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাই। কিন্তু জরুরি বিভাগে কর্তব্যরত চিকিৎসক রোগীকে এক পলক দেখেই এক টুকরো কাগজে বার্ন লিখে মৌলভীবাজার সদর হাসপাতালে রেফার্ড করেই যেন বেঁচে গেলেন। আমার সাথে থাকা একজন বললেন আপনার হাসপাতালে কী এই শিশুটির আশু শান্তির জন্য পাঁচ টাকার ক্রীম নাই। চিকিৎসক বললেন, ‘নাই’।
‘আমি বললাম, এখন রাত আমাদের জুড়ী থেকে মৌলভীবাজার দুই ঘণ্টার পথ। আপনি ঔষধ লিখেন আমি কিনে আনব। তিনি বললেন, আমি রেফার করে দিয়েছি, চিকিৎসা করব না। এতটুকু মানবিকতা বা সহযোগিতার কিছুই পেলাম না। তিনি রিলাক্স মুডে ফোনে কথা বলার জন্য সরে গেলেন। এই হলো আমাদের জুড়ী সরকারি হাসপাতাল। যাক সে কথা, পরে কি আর করি। বেসরকারি ক্লিনিকই শেষ ভরসা। কেউ কিছু মনে করবেন না। মনের আবেগে যদি ভুল হয় ক্ষমা করবেন। আর সেই আমার ছোট্ট মা নিধির জন্য দোয়া করবেন সে যেন তাড়াতাড়ি সুস্থ হয়।”
বীরেশ রুদ্র পালে বলেন, ‘সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা না পেয়ে স্থানীয় বদর উদ্দিন হাসপাতালে আমার ভাতিজিকে ভর্তি করাই। প্রশ্ন হচ্ছে- একটি ছোট ক্লিনিক যদি এই প্রাথমিক চিকিৎসা দিতে পারে, তাহলে সরকারের এতো কোটি কোটি টাকা খরচ করে নির্মিত সরকারি হাসপাতালে প্রাথমিক এই চিকিৎসা কেন পেলাম না?’
বিষয়টি নিয়ে কথা বলতে হাসপাতালে ঐ সময়ের কর্তব্যরত চিকিৎসক (সিনিয়র স্টাফ নার্স, সাব অ্যাসিসট্যান্ট) তারিকুল ইসলামের মুঠোফোনে কয়েকবার যোগাযোগ করা হয়। তবে তার ফোনটি বন্ধ পাওয়া গেছে।
জুড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার ও পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. সমজিৎ সিংহ রাইজিংবিডিকে বলেন, ‘আমি যতটুকু জেনেছি, আমার স্টাফ সম্পূর্ণ রাইট রয়েছেন। রোগীর শরীর ১০ শতাংশের উপরে বার্ন হয়েছে। সেজন্য কর্তব্যরত চিকিৎসক মৌলভীবাজার সদর হাসপাতালে রেফার্ড করে দেন।’
মৌলভীবাজার সিভিল সার্জন ডা. চৌধুরী জালাল উদ্দিন মুর্শেদ জানান, ঘটনাটি নিয়ে কোনো অভিযোগ আসেনি। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।