
বিচার বিভাগ সংস্কারের রোডম্যাপ, চলমান সংস্কার কার্যক্রম ও ভবিষ্যৎ সম্ভাবনা নিয়ে দেশের অধস্তন আদালতের বিচারকদের উদ্দেশে আগামী ১৪ ডিসেম্বর ‘বিদায়ী অভিভাষণ’ দেবেন প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ। এ তথ্য সুপ্রিম কোর্টের গণসংযোগ দপ্তর এক বিজ্ঞপ্তিতে নিশ্চিত করেছে।
সুপ্রিম কোর্টের গণসংযোগ কর্মকর্তা মো. শফিকুল ইসলাম বৃহস্পতিবার (২৭ নভেম্বর) এক বিজ্ঞপ্তিতে জানান, প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ ৬৭ বছরে পদার্পণ করবেন আগামী ২৭ ডিসেম্বর। সংবিধানের ৯৬(১) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী কোনো বিচারক ৬৭ বছরের পর দায়িত্বে থাকতে পারেন না। সেই নিয়ম অনুসারেই দায়িত্ব ছাড়ার আগে তিনি অধস্তন আদালতের বিচারকদের উদ্দেশে গুরুত্বপূর্ণ এই বিদায়ী ভাষণ দেবেন।
১৯৫৮ সালের ২৮ ডিসেম্বর জন্ম নেওয়া প্রধান বিচারপতির বয়স ৬৭ পূর্ণ হওয়ার আগেই আয়োজন করা হয়েছে এই বিশেষ অধিবেশন। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ১৪ ডিসেম্বর বিকাল ৩টায় সুপ্রিম কোর্ট মিলনায়তনে জেলা জজ, মহানগর দায়রা জজ, চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট এবং চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেটসহ উচ্চপদস্থ বিচার কর্মকর্তারা উপস্থিত থাকবেন।
অধিবেশনটিতে তিনি বিচার বিভাগ সংস্কারের রোডম্যাপ, ইতোমধ্যে গৃহীত পদক্ষেপ এবং ভবিষ্যৎ দিকনির্দেশনা তুলে ধরবেন।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ১৪ ডিসেম্বর বিকাল ৩টায় সুপ্রিম কোর্ট মিলনায়তনে জেলা জজ, মহানগর দায়রা জজ, চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট এবং চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেটদের উপস্থিতিতে অনুষ্ঠিত হবে এই ‘গুরুত্বপূর্ণ অধিবেশন’। সেখানে প্রধান বিচারপতি বিচার বিভাগ সংস্কারে ঘোষিত রোডম্যাপ, এর অগ্রগতি এবং ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়ে তাঁর বিদায়ী অভিভাষণ দেবেন।
এতে আরও বলা হয়, বিদায়ি অভিভাষণে প্রধান বিচারপতি বিচার বিভাগের সংস্কার ও বিচার বিভাগের সার্বিক উন্নয়নয়ে তিনি যে রোডম্যাপ ঘোষণা করেছিলেন, তা বাস্তবায়নে গত দেড় বছরে গৃহীত সংস্কার কার্যক্রম এবং ভবিষ্যৎ সম্ভাবনার বিষয়ে আলোকপাত করবেন।
বিশেষ করে, চলমান বিচার বিভাগীয় সংস্কার কার্যক্রম, প্রযুক্তিনির্ভর সেবা সম্প্রসারণ, বিচারবিভাগীয় কর্মকর্তাদের পেশাগত দক্ষতা উন্নয়ন, আদালতের সার্বিক কার্যক্রমে স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা, অধস্তন আদালতের বিচারকদের দক্ষতা বৃদ্ধি, বিচারপ্রার্থী জনগণের সেবাপ্রাপ্তি এবং মামলাজট নিরসনের লক্ষ্যে গুরুত্বপূর্ণ দিকনির্দেশনা প্রদান করবেন।’
জুলাই অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ (বর্তমানে কার্যক্রম নিষিদ্ধ) সরকারের পতনের পর গত বছর ১০ আগস্ট হাই কোর্টের বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদকে প্রধান বিচারপতি নিয়োগ দেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। পরদিন শপথ নিয়ে বিচার বিভাগের দায়িত্ব নেন তিনি। বিচার বিভাগের দায়িত্ব নিয়েই প্রধান বিচারপতি ‘প্রকৃত স্বাধীন বিচার বিভাগ’ প্রতিষ্ঠায় উদ্যোগী হন।
গত বছর ২১ সেপ্টেম্বর সুপ্রিম কোর্টের ইনার গার্ডেনে অধস্তন আদালতের বিচারকদের উদ্দেশে অভিভাষণ দেন তিনি। সেদিনের অভিভাষণে রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ হিসেবে বিচার বিভাগের
স্বাধীনতা ও স্বতন্ত্রীকরণের গুরুত্ব তুলে ধরার পাশাপাশি সৈয়দ রেফাত আহমেদ বিচার বিভাগ সংস্কারের রোডম্যাপ ঘোষণা করেন। এরপর বিচার বিভাগের জন্য স্বতন্ত্র সচিবালয় প্রতিষ্ঠা, প্রয়োজনীয় আইনি ও কাঠামোগত সংস্কার, স্বতন্ত্র ও পর্যাপ্ত বাজেট বরাদ্দ, অধস্তন আদালতের বিচারকদের পদায়ন, বদলি ও শৃঙ্খলায় আচরণবিধি প্রণয়ন, উচ্চ আদালতে বিচারক নিয়োগে আইন প্রণয়নের পদক্ষেপ নেন। তার ঘোষিত ‘রোডম্যাপকে’ কেন্দ্র করেই গত দেড় বছর বিচার বিভাগে বিভিন্নমুখী সংস্কার সাধিত হয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে বিজ্ঞপ্তিতে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।



