জুমবাংলা ডেস্ক : বিদেশে অর্থপাচারের অভিযোগে সাবেক চেয়ারম্যান ও দু’জন ব্যবস্থাপনা পরিচালকসহ (এমডি) শীর্ষ ১৫ ব্যক্তির বিরুদ্ধে প্রথমবারের মতো মামলা করেছে এবি ব্যাংক।
অভিযুক্তরা ব্যাংকের বিপুল পরিমাণ টাকা অবৈধভাবে সিঙ্গাপুর নিয়ে যাওয়ার প্রমাণ মিলে বিভিন্ন তদন্তে। তারই ভিত্তিতে এ মামলা করে ব্যাংকের বর্তমান ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ। পাচার করা মুদ্রার অংক ২০ মিলিয়ন ডলার বা ১৬৫ কোটি টাকা।
গত শনিবার এবি ব্যাংকের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়, বেসরকারি এবি ব্যাংক উল্লেখিত অংকের টাকা আদায়ের জন্য গত ২০ নভেম্বর ঢাকার প্রথম যৌথ জেলা জজ আদালতে মামলাটি করেছে।
এবি ব্যাংক তার সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলেছে, ২০ মিলিয়ন ডলার ব্যাংকের অজান্তেই প্রত্যাহার করা হয়েছিল। মামলার অভিযোগে বলা হয়েছে, এই মামলার আসামিরা ব্যাংকের অর্থ আত্বসাত করার ষড়যন্ত্রের পক্ষে ছিল কারণ ব্যাংক কর্মকর্তারা যথাযথ অভ্যন্তরীণ পদ্ধতি মেনে চলেনি এবং যথাযথ রেকর্ড রাখতে ব্যর্থ হয়েছে। এ মামলায় ব্যারিস্টার আবুল কাশেমের সহায়তায় জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ব্যারিস্টার আজমলুল হোসেন কিউসির নেতৃত্বে এ হোসেন অ্যান্ড অ্যাসোসিয়েটস ঢাকার আইনজীবীদের একটি দল এবি ব্যাংকের প্রতিনিধিত্ব করছেন বলে বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।
অভিযুক্তদের মধ্যে ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান এম ওয়াহিদুল হক, সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক শামীম আহমেদ চৌধুরী, মশিউর রহমান চৌধুরী, আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও কোষাগারের সাবেক প্রধান আবু হেনা মোস্তফা কামাল এবং সাবেক প্রধান আর্থিক কর্মকর্তা মহাদেব সরকার রয়েছেন। এসব ব্যক্তি মানিলন্ডারিংয়ের সময় এবি ব্যাংকের বিভিন্ন পদে দায়িত্ব পালন করেছিলেন।
২০১৩ সালের ডিসেম্বরে ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ ২০ মিলিয়ন ডলার বিনিয়োগের অনুমোদন দিলে মানিলন্ডারিংয়ের প্রক্রিয়াটি শুরু হয়। সিঙ্গাপুর ভিত্তিক তহবিল সংগ্রহ ও বিনিয়োগ সংস্থা- পিনাকল গ্লোবাল ফান্ড (পিজিএফ) পিটি লিমিটেডে এ বিনিয়োগের পরিকল্পনা করা হয়েছিল।
২০১৪ সালের ফেব্রুয়ারিতে ব্যাংকের অফশোর ব্যাংকিং ইউনিট এই অর্থ সংযুক্ত আরব আমিরাত-ভিত্তিক আবুধাবি বাণিজ্যিক ব্যাংক (এডিসিবি) এর অ্যাকাউন্টে স্থানান্তরিত করে। অ্যাকাউন্টটি চেং বাও জেনারেল ট্রেডিং এলএলসি-র অন্তর্গত, যা পিজিএফের মধ্যস্থতা হিসাবে কাজ করেছিল। চেং বাও তাৎক্ষণিকভাবে টাকা প্রত্যাহার করে নেয় এবং অ্যাকাউন্টটি বন্ধ করে দেয়।
২০১৭ সালে বাংলাদেশ ব্যাংকের এক পরিদর্শনে দেখা যায়, প্রথম প্রজেক্টের বেসরকারী এবি ব্যাংকও পিজিএফের সঙ্গে একটি সাদা কাগজে বিনিয়োগের চুক্তিতে স্বাক্ষর করেছিল এবং এই চুক্তির কার্যকারিতা নিয়ে তখন প্রশ্ন তুলেছিলেন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পরিদর্শক দলের প্রতিনিধিরা।
পরিদর্শনে আরও দেখা যায়, বদলি হওয়া অর্থের মনোনীত প্রার্থী ও এডিসি অ্যাকাউন্টের যৌথ স্বাক্ষরকারী হিসাবে ওয়াহিদুলের নাম ছিল। চুক্তিটি শেষ করতে তিনি ২০১৪ সালের ফেব্রুয়ারিতে সংযুক্ত আরব আমিরাত (সংযুক্ত আরব আমিরাত) সফর করেছিলেন।
১৫ জন আসামির মধ্যে একজন হলেন কানাডার নাগরিক আবদুস সামাদ খান, যিনি পিজিএফের পক্ষে এই চুক্তিতে স্বাক্ষর করেছিলেন। কাগজপত্রগুলোতে তাকে একজন পিজিএফ পরিচালক বলে উল্লেখ করা হয়েছিল, তবে অন্য নথিতে তাকে ফার্মের অংশীদার হিসাবে উল্লেখ করা হয়েছে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।