ঢাকার উত্তরায় মাইলস্টোন কলেজে বিমান দুর্ঘটনায় নিহত দুই শিক্ষার্থী মেহেনাজ আক্তার হুমায়রা ও তানভীর আহমেদ এর গ্রামের বাড়িতে চলছে শোকের মাতম।
আজ মঙ্গলবার সকালে টাঙ্গাইলের মির্জাপুর ও সখীপুর উপজেলায় দুই শিক্ষার্থীর গ্রামের বাড়িতে তাদের দাফন করা হয়।
নিহত তৃতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী মেহেনাজ আক্তার হুমায়রা টাঙ্গাইলের সখীপুর উপজেলার হতেয়া কেরানীপাড়ার দেলোয়ার হোসেনের কন্যা এবং অষ্টম শ্রেণির ছাত্র তানভীর আহমেদ (১৪) মির্জাপুর উপজেলার ওয়ার্শি ইউনিয়নের নগর ভাতগ্রাম গ্রামের রুবেল মিয়ার পুত্র।
সরেজমিনে দেখা যায়, টাঙ্গাইলের সখীপুর উপজেলার হতেয়া কেরানীপাড়ার দেলোয়ার হোসেনের একমাত্র কন্যা নিহত মেহেনাজ আক্তার হুমায়রার বাড়িতে চলছে শোকের মাতম। আজ সকাল ৯টায় সখীপুর হতেয়া কেরানীপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে জানাজা শেষে হতেয়া কেরানীপাড়া সামাজিক কবরস্থানে হুমায়রাকে দাফন করা হয়।
হুমায়রার খালু নাসির সিকদার জানান, গতরাতে ঢাকা থেকে হুমায়রার মরদেহ সখিপুরে নিয়ে আসা হয়। আজ সকাল ৯টায় জানাজা শেষে কেরানীপাড়া সামাজিক কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে। হুমায়রার বাবা দেলোয়ার হোসেন মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের বাংলা বিভাগের প্রভাষক। হুমায়রার জানাজায় সখীপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবদুল্লাহ আল রনীসহ এলাকার বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, সামাজিক ও পেশাজীবী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ অংশ নেন।
হুমায়রার বাবা দেলোয়ার হোসেন বলেন, উত্তরায় মাইলস্টোন কলেজে বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় আমার মেয়ে এবং টাঙ্গাইলের আরো একজন শিক্ষার্থী মারা গেছে। আমার আদরের মেয়েকে হারিয়ে আমি নিঃস্ব হয়ে গেলাম। এ শোক আমি সইব কীভাবে। পুরো দেশের মানুষ এই শোকের ঘটনায় একাত্মতা প্রকাশ করেছে।
‘শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ওপর দিয়ে কেন প্রশিক্ষণ বিমান উড়ছিল, এর কোন জবাব কি কেউ দিতে পারবে?’-বলেই কান্নায় ভেঙে পড়েন এই শোকাহত পিতা।
মির্জাপুর উপজেলার নগর ভাতগ্রাম নয়াপাড়ায় অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী তানভীরের গ্রামের বাড়িতে নেমে এসেছে শোকের ছায়া। আজ সকাল ১০টায় মির্জাপুর উপজেলার আন্দিপাড়া মাদ্রাসা মাঠে তানভীরের নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। পরে আন্দিপাড়া সামাজিক কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়।
পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, বাবা রুবেল মিয়ার ব্যবসার সুবাদে ঢাকায় থাকেন তানভীরের পরিবার। তানভীর ও তাশফিক দুই ভাই। তানভীর অষ্টম শ্রেণির ছাত্র। ছোট ভাই তাশফিক তৃতীয় শ্রেণিতে পড়ে । দুই ভাইই মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষার্থী। প্রতিদিনের মত মায়ের হাতের খাবার খেয়ে স্কুলে গিয়েছিল দুই ভাই। ছোট ভাই বেলা ১২টায় স্কুল ছুটি হলে বাসায় চলে যায়। কোচিংয়ে পড়ার জন্য স্কুলে থেকে যায় তানভীর। তানভীর ক্লাসের ক্যাপ্টেন হওয়ায় দুর্ঘটনার আগ মুহূর্তেও শ্রেণিকক্ষের শৃঙ্খলার দায়িত্ব পালন করছিল।
নিহত তানভীরের চাচাতো ভাই সজিব বলেন, চাচা-চাচি সন্তানকে সুশিক্ষায় শিক্ষিত করে তোলার জন্য মাইলস্টোন কলেজে ভর্তি করেছিলেন। সব স্বপ্ন শেষ হয়ে গেল। তার লাশ গ্রামে আনা হলে গ্রামে হৃদয় বিদারক দৃশ্যের সৃষ্টি হয়।
মির্জাপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার এবিএম আরিফুল ইসলাম বলেন, এমন ঘটনায় আমরা সবাই মর্মাহত। নিহতের পরিবারকে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সার্বিক সহায়তা প্রদান করা হবে।-বাসস
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।