জুমবাংলা ডেস্ক : ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩ আসনের (ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর ও বিজয় নগর উপজেলা) সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী বলেছেন, আমার জানাজার নামাজ তারা পড়াক আমি তা চাইনি। আর আপনাদের বলে রাখি, কোনো মুসলমানের জানাযা নামায পড়াতে কোনো মৌলভির সাহেবের প্রয়োজন নাই।
তিনি বলেন, যে কোনো মুসলমান জানাজার নামাযে দাঁড়িয়ে নিয়ত যদি বাংলায়ও করেন, যদি দোয়া না পারেন তাহলে নামাযে দাঁড়িয়ে বলেন, আমি এই মাইয়াতের ক্ষমা প্রার্থনার জন্য জানাজার নামাজে দাঁড়ালাম তাহলেও হবে। আমি চ্যালেঞ্জ দিয়ে বললাম এই কথা।সুতরাং জানাজার নামাজ নিয়ে আপনারা মাথা ঘামাবেন না।
সোমবার দুপুরে ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেস ক্লাবে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তাকে জানাযা না দিতে, হেফাজতে ইসলামের নেতাদের বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে বীর মুক্তিযোদ্ধা র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, এই খানের মোল্লারা নাকি বলেছেন- ছাত্রলীগের জানাযা নাকি পড়াবেন না। এখানে ছাত্রলীগের যারা আছে তাদের ঘাবড়ানোর কিছু নাই। তোমাদের জানাজার নামাজ তোমার বাবা-ভাই বা প্রয়োজন হলে আমি জানাযা পড়াব। সুতরাং তোমরা জানাযা নিয়ে চিন্তা করবে না। কিন্তু আমরা হেফাজতির কাছে যাব না এই কথা নিশ্চিত থাকো, হেফাজতিরা আমাদের কাছে আসে।
উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী এমপি বলেন, অনেকে আমাকে দোষারোপ করার চেষ্টা করছেন। নিজেদের অপারগতা-ব্যর্থতা ঢাকতে তারা এখন আমার ঘাড়ে দোষ চাপানোর চেষ্টা করছেন। আমি চ্যালেঞ্জ দিয়ে বললাম, আমি কোনো উসকানিমূলক কথা বলিনি। কেউ যদি দেখাতে পারেন আমি কোনো কথা উস্কানিমূলক বলেছি, আমি বিচারের সম্মুখীন হতে রাজি আছি।
তিনি বলেন, আমি ওইদিন উদ্যোগ নিয়েছিলাম, শহরের ঘোড়াপট্টি মোড় থেকে ফিরে আসার জন্যে। ঘোড়াপট্টি মোড় থেকে একটু সামনের গলি জামিয়া ইসলামিয়া ইউনুছিয়া মাদ্রাসা। কিন্তু দক্ষিণ কালীবাড়ি মোড় যাওয়া পর আমি বিস্ফোরণের শব্দ শুনতে পেয়েছিলাম। যদি মেনে নেই ওইদিন ছাত্রলীগের দোষ! তাহলে আগের দিন ছাত্রলীগের কে তাদের ওপর হাত দিয়েছিল?
এমপি মোকতাদির চৌধুরী বলেন, আর প্রশাসন যে সব কথাবার্তা বলছে, তা আমি শুনেছি। কোনো একজন ম্যাজিস্ট্রেট নাকি আমার কথা বলেছে। তার কথা সত্যি হয়ে গেল? তার জন্ম হয়েছে তো আমার ম্যাজিস্ট্রেসি শেষ হওয়ার পর।
তিনি আরও বলেন, আমি ৭০ বছর জীবনে বহু হরতাল দেখেছি। হরতালে কোনো রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীদের বাড়িতে হামলা হতে কোনদিন দেখেনি। অথচ হেফাজতের হরতালে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের বাড়িসহ দলীয় বিভিন্ন নেতাকর্মীদের বাড়িতে হামলা করা হলো। ভূমি অফিসে হামলা করা হলো৷ ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ভূমিদস্যুদের এক সিন্ডিকেট আছে। এই হামলার পেছনে যদি তারাও থেকে থাকে, এর দায় হেফাজতকেই নিতে হবে। অথচ হেফাজত প্রেস কনফারেন্স করে আমার বিচার চেয়েছে, আমাকে গালাগাল করেছে কিন্তু তদন্ত দাবি করে নাই।
তিনি বলেন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নিষ্ক্রিয় ছিল। বরং সদর থানা থেকে মাইকিং করে হেফাজতের উদ্দেশ্যে বলেছে, ‘আমাদের ওপর হামলা চালাবেন না। আমরা আমাদের কাজ করছি, আপনারা আপনাদের কাজ করুন।’ এতে করে তারা আর দুঃসাহসিক হয়ে উঠে বিভিন্ন স্থানে হামলা করে। তাদের সঙ্গে ছাত্রদল ও যুবদলের লোকজন যোগদান করে। আমরা তাদের চিহ্নিত করতে পেরেছি। এছাড়াও পৌর নির্বাচনে বিএনপির পরাজিত প্রার্থী জহিরুল হক খোকন ও মাহমুদুল হক ভূঁইয়ার নেতাকর্মীরা অংশগ্রহণ করে। ভিডিও ফুটেজ যার সাক্ষী। তিনি সহিংসতায় অগ্নিকাণ্ডের ফায়ার সার্ভিসের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তুলেন।
এমপি আরও বলেন, ২০১৬ সালে তথাকথিত তৌহিদী জনতা কর্তৃক সরকারি বিভিন্ন স্থাপনায় হামলা হয়েছিল তারপর আমরা সরকারি সহায়তা তেমন পায়নি। সরকার বিষয়টিকে গুরুত্ব সহকারে নেননি। কেন নেননি সেটা আমি জানি না। তিনি গত কয়েকদিনে সহিংসতা কেন করা হলো, কারা করলো, প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কেন নিষ্ক্রিয় ছিল, কেন সদর থানা থেকে কেন এই ধরনের মাইকিং করা হলো তার একটা ব্যাখ্যা প্রয়োজন। মোকতাদির চৌধুরী এমপি সমস্ত বিষয়ের ওপর বিচার বিভাগীয় তদন্ত দাবি করেন।
এ সময় তার সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি তাজ মোহাম্মদ ইয়াছিন, মুজিবুর রহমান বাবুল, জেলা আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা আল মামুন সরকার, যুগ্ম সম্পাদক মাহবুবুল বারী চৌধুরী মন্টু, সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল কালাম ভূঁইয়া প্রমুখ।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।