জুমবাংলা ডেস্ক : স্ত্রীর সঙ্গে ঝগড়ার একপর্যায়ে রাগের মাথায় ‘তালাক’ শব্দটি উচ্চারণ করেন তিনি। বিষয়টি জানতে পারেন গ্রামের মাতবর জালাল হোসেন। এরপর একের পর এক সালিস বসিয়ে ওই গৃহবধূকে (৫০) হিল্লা বিয়ের জন্য চাপ দেওয়া হয়। কিন্তু তাতে রাজি না হওয়ায় মাতবররা ওই গৃহবধূসহ তাঁর পরিবারকে একঘরে করে রেখেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। ঘটনাটি ঘটেছে জয়পুরহাটের আক্কেলপুর উপজেলার বিষ্ণুপুর গ্রামে।
এদিকে এই ব্যাপারে জানতে চাইলে মাতবর জালালের ভয়ে কেউ মুখ খুলতে চায়নি। প্রতিবেশীরা জানায়, জালাল আওয়ামী লীগ সমর্থক। তাঁর অনেক ক্ষমতা। তাঁর বিরুদ্ধে কিছু বলার সাহস কারো নেই।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ওই দম্পতির এক ছেলে ও তিন মেয়ে রয়েছে। বড় ছেলে ঢাকায় বিকশা চালান। এক মেয়ের বিয়ে হয়েছে। ছোট দুই মেয়ে স্কুলে পড়ে। ১৫-২০ দিন আগে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ঝগড়া হয়। তখন রাগের মাথায় স্ত্রীকে তিনি ‘তালাক’ বলে ফেলেন। মাতবররা বিষয়টি জানতে পেরে এ নিয়ে গ্রামে সালিস ডাকেন। ওই সালিসে তিলকপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সদস্য জালাল হোসেন, ইউপি সদস্য বাদেশ আলী, ওয়ার্ড যুবলীগ নেতা মোকছেদ হোসেনসহ অনেকে উপস্থিত ছিলেন। সালিসে গৃহবধূকে হিল্লা বিয়ের প্রস্তাব দেওয়া হয়। কিন্তু ওই গৃহবধূ তাতে অস্বীকৃতি জানান। পরে এ নিয়ে কয়েকবার সালিস অনুষ্ঠিত হয়।
ওই গৃহবধূ বলেন, ‘সালিস ডেকে হিল্লা বিয়ে করতে তাঁরা চাপ দেন। একপর্যায়ে আমার স্বামী রাজি হয়; কিন্তু আমি রাজি হইনি। এ কারণে এখন কেউ আমাদের সঙ্গে কথা বলে না। মাতবররা সবাইকে বলে দিয়েছেন, কেউ যেন আমাদের সঙ্গে কথা না বলে। আমাদের একঘরে করে রাখা হয়েছে।’
মাতবর ও ইউপি সদস্য বাদেশ আলী বলেন, ‘ওই গৃহবধূকে নিয়ে গ্রামে সালিস হয়েছিল। সেখানে তাঁদের জমির বিষয়ে আলোচনা হয়। আমি তাঁকে হিল্লা বিয়ে করতে বলিনি। তিনি মিথ্যা বলছেন।’
হিল্লা বিয়েতে রাজি না হওয়ায় ওই পরিবারকে একঘরে করে রাখার বিষয়টি অস্বীকার করে মাতবর জালাল হোসেন বলেন, ‘তাঁদের নিয়ে গ্রামে সালিস হয়েছিল। কিন্তু সেখানে হিল্লা বিয়ের কোনো কথা হয়নি।’
তিলকপুর ইউপি চেয়ারম্যান সেলিম মাহবুব সজল ও আক্কেলপুর থানার ওসি আবু ওবায়েদ জানান, এই রকম কোনো ঘটনা তাঁদের জানা নেই।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।