জুমবাংলা ডেস্ক : সোনালি রঙের চায়ের ওপর ভাসছে খাবার উপযোগী স্বর্ণ। বাংলাদেশের চা বাগানে উৎপাদিত এবং অত্যন্ত যত্নের সঙ্গে তৈরি করা, সোনার প্রলেপ দেওয়া সোনালি রঙের এই চা হতে যাচ্ছে বিশ্বের সবচেয়ে দামী চা। চায়ের উৎপাদকরা এমন দাবি করেছেন বলে বিবিসি বাংলা বুধবার এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে।
ওই চায়ের উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান লন্ডন টি এক্সচেঞ্জ তাদের উৎপাদিত ‘গোল্ডেন বেঙ্গল টি’ নামের বিশেষ চায়ের মূল্য নির্ধারণ করেছে প্রতি কেজি ১৪ লাখ পাউন্ড, বাংলাদেশি মুদ্রায় যার মূল্য প্রায় ১৬ কোটি টাকা। প্রতিষ্ঠানটি এই বছরের মে মাস নাগাদ তার এই চা বাজারে আনার ঘোষণা দিয়েছে বলে বিবিসি বাংলা ওই প্রতিবেদনে জানিয়েছে।
প্রতিষ্ঠানটির বরাত দিয়ে বিবিসি বাংলা জানায়, যুক্তরাজ্যের লন্ডনভিত্তিক এই প্রতিষ্ঠানটির তত্ত্বাবধানে বাংলাদেশের সিলেট অঞ্চলে গত কয়েক বছর অত্যন্ত গোপনে এই চায়ের চাষ করা হচ্ছে।
তবে দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশে এমন দামী চায়ের চাষাবাদের কথা বলা হলেও বাংলাদেশের চা শিল্প গবেষকদের কাছে এরকম চা সম্পর্কে কোনো তথ্য নেই বলে বিবিসি বাংলাকে জানিয়েছেন তারা।
সোনালী রঙের দামী চা
বিবিসি বাংলা জানায়, চায়ের প্রকারের দিকে এই চা ব্ল্যাক টি হলেও স্বচ্ছ পেয়ালায় পরিবেশন করলে এটা সোনালি রঙে দেখা যাবে। প্রায় সাড়ে চার বছর সময় নিয়ে বিশেষ পদ্ধতিতে এই চা উৎপাদন করা হয় বলে প্রতিষ্ঠানটি জানিয়েছে।
বিশেষ পদ্ধতি অনুসরণ করে এই চা তৈরি করা হয় বলে লন্ডন টি এক্সচেঞ্জের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা অলিউর রহমান বিবিসি বাংলাকে জানিয়েছেন। এর জন্য অনেক বেশি যত্নের দরকার হয়। পাশাপাশি বিদেশি দক্ষ ও প্রশিক্ষিত কর্মীরা চা তৈরি করেন। পুরো প্রক্রিয়ায় মেশিনের কোনো সহায়তা নেওয়া হয় না বলে বিবিসি বাংলাকে জানিয়েছেন তিনি।
বিবিসি বাংলার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চা গাছের শুধুমাত্র দুইটি সোনালী পাতা দিয়ে এই চা তৈরি করা হয়।
অলিউর রহমান বলেন, ২০১৬ সাল থেকে তারা এই চায়ের চাষ শুরু করেছেন। বাংলাদেশের সিলেট অঞ্চলের কয়েকটি চা বাগানের অংশ বিশেষ ভাড়া নিয়ে তারা নিজেদের তত্ত্বাবধানে এই চায়ের চাষ করছেন।
প্রায় পাঁচ বছর পর, নয়শ কেজি চা থেকে এক কেজি সোনালি চা উৎপাদন করা সম্ভব হয়েছে। সেই চায়ের পাতায় ২৪ ক্যারেট সোনার প্রলেপ মেশানো হয়েছে বলে বিবিসি বাংলার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।
তবে অনেক সময় অনেক গাছে সোনালি পাতা ধরেই না। আবার কোনো কোনো সময় সোনালি এই পাতা পেতে অনেকদিন অপেক্ষা করতে হয় বলে অলিউর রহমান বিবিসি বাংলাকে জানান।
তিনি আরও বলেন, দীর্ঘসময় ধরে, প্রশিক্ষিত কর্মীদের মাধ্যমে আস্তে আস্তে এই চায়ের পাতা সংগ্রহ করা হয়। তারপর বিশেষ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সেটিকে চায়ে রূপ দেওয়া হয়। তার একটি পর্যায়ে এর সঙ্গে গোল্ড ফ্লেক্স বা স্বর্ণের গুঁড়ো মেশানো হয়।
লন্ডন টি এক্সচেঞ্জের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা দাবি করছেন, দীর্ঘ সময় ধরে উৎপাদন, বিশেষ যত্ন ও প্রক্রিয়া, বিশেষভাবে প্রশিক্ষিত কর্মীদের ব্যবহারের কারণে এই চায়ের মূল্য বেড়েছে।
বাংলাদেশের কোনো চা বাগানে এই চায়ের চাষাবাদ হচ্ছে, ব্যবসায়িক কারণে তা তিনি জানাতে রাজি হননি বলে বিবিসি বাংলা জানিয়েছে।
বিবিসি বাংলার প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, এর মধ্যেই একাধিক অনুষ্ঠানে এই দামী চায়ের প্রদর্শনী হয়েছে। এই বছরের মে মাস নাগাদ আনুষ্ঠানিকভাবে গোল্ডেন বেঙ্গল চা বাজারে আনার পরিকল্পনা করছে লন্ডন টি এক্সচেঞ্জ।
লন্ডনভিত্তিক এই প্রতিষ্ঠানটি বিশ্বের নানা দামী ব্র্যান্ডের চা সংগ্রহ করে বিক্রি করে থাকে। প্রতিষ্ঠানটির কর্মকর্তারা দাবি করেছেন, তারা বিশ্বের একাধিক রাজপরিবারের জন্যও চা সরবরাহ করে।
তবে এবারই প্রথম তারা সম্পূর্ণ নিজেদের তত্ত্বাবধানে চা উৎপাদন করছে বলে বিবিসি বাংলা জানায়।
এদিকে, বিশ্বের সবচেয়ে দামী চা বাংলাদেশে উৎপাদনের কথা বলা হলেও এই সম্পর্কে বাংলাদেশের চা শিল্পের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের কাছে কোনো তথ্য নেই বলে বিবিসি বাংলার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।