ভয়াবহ বন্যার মুখে পড়েছে চীন। সম্প্রতি দেশটির হুবেই প্রদেশে মাত্র ১২ ঘণ্টার ভেতর এত পরিমাণ বৃষ্টিপাত হয়েছে যে, যা সাধারণত এক মাসের বেশি সময় ধরে হওয়া বৃষ্টিপাতের সমপরিমাণ। এই অতিরিক্ত বর্ষণ পরিস্থিতিকে আরও বেশি বিপজ্জনক করে তুলেছে। ইতোমধ্যেই প্রায় ১৮,০০০ মানুষকে নিরাপদ স্থানে স্থানান্তর করা হয়েছে।
চীনের জিয়ানফেং শহরে টানা ভারী বর্ষণের কারণে বন্যার দেখা দিয়েছে। খরস্রোতা পানির তোড়ে ভেসে গেছে অনেক গাড়ি। প্রায় তিন লাখ মানুষের এই শহরে ব্যাপক বৃষ্টিপাতের কারণে ভয়াবহ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।
এদিকে কাদা মিশ্রিত পানির তীব্র স্রোতে শহরের রাস্তায় বিভিন্ন জিনিসপত্র ভাসতে দেখা গেছে। ভারী বৃষ্টির ফলে পানি ও বিদ্যুৎ সরবরাহে সমস্যা দেখা দেয়। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে এবং বাস চলাচল সাময়িকভাবে বন্ধ রাখা হয়।
চীনের আবহাওয়াবিদদের মতে, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে ঘনঘন বৃষ্টিপাতের প্রবণতা বৃদ্ধি পাচ্ছে, বিশেষ করে পার্বত্য এলাকাগুলোতে। এছাড়া গ্রামের এলাকায় সঠিক পূর্বাভাস না পাওয়ায় আকস্মিক বন্যা হওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি থেকে যায়।
চীনের জলবায়ু বিশেষজ্ঞ মেং গাও জানিয়েছেন, ভূ-প্রাকৃতিক পরিবেশের বৈচিত্র্য ও জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে নির্দিষ্ট কোনো এলাকায় কত পরিমাণ বৃষ্টি হবে, তা সঠিকভাবে নির্ণয় করা বেশ জটিল একটি কাজ।
এদিকে বন্যার কারণে চীনের হেনান প্রদেশে কিছু লোকের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে এবং কিছু লোক এখনও নিখোঁজ রয়েছেন। মাত্র ৩ ঘণ্টার ভেতর দুটো গ্রামে প্রচুর বৃষ্টিপাত হয়েছে বলে জানিয়েছে রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম সিসিটিভি। এই ধরনের প্রাকৃতিক দুর্যোগ সরকারের দ্রুত এবং কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়ার প্রয়োজনীয়তা আরও প্রবলভাবে বৃদ্ধি করেছে।
চীনের দক্ষিণাঞ্চলীয় গুয়াংশি প্রদেশে বন্যায় আটকে পড়া এক ব্যক্তিকে ড্রোন ব্যবহার করে উদ্ধার করা হয়েছে। উদ্ধার অভিযানের এই ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে। ভিডিওতে দেখা যায়, বন্যার জলে ভেসে যাওয়া একটি এলাকায় ড্রোন উড়ছে এবং তার সঙ্গে যুক্ত একটি লম্বা দড়ির সাহায্যে ছাদের ওপর আটকা পড়া এক ব্যক্তিকে নিরাপদ স্থানে নামিয়ে আনা হচ্ছে।
চীনের রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম সিসিটিভির খবর অনুযায়ী, এই উদ্ধার অভিযান পূর্বপরিকল্পিত ছিল না। ড্রোনটির মালিক লাই ঝংশিন সাধারণত সার ছিটানো ও নির্মাণ সামগ্রী পরিবহনে তার ড্রোনটি ব্যবহার করে থাকেন। বন্যার সময় যখন তিনি স্থানীয়দের সামগ্রী সরিয়ে নিচ্ছিলেন, তখন তিনি ওই ব্যক্তিকে দেখেন এবং ড্রোনের সাহায্যে তাকে উদ্ধার করেন।
এদিকে চীনের দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিম অঞ্চলে ড্রোনের সাহায্যে বন্যাক্রান্ত এলাকায় সাহায্য পৌঁছানো, পানি স্প্রে করে জীবাণুমুক্তকরণ এবং জরুরি অবস্থায় উদ্ধার কার্যক্রম চালানো হচ্ছে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।