বিস্তীর্ণ সব জনপদ ঘুরে দেখা এবং ধর্মীয় তীর্থস্থানে যাত্রা সহ নানা কারণে মধ্যযুগে মানুষ দীর্ঘ সময় হাতে নিয়ে বিভিন্ন জনপদ ঘুরে বেড়াতেন এবং জ্ঞান অর্জন করতেন। ব্যবসা-বাণিজ্য এবং ভ্রমণও অন্যতম উদ্দেশ্য ছিলো।
মধ্যযুগের দুনিয়াটা কেমন ছিল ও ওই সময়ের ইউরোপ আফ্রিকা এবং এশিয়ার নানা অঞ্চলের কাহিনী ফুটে উঠেছে তিন মুসলিম পরিব্রাজক এর লেখায়। তারা হলেন ইবনে বতুতা, ইবনে ফাদলান এবং এভলিয় চেলেবি। আজ প্রথম পর্বে ইবনে ফাদলান এর বিবরণ তুলে ধরা হবে।
আহমেদ ইবনে ফাদলান জন্মগ্রহণ করেন ৮৭৯ খ্রিস্টাব্দে। তিনি জাতিতে ছিলেন আরব। ধর্মীয় বিষয়ে তার ছিল অগাধ পাণ্ডিত্য। তার মেধায় সন্তুষ্ট হয়ে ওই সময়ের আব্বাসীয় খলিফা আল-মুক্তাদির তাকে দূত হিসেবে নিয়োগ করেন।
তিনি ওই সময়ের তাতারস্থান অর্থাৎ বর্তমানে রাশিয়ায় বাস করতেন। ওই সময় ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেন বর্তমান বুলগারিয়ার রাজা আন্দ্রিস । তিনি খলিফাকে অনুরোধ করেন এমন একজনকে পাঠাতে যিনি ইসলাম ধর্ম প্রসারে সহায়তা করবেন। সেখানে দায়িত্ব পালনের জন্য দীর্ঘ পথ অতিক্রম করতে হয় ইবনে ফাদলানকে। মাঝপথে তিনি তুর্কি এবং রুশ জাতির নানা মানুষের সাথে সাক্ষাৎ করেন। এসব জনগোষ্ঠী ওই সময় ভাইকিং নামে পরিচিত ছিল।
অবশেষে বুলগেরিয়ার রাজার কাছে ইবনে ফাদলান পৌঁছে যান এবং আব্বাসী খলিফার চিঠি তাকে পড়ে শোনান। তার চিঠি পড়া শেষ হলে বুলগেরিয়ার রাজা অনেক উচ্ছ্বসিত হোন এবং আল্লাহু আকবার বলে চিৎকার করেন। ওই সময় স্থানীয় জনগোষ্ঠী এবং তাদের জীবন সম্পর্কে তিনি বিস্তারিত লিখে গেছেন যা বর্তমানে ঐতিহাসিক দলিল হিসেবে সংরক্ষিত আছে।
তিনি বলেন ভাইকিংরা ছিল সব সময় অস্ত্রে সজ্জিত। গায়ে বর্ম পড়া থাকতো। শরীরে অনেক ট্যাটু আঁকা থাকতো। ওখানকার নারীদের শারীরিক গড়নে তিনি প্রভাবিত হয়েছিলেন। তিনি বলেন আমি তাদের মত শারীরিকভাবে এত বলিষ্ঠ কাউকে কখনো দেখিনি। তারা ছিল তাল গাছের মতো লম্বা, সাদা চামড়ার এবং রুক্ষ প্রকৃতির।
তবে তারা পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন থাকতে একদমই পছন্দ করতেন না। তিনি এক ভাইকিং এর শেষ কৃত্যের বিবরণ দিয়ে যান যেখানে একজন তরুণীকে তার সাথে উৎসর্গ করা হয়।
আগামীকাল দ্বিতীয় পর্বে ইবনে বতুতার বিবরণ নিয়ে আলোচনা করা হবে।
সূত্রঃ বিডি ভিউজ
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।