আন্তর্জাতিক ডেস্ক : বিশ্বে ক্রমাগত বেড়েই চলেছে করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা। এই মুহূর্তে গোটা পৃথিবীতে কোভিড-১৯য়ে আক্রান্তের সংখ্যা ১৭ লাখ ছাড়িয়েছে। আর মোট মৃত্যু ১ লাখ ছাড়িয়েছে শুক্রবার মধ্যরাতেই। বিশ্বে সবচেয়ে বেশি করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের বাসিন্দারা। আর মৃতের সংখ্যায় এগিয়ে ইতালি। তবে যে কোনও মুহূর্তে ইতালিকে হটিয়ে করোনায় মৃত্যুতেও শীর্ষে চলে আসছে যুক্তরাষ্ট্র।
ওয়ার্ল্ডোমিটারের সর্বশেষ পরিসংখ্যান বলছে, এ মুহূর্তে বিশ্বজুড়ে করোনায় আক্রান্ত মোট মানুষের সংখ্যা ১৭ লাখ ৫ হাজার ৭৬৬ জন। এদের মধ্যে শুক্রবার গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন আরও ৯৪ হাজার ৬২৫ জন। চিকিৎসার মাধ্যমে সুস্থ হয়ে উঠেছেন ৩ লাখ ৭৬ হাজার ১৮৪ জন। এখনও এতে আক্রান্ত রয়েছেন আরও ১২ লাখ ১৯ হাজার ৯৬৭ জন। এদের মধ্যে প্রায় ৫০ হাজার (৪৯ হাজার ৮৩১ জন) মানুষের অবস্থা আশঙ্কাজনক। ফলে করোনায় মৃতের সংখ্যা যে আরও বাড়ছে তাতে কোনও সন্দেহ নেই।
সর্বশেষ পরিসংখ্যান বলছে, শুক্রবার গত ২৪ ঘণ্টায় করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন আরও ৬ হাজার ৯৭১ জন। ফলে এই ভাইরাসে মোট মৃত্যু বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ৩ হাজার ২৩০ জনে।
করোনাভাইরাসে মৃত্যুর তালিকায় এখনও বিশ্বের শীর্ষ স্থানটি ধরে রেখেছে ইতালি। শুক্রবার সেখানে মারা গেছে আরও ৫৭০ জন এবং নতুন সংক্রমিত হয়েছে ৩ হাজার ৯৫১ জন। সবমিলিয়ে সেখানে মারা গেছেন ১৮ হাজার ৮৪৯ জন এবং করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন মোট ১ লাখ ৪৭ হাজার ৫৭৭ জন।
তবে ইটালির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় দাবি করেছে, গত কয়েক সপ্তাহ ধরে মৃত্যুর গ্রাফটা যে ভাবে ঊর্ধ্বমুখী হচ্ছিল, তা অনেকটাই নামিয়ে আনা হয়েছে। সংক্রমণ যাতে আর বাড়তে না পারে তার জন্য কড়া পদক্ষেপ নিয়েছে প্রশাসন।
বিশ্বে সবচেয়ে বেশি করোনায় আক্রান্ত হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের মানুষ। শুক্রবার সারাদিনে দেশটিতে করোনায় আক্রান্ত হয়েছে আরও ৩৩ হাজারের বেশি মানুষ। ফলে দেশটিতে মোট করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ৫ লাখ ২ হাজার ৮৭৬ জন।
দেশটিতে মারা গেছে মোট ১৮ হাজার ৭৪৭ জন। এদের মধ্যে শুক্রবার মাত্র একদিনেই মারা গেছে দেশটির ২ হাজারের বেশি মানুষ। এটি করোনায় কেনো দেশে একদিনে সর্বোচ্চ মৃত্যুর রেকর্ড।
এই মুহূর্তে ইতালিতে যুক্তরাষ্ট্রের চেয়ে মাত্র ১০২টি মৃত্যু বেশি হয়েছে। কিন্তু যে গতিতে মার্কিন মুলুকে করোনায় আক্রান্ত লোকজন মারা যাচ্ছে তাতে আজ শনিবারই (১১ এপ্রিল) যে তারা ইতালিকে হারিয়ে মৃত্যুতেও বিশ্বের শীর্ষ স্থানটি দখল করে নেবে, তাতে কোনও সন্দেহ নাই।
করোনায় আক্রান্তের সংখ্যায় এর পরেই রয়েছে ইউরোপের ৫ দেশ স্পেন, ইতালি, জার্মানি, ফ্রান্স ও যুক্তরাজ্য। স্পেনে মোট আক্রান্ত হয়েছেন ১ লাখ ৫৮ হাজার ২৭৩ জন এবং করোনায় মারা গেছে দেশটির ১৬ হাজারের বেশি মানুষ।
জার্মানিতে মোট করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ১ লাখ ২২ হাজার ১৭১ জন এবং মারা গেছেন মোট ২ হাজার ৭৩৬ জন। আর ফ্রান্সে মোট আক্রান্ত ১ লাখ ২৪ হাজার ৮৬৯ জন এবং মোট মৃত্যু ১৩ হাজার ১৯৭ জন।
যুক্তরাজ্যে এই মুহূর্তে মোট করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা হচ্ছে ৭৩ হাজার ৭৫৮ জন। দেশটিতে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে প্রায় নয় হাজার মানুষ, ৮ হাজার ৯৫৮ জন।
করোনাভাইরাসের সংক্রমণ শুরু হয়েছিল চীন থেকে। কিন্তু এই দেশ সংক্রমণ এবং মৃত্যুর হার অনেকটাই কমিয়ে এনেছে দ্রুত। ফলে সংক্রমণ ও মৃত্যুর তালিকায় অনেকটাই নিচে নেমে এসেছে তারা। এখন দেশটিতে মোট আক্রান্তের সংখ্যা হচ্ছে ৮১ হাজার ৯৫৩ জন। আর মারা গেছেন ৩ হাজার ৩৩৯ জন। তবে শনিবার সকালে দেশটিতে নতুন করে আরও ৪৬ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন বলে খবর পাওয়া গেছে।
শুক্রবার সেখানে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন আরও ৪২ জন এবং মারা গেছেন মাত্র একজন। এর আগে দ্রুত মঙ্গলবার দেশটিতে করোনায় কেউ মারা যায়নি। গত বছরের ডিসেম্বরের শেষ দিকে করোনা ছড়িয়ে পড়ার পর সেদিনই প্রথমবারের মতো মৃত্যুহীন একটি দিন পার করেছে দেশটি। পরিস্থিতির উন্নতি হওয়ায় করোনার কেন্দ্রস্থল হিসাবে পরিচিত উহানের লকডাউন তুলে নেয়া হয়েছে। করোনার আঘাত সামলে ধীরে ধীরে ছন্দে ফিরছে চীন।
মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর মধ্যে করোনায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে ইরান। দেশটিতে এই মুহূর্তে মোট ৬৮ হাজার ১৯২ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। আর মারা গেছেন মোট ৪ হাজার ২৩২ জন।
এদিকে বাংলাদেশে গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে ৫৮ জন, আর মৃত্যু হয়েছে ৩ জনের। সব মিলিয়ে আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়ালো ৪৮২ জনে। মোট মৃত্যু ৩০ জন।
সূত্র : ওয়ার্ল্ডোমিটার
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।