বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ডেস্ক : মোটরসাইকেলের জগতে একসময় রাজত্ব করত হিরো হোন্ডা। এই দুই কোম্পানি একজোট হয়ে বাজারে দীর্ঘ সময় সুনামের সঙ্গে ব্যবসা করেছিল। কিন্তু সেগুলো এখন অতীত। বহুদিন আগেই দুই কোম্পানির ছাড়াছাড়ি হয়েছে। হিরো এবং হোন্ডা এখন আলাদাভাবে ব্যবসা করে। অনেকেই জানেন না ঠিক কী করণে কোম্পানিটি ভাঙল।
হিরো হোন্ডা আলাদা হওয়ার আসল কারণ
হিরো হোন্ডা সিডি ১১০ এটিই ছিল দুই সংস্থার যৌথ উদ্যোগে তৈরি প্রথম মোটরসাইকেল। ১৯৮৫ সালে বাজারে আনা হয় দেশের প্রথম ৪ স্ট্রোক ইঞ্জিনের এই বাইক। ৮০ এবং ৯০ এর দশকে রমরমিয়ে বিক্রি হয় সিডি ১১০ মডেল।তারপর আসে স্প্লেন্ডর ও কারিজমার মতো আইকনিক মোটরসাইকেল।
ভারতে প্রায় ২৬ বছর টিকে ছিল হিরো এবং হোন্ডার জয়েন্ট ভেঞ্চার। তারপর ২০১১ সালে পৃথক ব্যবসা পরিচালনার সিদ্ধান্ত নেয় দুই সংস্থা। আজও দেশের বিভিন্ন জায়গায় চোখে পড়ে হিরো হোন্ডার লোগো বসানো মোটরসাইকেল। কিন্তু কেন এই দুই সংস্থা আলাদা হয়েছিল তা জানেন? চলুন টুকরো ইতিহাস জেনে নেওয়া যাক।
হিরো এবং হোন্ডা এই দুই নামই ছিল দুই চাকার বাজারে ব্যাপক জনপ্রিয়। জাপানের হোন্ডা সেই সময় বিশ্বের একাধিক দেশে বাইক বিক্রি করছে। হিরোও ভারতে দারুণ গুছিয়ে তুলেছে ব্যবসাপাতি।
এই যাত্রা এগিয়ে নিয়ে যেতে ১৯৮৩ সালে জয়েন্ট ভেঞ্চারের একটি প্রস্তাব রাখা হয়। যার অন্তর্গত ১৯৮৫ সালে নিউ দিল্লিতে স্থাপিত হয় হিরো হ0ন্ডা। ২০০১ সালের মধ্যে পৃথিবীর বড় বড় দুই চাকা সংস্থাগুলোকে ছাপিয়ে যায় হিরো হোন্ডা।
বিজয়রথ চলতে থাকে বছরের পর বছর। জাপানের প্রযুক্তি এবং কর্মঠ ভারতীয়দের দক্ষতার মিশেলে এক অপ্রতিরোধ্য জুটি তৈরি হয়। কিন্তু এই চির অটুট সম্পর্কে তিক্ততা জন্মায় ২০১০ সালের দিকে। ওই সময় হিরোর নাম ভারতীয়দের মুখে মুখে।
দেশে বাড়তে থাকা চাহিদার ভাগ চেটেপুটে নিতে হোন্ডাও ভিন্ন পরিকল্পনা শুরু করে দেয়। জনবহুল ওই দেশের এই বিরাট মোটরসাইকেল বাজারে পা জমাতে শুরু হয় প্রতিদ্বন্দ্বীতা। অতঃপর ব্যবসা আলাদা করার প্রস্তাব আনা হয়।
শুধু কি বাড়তে থাকা ব্যবসা নাকি অন্য কারণ?
বিশেষজ্ঞদের মতে, সেই সময় বাইকের রফতানি নিয়ে বিবাদ শুরু হয়েছিল। হিরো হোন্ডার উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তারা হোন্ডার পরিকল্পনা সম্পর্কে ওয়াকিবহাল হতে পারছিলেন না। কারখানার এবং বাইকের সংখ্যা বাড়াতে চেয়েছিল হিরো হোন্ডা। কিন্তু তা খারিজ করে দেয় হোন্ডা।
ঠিক সেই সময় পৃথক সংস্থা হিসাবে বেশ নাম কমিয়ে ফেলেছে হোন্ডা। যার ফলস্বরূপ ২০১১ সালে আলাদা হয়ে যায় হিরো মটোকর্প এবং হোন্ডা মোটরসাইকেল। কিন্তু এই বিচ্ছেদের আঁচ সবথেকে বেশি পায় হিরো। কারণ ওই সময় তাদের ইঞ্জিনিয়ারিং দক্ষতার অভাব ছিল।
যেহেতু প্রকৌশলী বিভাগের বেশিরভাগটাই সামলাত হোন্ডা। তাই পা থেকে মাটি সরে যাওয়ার ভয়ে উদ্বিগ্ন হয়ে ওঠে সংস্থার বোর্ড সদস্যরা। যদিও সময়ের সঙ্গে ঘুরে দাঁড়ায় তারা।
প্রতিষ্ঠা করা হয় রিসার্চ সেন্টার এবং নতুন স্ট্র্যাটেজি। ক্রমে ভারত তথা বিশ্বের একাধিক দেশে নিজেরদের বাইক লঞ্চ করে হিরো মটোকর্প। বর্তমানে ভারতের সবথেকে বড় টু হুইলার সংস্থা হিরো মটোকর্প।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।