জুমবাংলা ডেস্ক: চাল চলন চৌধুরীর মতো। নাদুস-নুদুস চেহারা। পুরো শরীর জুড়ে মাংস আর মাংস। গায়ের রং সাদা-কালো। যে কেউ প্রথম দেখাতে পছন্দ করবেন। এবারে কোরবানির প্রধান আকর্ষণ। লোকজন আসছেন, দেখছেন। দামও করছেন কেউ কেউ। এটি রাখা হয়েছে নীলফামারীর সৈয়দপুরের বাঁশবাড়িতে মেসার্স ইউসুফ হৃষ্টপুষ্ট খামার ও ডেইরি ফার্মে। দাম হাঁকা হয়েছে ১৭ লাখ টাকা। বাংলানিউজের প্রতিবেদক মো. আমিরুজ্জামান-এর প্রতিবেদনে উঠে এসেছে বিস্তারিত।
চৌধুরীর বর্তমান স্কেল ওজন এক হাজার ১৬০ কেজি।
খামারটিতে চৌধুরীর পাশাপাশি বিভিন্ন জাতের গরু প্রাকৃতিক উপায়ে লালন-পালন করা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে দেশি, শাহিবল, শংকর, ফ্রিজিয়ান ও নানা জাতের ষাঁড়। এখানে ৫৫ হাজার টাকা থেকে শুরু করে ১০ লাখ টাকার ষাঁড়ও রয়েছে। প্রাকৃতিক উপায়ে এসব গরু লালন-পালন করে হৃষ্টপুষ্ট করা হয়েছে। বিশেষ করে সম্পূর্ণ প্রাকৃতিক খুদের ভাত, আলু সিদ্ধ, মসুর ডাল, খেসারি ডাল, ঘাস, চোকর, বুটের খোসা, ভুট্টা, গম ইত্যাদি খাবার খেয়ে হৃষ্টপুষ্ট থাকছে গরুগুলো। ফলে এ খামারের গরুর চাহিদা বেশি।
খামারের মালিক জামিল আশরাফ মিন্টু জানান, পাঁচ/ছয় মাস আগে ছোটো সাইজের গরু পাশের ঢেলাপীর, তারাগঞ্জ, রানীরবন্দর, শাখামাছা, বেনীরহাটসহ বিভিন্ন হাট থেকে কিনে আনা হয়। ছোট ছোট গরুগুলো লালন-পালন করে কোরবানির উপযোগী করে তুলেছেন তিনি। খামারের গরু মোটাতাজাকরণে কোনো ধরনের ইনজেকশন, ট্যাবলেট বা ওষুধ ব্যবহার করেন না তিনি। সার্বক্ষণিক চিকিৎসক রয়েছেন খামারে। সাতজন শ্রমিক ও নিজের সার্বিক তত্ত্বাবধানে কোরবানির জন্য গরুগুলো বড় করা হয়েছে।
তিনি বলেন, ২০১০ সালে মাত্র চারটি গরু নিয়ে হৃষ্টপুষ্ট খামার ও ডেইরি ফার্মটি চালু করেছি। আর এখন বিশাল শেডে প্রায় ৩০০ ষাঁড় রয়েছে। এবার গোখাদ্যের দাম বাড়ায় খামারিদের কষ্ট হয়েছে। তাই সেভাবে দাম চাওয়া হচ্ছে। শুধু ঈদুল আজহায় কোরবানির জন্য গবাদিপশু নয়, বিয়েসহ অন্যান্য অনুষ্ঠানের জন্যও মাংস সরবরাহ করে থাকে খামারটি।
এছাড়া গবাদিপশু বিক্রির সঙ্গে সঙ্গে প্রাণিসম্পদ বিভাগের সনদপত্র দেওয়া হয় এখান থেকে। এসব কারণে এ খামারের গরুর চাহিদা বাড়ছে। এজন্য মাংস কাটার মেশিন আনার চিন্তা করছেন মালিক। সরকারি-বেসরকারি পর্যায়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ খামারটি পরিদর্শন করে প্রশংসা করেছেন। জামিল আশরাফ মিন্টু পেয়েছেন অগণিত উদ্যোক্তা পুরস্কারও।
তিনি বলেন, এবার কোরবানির গরু বুকিং শুরু হয়েছে। এরই মধ্যে খামারের ৩২টি গরু ঢাকার ব্যবসায়ীদের কাছে পাঠানো হয়েছে। চৌধুরী নামের গরুটি ২০২২ সালে পাশের বদরগঞ্জ হাট থেকে এক লাখ ৭৫ হাজার টাকায় লুৎফর রহমান চৌধুরী নামে এক ব্যক্তির কাছ থেকে কিনেছি। সেদিনই গরুটির নাম চৌধুরী রাখা হয়। বর্তমানে গরুটির দুই দাঁত উঠেছে। এ পর্যন্ত ক্রেতারা আট/নয় লাখ টাকা দাম বলেছেন হোলস্টাইন ফ্রিজিয়ান জাতের ষাঁড়টির। আমি ১৭ লাখ টাকা হলে বিক্রি করব।
সৈয়দপুর উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা শ্যামল কুমার রায় জানান, মেসার্স ইউসুফ হৃষ্টপুষ্ট ও ডেইরি ফার্মটি একেবারে ব্যতিক্রম। মালিকের সার্বিক তত্ত্বাবধানে প্রাকৃতিক উপায়ে গরুগুলো লালন-পালন করা হয়েছে। ফলে ক্রেতার কাছে এসব গরুর চাহিদা বেশি।
নীলফামারী জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মোনাক্কা আলী বলেন, মেসার্স ইউসুফ হৃষ্টপুষ্ট ও ডেইরি ফার্মটি পরিবেশ বান্ধব। এটি নীলফামারী জেলার সবচেয়ে বড় খামার ও ডেইরি ফার্ম। এটি বিভিন্ন সময়ে পরিদর্শন করে ভালো লেগেছে। গরুর শেড সব সময় পরিষ্কার, ঝকঝকে রাখা হয়। যা দেখতে খুবই ভালো লাগে।
তিনি বলেন, জামিল আশরাফ চাকরি নামক সোনার হরিণের পেছনে না ছুটে নিজেই খামার করে লাভবান হয়েছেন।
৪০ মণ ওজনের ‘রাজা বাবু’কে দেখতে এলাকাবাসীর ভিড়, দাম হাঁকছেন ২৫ লাখ টাকা
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।