বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ডেস্ক: গত ২৭ অক্টোবর ৪৪ বিলিয়ন ডলারের বিনিময়ে টুইটার কিনে নেন বর্তমানে বিশ্বের সবচেয়ে ধনী ব্যক্তি ইলন মাস্ক। দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমটির নতুন এই মালিক প্রতিদিন নতুন নতুন নোটিশ নিয়ে হাজির হচ্ছেন।
গত তিন সপ্তাহে প্রায় এক-তৃতীয়াংশ কর্মী ছাঁটাই করেছেন তিনি। এছাড়াও গত সপ্তাহে স্বেচ্ছায় টুইটার ছেড়ে গেছেন ১২০০ জনের মতো সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার।
মাস্কের কাছ থেকে একটি ‘হুঁশিয়ারি’ বার্তাসূচক ইমেইল পাওয়ার পর পদত্যাগের সিদ্ধান্ত নেন এই বিপুল সংখ্যক কর্মী। কারণ মেইলে লেখা ছিল, তারা যদি টুইটারে থাকতে চান, তাহলে দীর্ঘ কর্মঘণ্টার প্রতিশ্রুতি দিতে হবে; সপ্তাহে ৮০ ঘণ্টা সময় দিতে হবে অফিসে। খবর ইন্ডিয়া টুডের।
ইমেইলটির নির্দেশনায় বলা ছিল, যারা এই ‘হার্ডকোর’ অফিস সংস্কৃতি মেনে নিতে সম্মত, তারাই যেন কেবল মেইলের ‘ইয়েস’ লেখা অপশনে ক্লিক করেন। বাকিদের তিন মাসের বেতন সহ ছাঁটাই করা হবে। পদত্যাগ করা প্রকৌশলীরা শেষোক্তটিকেই বেছে নেন।
কিন্তু এত সংখ্যক কর্মী একসাথে বিদায় নেওয়ায় মনে হচ্ছে একপ্রকার বিপদেই পড়ে গেছেন এই ধনকুবের। প্রতিষ্ঠানের অভ্যন্তরেই কোডিং পারেন এমন কাউকে সন্ধান করছেন তিনি।
ফলত আবারও ইমেইল গেছে টুইটার কর্মীদের কাছে। রয়েসয়ে যতজন আছেন তাদের সবাইকে মাস্ক ইমেইলে লিখেছেন, “সফটওয়্যার লেখেন, এমন কেউ থাকলে আমার সাথে এসে দেখা করুন।”
এমনকি যারা বাড়ি থেকে অফিস করছেন তাদের জন্যও দিয়েছেন পৃথক বার্তা। ইমেইলে ইলন মাস্ক লেখেন, “আপনি যদি বাসা থেকে কাজে যোগ দিয়ে থাকেন, তাহলে এই মেইলটির উত্তর দিন। প্রয়োজনে আমি আপনার সাথে ভিডিওকলে যুক্ত হবো।”
তবে টুইটার কর্মীদের বাড়ি থেকে অফিস করার ওপরও নিষেধাজ্ঞা চাপানো আছে মাস্কের। এই মেইলে আরেকবার মনে করিয়ে দিয়েছেন, যারা শারীরিকভাবে টুইটার হেডকোয়ার্টারে আসতে অক্ষম অথবা পারিবারিক কোনো ইমার্জেন্সি আছে শুধু তাদেরকেই এই ‘হোম অফিসে’র ছাড়টুকু দেওয়া হয়েছে। তিনি শুধু সংক্ষিপ্ত এবং টেকনিক্যাল একটি সাক্ষাৎকার গ্রহণ করবেন।
তবে অন্যদিক দিয়ে ঠিকই ছাঁটাই বহাল থাকবে। ধারণা করা হচ্ছে, এবার কোম্পানিটির সেলস এন্ড পার্টনারশিপ বিভাগের কর্মীদের টার্গেট করা হতে পারে। যদিও এখন পর্যন্ত এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা আসেনি।
ইতিমধ্যে বিশ্বজুড়ে মাস্ক ৫০ শতাংশ কর্মীকে বরখাস্ত করেছেন, তার ছাঁটাইয়ের তালিকায় আছে আরও ৪ হাজার চুক্তিভুক্ত কর্মী। এছাড়াও যখন যারাই তার বিরুদ্ধে আওয়াজ তুলছে, মাস্ক তাদের হাতে পদত্যাগপত্র ধরিয়ে দিচ্ছেন!
দিন কয়েক আগেই মাস্কের কথার উত্তরে পাল্টা কথা বলায় জনসমক্ষে টুইটারের এক ইঞ্জিনিয়ারকে চাকরিচ্যুত করা হয়।
ইলন মাস্ক বলেছিলেন, “বিশ্বের অনেক দেশেই টুইটার ধীরগতিতে চলে।” সাবেক টুইটার প্রকৌশলী এরিক ফ্রনহোফার তখন পাল্টা জবাব দিয়ে বলেন, “আমি ৬ বছরেরও বেশি সময় অ্যান্ড্রয়েডের জন্য টুইটারে কাজ করেছি এবং নিশ্চিতভাবেই বলতে পারি, এই তথ্য সঠিক নয়।”
কিছুক্ষণ বাদেই এরিক জানতে পারেন, ছাঁটাই করা হয়েছে তাকে!
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।