নিয়োগবিধি সংশোধন, বেতনবৈষম্য দূরীকরণ এবং টেকনিক্যাল পদমর্যাদাসহ ৬ দফা দাবিতে টানা ১২ দিন কর্মবিরতি পালন করছেন স্বাস্থ্য সহকারীরা। গতকাল বুধবারও রাজধানীর মহাখালী স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মূল ফটকের সামনে সারা দেশের স্বাস্থ্য সহকারী, সহকারী স্বাস্থ্য পরিদর্শক ও স্বাস্থ্য পরিদর্শকরা অবস্থান নিয়ে এ কর্মবিরতি পালন করেন।
আন্দোলনকারীরা হুঁশিয়ারি দিয়ে জানান, গত ১২ দিন ধরে অবস্থান কর্মসূচি পালন করলেও তাদের আর্তনাদ কেউ শুনছে না। আগামী দুদিনের মধ্যে তাদের দাবি প্রজ্ঞাপন জারি না করলে কঠোর কর্মসূচি দিতে বাধ্য হব। গত ২৯ নভেম্বর থেকে শুরু হওয়া কর্মবিরতি প্রথম তিন দিন চলেছিল শহীদ মিনারে। এরপর থেকে তারা লাগাতার অবস্থান নেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সামনে।
স্বাস্থ্য সহকারীরা বলেছেন, তারা দেশের গ্রামীণ স্বাস্থ্যসেবার মূল ভিত্তি। তাদের কাজ শুধু টিকাদানের মধ্যে সিমাবদ্ধ নয়। তারা হলেন গ্রামীণ তৃনমূল মানুষের কাছে স্বাস্থ্যসেবা ও বার্তা পৌঁছানোর প্রথম দূত। তাদের কাজের বিনিময়ে কর্মকর্তারা বড় বড় পুরস্কার গ্রহণ করছেন, বিলাসবহুল গাড়িতে চড়ছেন ও এসির হাওয়া খাচ্ছেন। যখন তারা ন্যায্য দাবির আবেদন জানান, তখন সান্ত্বনা দিতে তাদের মধ্যে শুরু হয় চিঠি চালাচালি, এর আগে তারা এসির বাতাসে ঘুমিয়ে পড়েন।
বাংলাদেশ হেলথ অ্যাসিস্ট্যান্ট অ্যাসোসিয়েশনের ব্যানারে এ কর্মবিরতিতে পালন করছে সারা দেশের ২৬ হাজার স্বাস্থ্য সহকারী, সহকারী স্বাস্থ্য পরিদর্শক ও স্বাস্থ্য পরিদর্শকরা। তবে লাগতার এ কর্মসূচি পালন করতে গিয়ে এ পর্যন্ত প্রায় ২০ থেকে ২৫ জন স্বাস্থ্য সহকারী অসুস্থ হয়ে পড়েছেন।
বাংলাদেশ হেলথ অ্যাসিস্ট্যান্ট অ্যাসোসিয়েশনের কেন্দ্রীয় সমন্বয় পরিষদের সাংগঠনিক সম্পাদক শফিউল আযম বলেন, এ স্বাস্থ্য অধিদপ্তরই আমাদের দাবি আদায়ের অন্তরায়। আমাদের যৌক্তিক ও ন্যায্য দাবি আদায়ে দীর্ঘ ১২ দিনের ধরে খেয়ে না খেয়ে আমরা অবস্থান কর্মবিরতি পালন করে যাচ্ছি। এ অফিসের কর্মকর্তারা এক দিনও আমাদের প্রতি সহমর্মিতা জানায়নি।
স্বাস্থ্য সহকারীদের ৬ দফা দাবির মধ্যে রয়েছে, নিয়োগবিধি সংশোধন করে স্নাতক বা সমমানের যোগ্যতা যুক্ত করে ১৪তম গ্রেড প্রদান, ইন-সার্ভিস ডিপ্লোমাধারীদের ১১তম গ্রেডসহ টেকনিক্যাল পদমর্যাদা দেওয়া, ধারাবাহিকভাবে উচ্চতর গ্রেডে পদোন্নতি নিশ্চিত করা, প্রশিক্ষণ ছাড়াই স্নাতক স্কেলে অন্তর্ভুক্ত করা, বেতনস্কেল পুনর্নির্ধারণের সময় টাইম স্কেল বা উচ্চতর স্কেল সংযুক্ত করা এবং ইন-সার্ভিস ডিপ্লোমা (এসআইটি) সম্পন্নকারীদের সমমান স্বীকৃতি প্রদান।
অ্যাসোসিয়েশনের কেন্দ্রীয় সমন্বয় পরিষদের সদস্য সচিব ফজলুল হক চৌধুরী বলেন, আমাদের প্রস্তাবিত দাবির ফাইল জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে রয়েছে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় যদি আন্তরিক হয়, তাহলে জনপ্রসাশন মন্ত্রণালয় কোনো গড়িমসি করার কথা নয়। আমরা আশা করছি, তারা দেশের তৃণমূল পর্যায়ের জনগোষ্ঠীর স্বাস্থ্যসেবায় নিয়োজিত বৈষম্যের শিকার স্বাস্থ্য সহকারীদের দাবিগুলো গুরুত্বসহ বিবেচনা করবেন। প্রজ্ঞাপন জারি হলেই আমরা এ অবস্থান কর্মবিরতি থেকে কর্মস্থলে ফিরে যাব।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।



