জুমবাংলা ডেস্ক : চট্টগ্রামের হাটহাজারী উপজেলার বাসিন্দা রণজিত দেব। বয়স ৭০ ছুঁই ছুঁই। এক সময় সবই ছিল তার। কিন্তু এক অজানা রোগে সবকিছু তছনছ হয়ে যায়। এরপর থেকে আহার যোগাতে ঘুরে বেড়াতে হয় মানুষের দ্বারে দ্বারে। এ অবস্থায় ১০ বছর ধরে মাথা গোঁজার ঘরটি জরাজীর্ণ হয়ে পড়লেও ছিল না মেরামতের সামর্থ্য।
সম্প্রতি স্থানীয় এক সংবাদকর্মীর মাধ্যমে বিষয়টি নজরে আসে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রুহুল আমিনের। এরপরই মাত্র ১০ দিনে জীর্ণশীর্ণ কুটিরের জায়গায় তৈরি হয় একটি রঙিন ঘর।
বৃহস্পতিবার রণজিত দেবকে নতুন ঘরের চাবি বুঝিয়ে দেন ইউএনও রুহুল আমিন। এ সময় পৌরসভার ফটিকা গ্রামের হিন্দুপাড়ায় ঘরটি দেখতে ভিড় জমান আশপাশের মানুষ।
স্থানীয়রা জানায়, স্ত্রী ও দুই ছেলে-মেয়ে নিয়ে সাজানো ছিল রণজিতের সংসার। দেশ স্বাধীনের আগে ম্যাট্রিক পাস করেন স্ত্রী রেখা রানী চৌধুরী। ছেলে বাসু চৌধুরী ছিলেন পল্লী চিকিৎসক। মেয়েকে এসএসসি পাশ করিয়ে বিয়ে দেন এক সম্ভ্রান্ত পরিবারে। সব মিলিয়ে ভালোই দিন কাটছিল রংমিস্ত্রি রণজিতের। কিন্তু হঠাৎ অজানা রোগে আক্রান্ত হয়ে মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলেন তার দুই সন্তান। এখন ঘুরে বেড়ান পথে পথে।
এমন পরিণতিতে অসুস্থ হয়ে ঘরবন্দি হয়ে পড়েন বৃদ্ধ রণজিত। অসুস্থ স্বামী ও মানসিক ভারসাম্যহীন দুই সন্তানের মুখে আহার তুলে দিতে মানুষের দ্বারে দ্বারে ঘুরে বেড়ান ষাটোর্ধ্ব স্ত্রী রেখা রানী চৌধুরী। এ অবস্থায় মাথা গোঁজার ঘরটি জরাজীর্ণ হয়ে পড়লেও মেরামত সম্ভব ছিল না তাদের।
এদিকে, নতুন ঘর পেয়ে খুব খুশি রণজিত। তিনি বলেন, গত দশ বছর ধরে এ জীর্ণ ঘরে বসবাস করে আসছি। ইউএনওকে ধন্যবাদ জানাই তিনি আমাকে একটি নতুন ঘর দিয়েছেন। নিজ ও সন্তানদের চিকিৎসা খরচের জন্য ইউএনওসহ সমাজের বিত্তবানদের নিকট অনুরোধ জানান তিনি।
ইউএনও রুহুল আমিন বলেন, স্থানীয় একজন সংবাদকর্মীর মাধ্যমে বিষয়টি জানার পর দ্রুত উদ্যোগ গ্রহণ করি। তাদের জরাজীর্ণ ঘরটি পুননির্মাণ করে দিতে পেরে নিজেকে ভাগ্যবান মনে করছি। মানুষের সেবা করার সুযোগ পেয়ে সৃষ্টিকর্তার কাছে কৃতজ্ঞতা জানাই।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।