জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বিশ্বের নানা প্রান্তের হিমবাহ গলে যাচ্ছে। দ্রুতগতিতে হিমবাহ গলে যাওয়ার কারণে পরিবেশগত ও ভূ-রাজনৈতিক পরিবর্তন ঘটছে সারা বিশ্বে। লিথুনিয়ার ভিলনিয়াস ইউনিভার্সিটির ইনস্টিটিউট অব জিওসায়েন্সের বিজ্ঞানীরা বিভিন্ন উপগ্রহের তথ্য পর্যবেক্ষণ করে জানিয়েছেন, হিমবাহ গলে যাওয়ার কারণে ভূপৃষ্ঠের কাঠামোতেও পরিবর্তন হচ্ছে।
বিজ্ঞানীদের তথ্যমতে, হিমবাহ সাধারণভাবে আমাদের গ্রহের প্রাকৃতিক এয়ার কন্ডিশনার হিসেবে কাজ করে জলবায়ু নিয়ন্ত্রণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। তবে জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে হিমবাহ তার ভূমিকা পালন করতে পারছে না। হিমবাহগুলোতে বিশ্বের প্রায় ৭৫ শতাংশ স্বাদুপানি সঞ্চিত রয়েছে, যা ধীরে ধীরে নদী ও হ্রদে প্রবেশ করে পানিপ্রবাহে ভূমিকা রাখে। শুধু তা–ই নয়, হিমবাহগুলো সূর্যের আলো প্রতিফলিত করে আমাদের গ্রহকে ঠান্ডা রাখতেও সাহায্য করে। ফলে হিমবাহ না থাকলে পরিবেশের অনেক বাস্তুতন্ত্র নষ্ট হয়ে যাবে। হিমবাহের পরিমাণ কমার কারণে সমুদ্রের উচ্চতাও বৃদ্ধি পাচ্ছে। এতে উপকূলীয় বন্যা, ভূমিক্ষয় ও নিচু এলাকায় বসবাসকারী লাখ লাখ মানুষ বাস্তুচ্যুত হওয়ার আশঙ্কায় রয়েছে।
ইউরোপে অনেক এলাকার সীমানা উচ্চ পর্বতশৃঙ্গ বরাবর ভাগ করা হয়। হিমবাহের আকার পরিবর্তন বা গলে যাওয়ার কারণে এসব এলাকার মানচিত্র পুনরায় আঁকতে হতে পারে। এরই মধ্যে হিমবাহের কারণে ইতালি, সুইজারল্যান্ড ও অস্ট্রিয়ার সীমানায় কিছুটা পরিবর্তন দেখা যাচ্ছে। বিশালাকার হিমবাহ সরে যাওয়া বা ভেঙে যাওয়ার কারণে সীমানা স্থানান্তরিত হচ্ছে। গত বছর ম্যাটারহর্ন হিমবাহের অবস্থান পরিবর্তনের কারণে ইতালি-সুইজারল্যান্ডের মানচিত্রে পরিবর্তন আনা হয়।
বিজ্ঞানী এলজে বুসলাভিচিউটি ও লরিনাস জুকনার জানিয়েছেন, সর্বশেষ বরফযুগে ২০-২২ হাজার বছর আগে স্ক্যান্ডিনেভিয়ান এলাকার হিমবাহের আকার পরিবর্তন হলে ইউরোপের পৃষ্ঠে পরিবর্তন হয়েছিল। বর্তমানের ইউরোপ আসলে তখনকার হিমবাহ গলেই উন্মুক্ত হয়েছে। আধুনিক ইউরোপে অনেক হিমবাহ আল্পস, স্বালবার্ড, আইসল্যান্ড ও পাইরেনিসের মতো অঞ্চলে অবস্থিত। নানা রকমের পাহাড়ি ভূখণ্ডে এদের অবস্থান। নানা কারণে হিমবাহের আকার কমছে। হিমবাহ গলে যাওয়ার কারণে অনেক দেশের জাতীয় সীমানায় পরিবর্তন আসতে পারে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।