জুমবাংলা ডেস্ক : রাজশাহীতে এ বছর আলুর বাম্পার ফলন হলেও কৃষকেরা ন্যায্য দাম পাচ্ছেন না। এর অন্যতম কারণ হিমাগারে সংরক্ষণের সংকট এবং সেখানে সক্রিয় সিন্ডিকেটের দৌরাত্ম্য। কৃষকেরা আগাম বুকিং দিয়েও হিমাগারে জায়গা পাচ্ছেন না, দলীয় প্রভাব খাটিয়ে একটি চক্র হিমাগারে স্থান দখল করে নিচ্ছে। ফলে অনেক কৃষকের আলু মাঠেই নষ্ট হওয়ার উপক্রম হয়েছে।
হিমাগারে জায়গা নেই, সিন্ডিকেটের দৌরাত্ম্য
রাজশাহীর তানোর উপজেলার কৃষক রফিকুল ইসলাম জানান, তিনি আগাম বুকিং দিয়েও তার সমস্ত আলু হিমাগারে রাখতে পারেননি। স্থানীয় কিছু প্রভাবশালী সিন্ডিকেট করে নিজেদের পরিচিতজনদের আলু সংরক্ষণের সুযোগ করে দিচ্ছে, ফলে সাধারণ কৃষকরা বঞ্চিত হচ্ছেন। একই অভিযোগ করেছেন মোহনপুর উপজেলার কৃষক জাহিদুল করিম। তিনি জানান, হিমাগারের জায়গা সংকটের পাশাপাশি সংরক্ষণের খরচও বেড়েছে, যা কৃষকদের লোকসানের মুখে ফেলছে।
আলুর দাম কম, বাজারেও বিক্রির সুযোগ নেই
চলতি বছরে রাজশাহীতে ১০ লাখ ৩০ হাজার মেট্রিক টন আলু উৎপাদনের আশা করা হচ্ছে, যা গত বছরের তুলনায় ৯০ হাজার মেট্রিক টন বেশি। তবে চাহিদার তুলনায় হিমাগারের সংখ্যা কম থাকায় মাত্র ২৩ শতাংশ আলু সংরক্ষণ করা সম্ভব। ফলে বাজারে আলুর সরবরাহ বেড়ে যাওয়ায় দাম কমেছে। কৃষকরা জমিতেই ৯ টাকা কেজি দরে আলু বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছেন, অথচ বাজারে সেই আলুই ২০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
সিন্ডিকেটের কারণে বুকিং দিয়েও আলু রাখা যাচ্ছে না
স্থানীয় কৃষকদের অভিযোগ, একটি চক্র দলীয় প্রভাব খাটিয়ে আগাম বুকিং ছাড়াই আলু হিমাগারে সংরক্ষণ করছে। এতে প্রকৃত কৃষকরা আলু সংরক্ষণের সুযোগ পাচ্ছেন না। রহমান কোল্ড স্টোরেজের এক কর্মকর্তা স্বীকার করেছেন, দলীয় প্রভাব থাকলে কিছু ক্ষেত্রে বুকিং ছাড়া আলু নেওয়া হয়। তবে তিনি এটিকে সিন্ডিকেট বলতে নারাজ।
কৃষকদের ক্ষতির পরিমাণ কত?
তানোরের কৃষক আলমগীর হোসেন জানান, তার ৪০ একর জমিতে উৎপাদিত সাত হাজার বস্তা আলুর অর্ধেকও হিমাগারে সংরক্ষণ করতে পারেননি। ফলে জমিতেই আলু রেখে দিতে বাধ্য হয়েছেন, যা দীর্ঘদিন থাকলে নষ্ট হয়ে যেতে পারে।
আগামী দিনের করণীয়
রাজশাহীর কোল্ড স্টোরেজ সমিতির সাধারণ সম্পাদক ফজলুর রহমান জানিয়েছেন, আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে হিমাগারগুলো পূর্ণ হয়ে যাবে। ফলে প্রচুর আলু বাইরে থেকে যাবে, যা কৃষকদের জন্য আরও বড় সমস্যা তৈরি করবে। হিমাগার সংকট কাটাতে সরকারি উদ্যোগ প্রয়োজন বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
মহান স্বাধীনতা দিবসে সেনাবাহিনী কর্তৃক ৩১ বার তোপধ্বনি প্রদর্শন
রাজশাহীতে আলুর উৎপাদন বৃদ্ধি পেলেও সংরক্ষণের ব্যবস্থা যথাযথ না থাকায় কৃষকেরা ক্ষতির মুখে পড়ছেন। হিমাগারেও সিন্ডিকেটের কারণে ন্যায্য সংরক্ষণের সুযোগ পাচ্ছেন না অনেক চাষি। এতে তাদের লোকসান বাড়ছে এবং বাজারে সরবরাহ বাড়ায় দাম কমে যাচ্ছে। এ অবস্থায় সরকারি পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি, যাতে ভবিষ্যতে কৃষকদের এই দুর্দশা পোহাতে না হয়।
Get the latest Zoom Bangla News first — Follow us on Google News, Twitter, Facebook, Telegram and subscribe to our YouTube channel.