জুমবাংলা ডেস্ক : কিছুদিন পরপরই হেলিকপ্টারে সপরিবারে রাজবাড়ীর গ্রামের বাড়িতে আসতেন। সবসময় হাতে থাকতো ওয়াকিটকি ও একাধিক সশস্ত্র দেহরক্ষী। নতুন ডিসি-এসপি এলেই দিতেন ক্রেস্ট ও বড় ফুলের তোড়া।
বিভিন্ন ওয়াজ মাহফিল ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে বড় অংকের ডোনেশন দিয়ে হতেন অতিথি। নিজেকে পরিচয় দিতেন বিশিষ্ট শিল্পপতি, সিকিউরিটি কোম্পানির মালিক, উইনার গ্রুপ অব কোম্পানির চেয়ারম্যান হিসেবে।
ঈদের সময় ঢাকঢোল পিটিয়ে অনেক মানুষের মধ্যে যাকাতের কাপড় বিতরণ করতেন। শীতের সময় কম্বল দিতেন। দামি গাড়িতে চড়তেন। আলীশান বাড়িতে বসবাস ও রাজার হালে জীবনযাপন করতেন। এখন জানা গেল তিনি একজন প্রতারক ও মানবপাচারকারী।
সোমবার রাতে ঢাকার বারিধারা ডিওএইচএস এলাকা থেকে র্যাব তাকে মানব পাচার ও প্রতারণার অভিযোগে গ্রেফতার করে। এ সময় তার কাছ থেকে শতাধিক পাসপোর্ট, অনুমোদনহীন ওয়াকিটকিসহ প্রতারণায় ব্যবহৃত নানা সরঞ্জাম জব্দ করা হয়।
র্যাব জানায়, রাজবাড়ী সদর উপজেলার চন্দনী ইউনিয়নের ধাওয়াপাড়া এলাকার বাসিন্দা আবদুল্লাহ আল মামুন ওরফে কেসমত পত্রিকায় চটকদার বিজ্ঞাপন দিয়ে নানা প্রলোভন দেখিয়ে টাকা হাতিয়ে নিত। কখনো কখনো ভয় দেখিয়ে আদায় করতো অর্থ। টাকা ফেরত চাইতে এসে অনেকে মারধরের শিকারও হয়েছেন। নিজেকে ক্ষমতাধর জাহির করতে তিনি ওয়াকিটকির অনৈতিক ব্যবহার করতেন। প্রতারণার টাকায় গ্রামে যেত হেলিকপ্টারে চরে। অফিস কর্মচারীদের কাউকেই সে দুই মাসের বেশি চাকরিতে রাখতেন না।
এদিকে র্যাবের হাতে গ্রেফতারকৃত আবদুল্লাহ আল মামুন ওরফে কেসমতের বিরুদ্ধে নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁও উপজেলার হাটখোলাভিটা গ্রামের হাজী মো. আলাউদ্দিন ভুঁইয়া (৪৪) নামে এক ভুক্তভোগী বাদী হয়ে ডিএমপির ক্যান্টনমেন্ট থানায় মানব পাচারের অভিযোগে একটি মামলা দায়ের করেছেন।
মামলার অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে, আবদুল্লাহ আল মামুন ওরফে কেসমত বিভিন্ন এলাকার প্রায় ৫০ জনকে বিদেশে পাঠানোর নামে দালাল চক্রের সহায়তায় মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নেয়। তাদের মধ্যে হাজী মো. আলাউদ্দিনের কাছ থেকে ৮০ লাখ, আলী আকবরের কাছ থেকে ২৩ লাখ টাকা, আবদুল আলিমের কাছ থেকে ২ লাখ ২০ হাজার টাকা, ইসমাইল হোসেনের কাছ থেকে ৪ লাখ ও ফয়সালের কাছ থেকে ৩২ লাখ টাকা নিয়ে তাদেরকে অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে আটকে রাখে। সেখানে আটকে রেখে বিদেশে পাঠানোর জন্য আরও টাকা আদায়ের উদ্দেশ্যে নির্যাতন করতে থাকে।
বন্দীদশা থেকে কৌশলে পালিয়ে হাজী মো. আলাউদ্দিন ভুঁইয়া র্যাব-২ ঢাকার কোম্পানি অধিনায়ককে অবহিত করেন। পরে র্যাবের একটি দল সোমবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে বারিধারা ডিওএইচএসের একটি ভবনের ৭ তলায় উইনার ইন্টারন্যাশনাল ট্রাভেলস নামক প্রতিষ্ঠানের অফিস থেকে আবদুল্লাহ আল মামুন ওরফে কেসমতকে আটক করে। সেখানকার একটি কক্ষে আটকে রাখা আলী আকবর, আবদুল আলিম, ইসমাইল হোসেন ও ফয়সালকে উদ্ধার করা হয়। সূত্র: যুগান্তর
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।