জুমবাংলা ডেস্ক: জীবনে এক বার লটারি জিতলেই কেল্লাফতে; জীবন হয়ে উঠবে ঝলমলে। আর এই আশা নিয়ে কত মানুষ যে বাঁচে আর মরে! সারা জীবন কেটে গেলেও সেই আশা পূরণ হয় না অধিকাংশেরই। অথচ স্টেফান ম্যান্ডেলের সেই আশা পূরণ হয়েছে একবার-দুইবার বার নয়। দানে দানে ১৪ বার। হ্যাঁ! ১৪ বার লটারিতে জিতেছেন তিনি।
স্টেফান দাবি করেছেন, এক বারও নিয়ম ভেঙে বা বেআইনি ভাবে লটারি জেতেননি তিনি। প্রতি বার সোজা পথেই জিতেছেন লটারি। স্রেফ সহজ কিছু অঙ্ক কষে কার্যসিদ্ধি হয়েছে।
একটি সংবাদ মাধ্যমকে স্টেফান সাক্ষাৎকারে জানিয়েছিলেন, যত বার বিজয়ী লটারির নম্বর অনুমান করেছেন, তত বার তা সঠিক হয়েছে। ছোটখাটো অর্থমূল্য শুধু নয়, বড় বড় জ্যাকপটও জিতেছেন তিনি।
একটি সূত্র আবিষ্কার করেছিলেন স্টেফান। যেখানে তিনি পাঁচটি অঙ্ক নিতেন, তার পর ষষ্ঠ অঙ্ক অনুমান করতেন। সেই সংখ্যা দিয়েই জিতে নিতেন একের পর এক লটারি।
স্টেফান নিজে একজন গণিতজ্ঞ। তার জন্ম রোমানিয়ায়। এখন অস্ট্রেলিয়ার নাগরিক।
রোমানিয়ায় অর্থনীতিবিদ হিসেবে কাজ করতেন স্টেফান। তখনই অঙ্কের সেই সূত্র আবিষ্কার করে ফেলেন, যা দিয়ে ভবিষ্যতে একের পর এক লটারি জিতে যাবেন।
সেই সূত্রের মাধ্যমে রোমানিয়ায় বিশাল অঙ্কের লটারি যেতেন স্টেফান। তার পর পরিবার নিয়ে চলে যান অস্ট্রেলিয়া। সেখানেই থিতু হন স্টেফান।
অস্ট্রেলিয়ায় গিয়ে কাজ শুরু করেন স্টেফান। পাশাপাশি ১৯৬০ সাল নাগাদ আরো রোজগারের জন্য লটারিকেও পেশা হিসেবে গ্রহণ করেন।
রোমানিয়া, অস্ট্রেলিয়া, আমেরিকা থেকে লটারির টিকিট কেনা শুরু করেন স্টেফান। প্রতি বারই তিনি জিততে শুরু করেন। এতে রীতিমতো চটে যায় লটারি সংস্থাগুলো।
অস্ট্রেলিয়ায় থাকতে শুরু করার পর ১২ বার লটারি জেতেন স্টেফান। তার এই জয়ে কড়া ব্যবস্থা নেয় লটারি সংস্থাগুলো। যদিও বেআইনি পথে স্টেফান লটারি জেতেননি, তবু বার বার একই ব্যক্তি লটারি জিততে থাকায় গ্রাহকদের ক্ষোভ বাড়তে থাকে। অস্ট্রেলিয়ার সংস্থা বাধ্য হয়েই স্টেফানকে ব্লক করার পথে হাঁটে।
স্টেফানও দমবার পাত্র নন। পাঁচ জন অংশীদার জুটিয়ে নেন তিনি। সকলে মিলে একটি বিক্রয় কেন্দ্রের সব টিকিট কিনে ফেলতেন। অস্ট্রেলিয়ার লটারি সংস্থাগুলো তখন দল বেঁধে লটারির টিকিট কেনা নিষিদ্ধ করে। একটি দলের সবাই একই কেন্দ্রের সব লটারি কিনতে পারবে না।
স্টেফান শেষে অস্ট্রেলিয়া ছেড়ে পা বাড়ান আমেরিকার দিকে। সেখানকার লটারি সংস্থার থেকে টিকিট কিনতে শুরু করেন। আমেরিকায় অস্ট্রেলিয়ার মতো কোনো নিয়ম ছিল না।
ধীরে ধীকে আমেরিকার লটারি জেতার গোপন সূত্রটিও অঙ্ক কষে ধরে ফেলেন স্টেফান। ভার্জিনিয়া লটারির দিকেই নজর দেন তিনি।
আমেরিকায় লটারির একটি টিকিটের দাম ছিল ১ ডলার। স্টেফান ২,৫০০ সঙ্গী জোগাড় করেন। তাদের দিয়ে ২,৫০০ টিকিট কেনান। কী ভাবে লটারি খেলবেন, তা অঙ্ক কষে জানিয়ে দেন স্টেফানই।
একটি সাক্ষাৎকারে স্টেফান জানান যে, তিনি জানতেন ১টি প্রথম, ৬টি দ্বিতীয় এবং ১৩২টি তৃতীয় পুরস্কার জিতে যাবেন। হয়েও ছিল তা-ই। প্রায় ৩ কোটি আমেরিকান ডলার জিতেছিলেন তিনি এবং তার সঙ্গীরা। ভারতীয় মুদ্রায় ২৪৫ কোটি টাকারও বেশি।
এই ঘটনার তদন্তে নামে আমেরিকার তদন্তকারী সংস্থা এফবিআই। চার বছর ধরে আইনি লড়াই চলে। তবু স্টেফানকে দোষী সাব্যস্ত করা যায়নি।
১৯৯৫ সালে স্টেফান দেউলিয়া ঘোষণা করেন নিজেকে। তার সেই অঙ্কের রহস্য আজও তিনি ছাড়া কেউ সমাধান করতে পারেননি।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।