জুমবাংলা ডেস্ক : সারাদেশে কারাগারগুলোতে বন্দি রয়েছেন ৮৬ হাজার ৯৯৮ জন। এ সব বন্দির চিকিৎসার জন্য একশ ৪১ জন চিকিৎসকের বিপরীতে মাত্র ১০ জন চিকিৎসক কর্মরত রয়েছেন। কারা কর্তৃপক্ষ এক লিখিত প্রতিবেদনে আজ মঙ্গলবার হাইকোর্টকে এই তথ্য জানিয়েছে। কারা কর্তৃপক্ষের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০১৮ সালের ২৮ জানুয়ারি ২০ জন চিকিৎসককে কারাগারে পদায়ন করা হয়। এর মধ্যে মাত্র ৪ জন যোগদান করে। বাকি ১৬ জন এখনো যোগদান করেননি। এই ১৬ জন কেন যোগদান করেননি তা জানতে চেয়েছেন হাইকোর্ট। আগামী ১১ নভেম্বরের মধ্যে জানাতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
বিচারপতি এফ আর এম নাজমুল আহাসান ও বিচারপতি কে এম কামরুল কাদেরের হাইকোর্ট বেঞ্চ আজ মঙ্গলবার এ আদেশ দেন। সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অ্যাডভোকেট জে আর খান রবিনের করা এক রিট আবেদনে এ আদেশ দেওয়া হয়। রিট আবেদনকারীপক্ষে আইনজীবী ছিলেন ব্যারিস্টার এএম মাহবুবউদ্দিন খোকন ও অ্যাডভোকেট শাম্মী আকতার। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এবিএম আবদুল্লাহ আল মাহমুদ বাশার।
এর আগে গত ২৩ জুন হাইকোর্ট এ আদেশে কারাগারে ধারণ ক্ষমতা, বন্দি ও বন্দিদের জন্য কতজন চিকিৎসক রয়েছেন তার তালিকা দিতে নির্দেশ দেন। একইসঙ্গে চিকিৎসকের শূণ্য পদের সংখ্যাও জানাতে বলা হয়। কারা মহাপরিদর্শককে ছয় সপ্তাহের মধ্যে এই তালিকা দাখিল করতে নির্দেশ দেওয়া হয়। পাশাপাশি রুল জারি করেন। রুলে কারাগারে বন্দিদের মানসম্মত থাকার স্থান নিশ্চিত করা এবং বন্দিদের চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় সংখ্যক চিকিৎসক নিয়োগের ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্টদের নিষ্ক্রিয়তা কেন বেআইনি ঘোষণা করা হবে না তা জানতে চাওয়া হয়েছে। আইন, স্বরাষ্ট্র, স্বাস্থ্য, সমাজকল্যাণ ও জনপ্রশাসন সচিব, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ও কারা মহাপরিদর্শককে চার সপ্তাহের মধ্যে রুলের জবাব দিতে বলা হয়। এ অবস্থায় কারা অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে গতকাল হাইকোর্টে একটি প্রতিবেদন দাখিল করে। অ্যাডভোকেট শফিকুল ইসলামের মাধ্যমে এই প্রতিবেদন দাখিল করা হয়।
এ বিষয়ে জে আর খান রবিন সাংবাদিকদের বলেন, কারা কর্তৃপক্ষ প্রতিবেদন দিয়ে বলেছে যে, কারাগারে সরাসরি বা চুক্তিভিত্তিক চিকিৎসক নিয়োগের কোনো সুযোগ নেই। শুধুমাত্র প্রেষণে বদলির মাধ্যমে কারাগারে চিকিৎসক নিয়োগ দেওয়ার বিধান রয়েছে।
কারাগারে অতিরিক্ত বন্দি থাকা ও চিকিৎসক সংকট নিয়ে প্রত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদন যুক্ত করে দাখিল করা রিট আবেদনে বলা হয়, দেশে সর্বমোট ৬৮টি কারাগার রয়েছে। এরমধ্যে ১৩টি কেন্দ্রীয় কারাগার ও ৫৫টি জেলা কারাগার। এসব কারাগারে ধারণ ক্ষমতা ৪০ হাজার ৬শ ৬৪। অথচ গত ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত বন্দি আছে ৮৯ হাজার ৫শ ৬৪ জন। এই বিশাল পরিমাণ বন্দির জন্য চিকিৎসকের সংখ্যা মাত্র ৮ থেকে ৯ জন দায়িত্বরত রয়েছেন। একশ ৪১টি পদই শূণ্য। চিকিৎসকের অভাবে আমাশয়, ডায়রিয়া, বিভিন্ন চর্মরোগ, হৃদরোগসহ নানাবিধ রোগে আক্রান্ত। বন্দিরা চিকিৎসকের অভাবে যথাযথ চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত। এছাড়া ধারণ ক্ষমতার চেয়ে বেশি বন্দি থাকার কারণে কারাগারগুলোতে বিশৃংখলা দেখা দেয়। এই বিশৃংখলা ঠেকানোর জন্য কারো কোনো উদ্যোগ নেই।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।